Home » » ট্রাবলশুটিং কি

ট্রাবলশুটিং কি

ট্রাবলশুটিং কি

কম্পিউটারের বিভিন্ন সমস্যার উৎস বা উৎপত্তিস্থল নির্ণয়ের প্রক্রিয়া হলো কম্পিউটার ট্রাবলশুটিং।  সাধারণত কিছু প্রশ্ন উপস্থাপন করা হয় এবং পাশাপাশি সমাধান দেওয়া থাকে। কম্পিউটার ব্যবহারকারী তার কম্পিউটারের সমস্যার প্রকৃতি অনুযায়ী, সমাধান অনুসরণের মাধ্যমে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, সমস্যাটি সমাধান করতে পারে। সহজে বলা যায়, কম্পিউটারের সমস্যা চিহ্নিত করা, সমস্যাগুলো সমাধনের কার্যকরি ব্যবস্থা প্রয়োগ করা, এবং সর্বশেষে সমস্যা থেকে উত্তরণ হওয়া, এসকল প্রক্রিয়াগুলোই হলো কম্পিউটার ট্রাবলশুটিং।


কম্পিউটার ট্রাবলশুটিং প্রধানত ২ প্রকার। যথা:

১। কম্পিউটার হার্ডওয়্যার ট্রাবলশুটিং 

২। কম্পিউটার সফটওয়্যার ট্রাবলশুটি


কম্পিউটার হার্ডওয়্যার ট্রাবলশুটিং :

কম্পিউটারের বাহ্যিক অবকাঠামো তৈরির জন্য ব্যবহৃত যন্ত্র সামগ্রীকে হার্ডওয়্যার বলে। অর্থাৎ কম্পিউটারের যে সকল অংশ ধরা ছোঁয়া বা স্পর্শ করা যায় তাদেরকে হার্ডওয়্যার বলা হয়। কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার সামগ্রীর মধ্যে ইনপুট ডিভাইস, আউটপু ডিভাইস ও বিভিন্ন প্রক্রিয়াকরণ অংশ, স্মৃতি ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এ হার্ডওয়্যার সামগ্রী সাধারণ সমস্যাগুলো চিহ্নিতকরণ ও সেগুলো সমাধান করাই হলো কম্পিউটার হার্ডওয়্যার ট্রাবলশুটিং। 

 

কম্পিউটার সফটওয়্যার ট্রাবলশুটি :

নিষ্প্রাণ হার্ডওয়্যারকে যথাযথোভাবে কর্মক্ষম বা কাজের উপযোগী করে তোলার জন্য ব্যবহৃত বিশেষ নির্দেশনা বা প্রোগ্রামই হলো সফটওয়্যার। কম্পিউটারের অভ্যন্তরীণ প্রাণ বা চালিকাশক্তিই হলো সফটওয়্যার যেটি স্পর্শ করা যায় না। কিন্তু কর্মসম্পাদনের মূল কাজই করে থাকে সফটওয়্যার। আর এ সফটওয়্যারের সাধারণ সমস্যা বা ত্রুটি নির্ণয় ও সমাধানের প্রক্রিয়াই হলো কম্পিউটার সফটওয়্যার ট্রাবলশুটিং।

 

কম্পিউটার ট্রাবলশুটিং এর কয়েকটি উদাহরণ নিম্নে দেয়া হলো:

 

উদারহরণ-১: কম্পিউটার শাট ডাউন করলে সেটি রিস্টার্ট হয়।

সমাধান: ভালো কোনো পাওয়ার সাপ্লাই দিয়ে পরীক্ষা করে দেখতে হবে। ঠিক হয়ে গেলে নিশ্চিত হওয়া যে বিদ্যমান পাওয়ার সাপ্লাই ত্রুটিপূর্ণ। তাই এটি বদলে ফেলতে হবে।


উদারহরণ-২: Boot Disk Failure মেসেজ দেখায়।

কারণ: 

১। IDE বা SATA ক্যাবল ঢিলেঢালা (লুজ) থাকতে পারে।

২। হার্ডডিস্ক নস্ট থাকতে পারে।

সমাধান: IDE বা SATA ক্যাবল ঢিলা থাকলে সেটি যথাযথো ভাবে খুলে আবার লাগিয়ে দিতে হবে। এরপর কম্পিউটার চালু করতে হবে। আশা করা যায় এবার কম্পিউটারটি বুট করবে অর্থাৎ চালু হবে।


উদারহরণ-৩: বায়োস হার্ডডিস্ক পাচ্ছে না কিংবা অপারেটিং সিস্টেম না পাবার বার্তা দেখাচ্ছে।

কারণ:

১। হার্ডডিস্কে অপারেটিং সিস্টেম ইন্সটল করা আছে সেটি নিশ্চিত থাকলে, এই সমস্যা হতে পারে ডেটা ক্যাবল ও পাওয়ার ক্যাবলের যথাযথ সংযোগের অভাবে।

২। বায়োস CMOS Standard Features এ হার্ডডিস্কটি None করা থাকতে পারে।

৩। CIH জাতীয় ভাইরাসের আক্রমণে বায়োসে হার্ডডিস্ক ডিটেক্ট করতে পারছে না। 

সমাধান:

১। হার্ডডিস্কের ডেটা ক্যাবল এবং পাওয়ার ক্যাবল খুলে পুণরায় সঠিকভাবে লাগিয়ে দিতে হবে।

২। বায়োসের CMOS Standard Features এ হার্ডডিস্কটি None করা থাকলে তা পরিবর্তন করে IDE / SATA /Auto নির্ধারণ করে দিতে হবে।

৩। ভাইরাসের দ্বারা আক্রান্ত হলে বুটআপ ডিস্ক দিয়ে কম্পিউটার চালু করে ভাইরাস স্ক্যান করতে হবে।


উদারহরণ-৪: This program has perform an illegal operation and will shutdown মেসেজ দেখায়।

কারণ:

১। কম্পিউটারের কোনো ফাইল করাপ্ট হয়ে গেলে এমনটি হতে পারে।

২। ভাইরাসের কারণে হতে পারে।

সমাধান:

১। ফাইল নস্ট হয়ে গেলে সংশ্লিষ্ট প্রোগ্রামটি আনইন্সটল করে পূণরায় ইন্সটল করে দেখতে হবে।

২। কার্যকরি একটি এন্টিভাইরাস ব্যবহার করতে হবে। এন্টিভাইরাসটি সব সময় আপডেট রাখতে হবে।


উদারহরণ-৫: কম্পিউটার ঘন ঘন রিস্টার্ট হয়।

কারণ:

১। অতিরিক্ত গরমের কারণে অথবা প্রসেসরের কুলিং ফ্যান ঘুরছে না।

২। ডিসপ্লে বা অন্যান্য ব্যবহৃত কোনো কার্ডের হিট স্কিল খুলে গিয়েছে।

৩। অপারেটিং সিস্টেম বা কোনো সফটওয়্যারে সমস্যা থাকলে।

সমাধান: মাদারবোর্ডের সাথে লাগানো প্রসেসরের ফ্যানটি পরীক্ষা করা। দেখতে হবে কুলিং ফ্যানটি ঠিকমতো ভালো স্পিডে ঘুরছে কিনা।প্রয়োজনে ময়লা পরিস্কার করতে হবে। নষ্ট থাকলে  ভালো একটি ফ্যান লাগিয়ে নিতে হবে। পাওয়ার সাপ্লায়ের ফ্যানটিও পরীক্ষা করতে হবে।


উদারহরণ-৬: কম্পিউটার চালু করলে বুট না হয়ে Wait মেসেজ দেখায়। এছাড়া বিপ শব্দও করছে না।

কারণ:

১। মাদারবোর্ডের সাথে সংযুক্ত ক্যাবলগুলোর সংযোগ ঢিলা থাকতে পারে।

২। মাদারবোর্ডে সমস্যা থাকতে পারে।

সমাধান:

১। মাদারবোর্ডের সাথে সংযোজিত ক্যাবলগুলোর কানেকশন পরীক্ষা করতে হবে। কোনো ক্যাবল ঢিলা থাকলে সেগুলো যথাযথভাবে লাগিয়ে দিতে হবে।

২। মাদারবোর্ডের সমস্যা খোজার জন্য অন্য একটি মাদারবোর্ড লাগিয়ে দেখা যেতে পারে। সমস্যা পেলে মাদারবোর্ড পরিবর্তন করতে হতে পারে।


উদারহরণ-৭: ডিসপ্লে আসছে না কিংবা বিপ সাউন্ড কোনটিই হচ্ছে না।

কারণ: কম্পিউটারের মাদারবোর্ড নস্ট হয়ে গেলে এমনটি হতে পারে।

সমাধান: অন্য একটি মাদারবোর্ড লাগিয়ে পরীক্ষা করতে হবে। বিদ্যমান মাদারবোর্ডটি ত্রুটিপূর্ণ বা সমস্যা হলে নতুন একটি মাদারবোর্ড কিনে ব্যবহার করতে হতে পারে।


উদারহরণ-৮: CKSUM ERROR মেসেজ দেখায়।

কারণ: বায়োস চিপটি মাদারবোর্ডের সাথে সঠিকভাবে বসানো নেই।

সমাধাণ: বায়োস বসানোর ক্ষেত্রে ভুল হয়ে থাকলে ঠিকমতো সকেটে বায়োস চিপটি বসিয়ে দিতে হবে।


উদারহরণ-৯: Illegal Operation মেসেজ প্রদর্শন করে।

কারণ: 

১। প্রসেসরের স্পিডের সাথে মিল রেখে মাদারবোর্ডের জাম্পার সেটিং ভুল হতে পারে।

২। র‌্যামের বাস মিসম্যাচ হলে এ ধরনের মেসেজ দেখায়। যেমন: মাদারবোর্ড হয়তো ১০০ মেগাহার্টস বাস স্পিডের র‌্যাম সমর্থন করে অথচ লাগিয়েছেন ১৩৩ মেগাহার্টেজ বাস স্পিডেরে র‌্যাম।

সমাধান: 

১। সঠিকভাবে জাম্পার সেটিং করতে হবে।

২। সঠিক বাস স্পিডের র‌্যাম ব্যবহার করতে হবে।


উদারহরণ-১০: ডিসপ্লে আসে না।

কারণ: বায়োস নস্ট থাকতে পারে।

সমাধান: ভালো একটি বায়োস লাগিয়ে পরীক্ষা করে দেখতে হবে। বিদ্যমান বায়োসটিতে সমস্যা পেলে সেটি নতুন একটি বায়োস দ্বারা প্রতিস্থাপন করে নিতে হবে।


উদারহরণ-১১: কোনো একটি প্রোগ্রাম বা ফাইল রান করার সময় Out of Memory মেসেজ প্রদর্শন করে।

কারণ:

১। একসাথে একাধিক ডকুমেন্ট বা প্রোগ্রাম ওপেন করা থাকলে এমনটি হতে পারে।

২। যে ফাইলটি বা প্রোগ্রামটি ওপেন করতে হবে তার ধারণক্ষমতার মতো র‌্যাম কম্পিউটারে নেই।

৩। বিশেষ কোনো সফটওয়্যারের ক্ষেত্রে এটি হলে বুঝতে হবে সফটওয়্যারটিতে সমস্যা আছে। হয়তো বা এর কোনো ফাইল মিসিং হয়েছে।

সমাধান:

১। একাধিক ডকুমেন্ট বা প্রোগ্রাম একসাথে ওপেন করা থাকলে যেগুলোর প্রয়োজন নেই সেগুলো বন্ধ করে দিতে হবে।

২। বিশেষ সফটওয়্যারের কারণে সমস্যা হলে সেটি আনইন্সটল করে আবার ইনস্টল করতে হবে।

৩। কম্পিউটারে র‌্যামের পরিমাণ কম হলে তা অবিলম্বে বাড়িয়ে নিতে হবে। তাতে যেকোনো কাজ করতে পারবেন আরও দ্রুতগতিতে।

৪। বিশেষ ক্ষেত্রে কম্পিউটার রিস্টার্ট করে দেখা যেতে পারে।


উদারহরণ-১২: কম্পিউটারের অডিও ড্রাইভার ইন্সটল করা থাকলেও সাউন্ড আসে না।

কারণ:

১। সিস্টেমের পেছনের দিকে সঠিকভাবে জ্যাক লাগানো নেই।

২। স্পিকার ও স্পিকারের ক্যাবলে সমস্যা থাকতে পারে।

সমাধান:

১। সিস্টেমের পেছনের দিকের জ্যাকটি সঠিকভাবে লাগানো কিনা পরীক্ষা করতে হবে। না থাকলে সেটি সঠিকভাবে লাগিয়ে দিতে হবে।

২। স্পিকার কিংবা স্পিকারের ক্যাবলে সমস্যা থাকলে সেগুলো পরিবর্তন করে নিতে হবে।


উদারহরণ-১৩: হার্ডডিস্ক ড্রাইভ থেকে কোনো ভিডিও ফাইল চালালে কম্পিউটার হ্যাং হয়ে যায় কিন্তু অডিও ফাইলের বেলায় ঠিকই চলে।

কারণ:

১। ডিসপ্লে কার্ডে সমস্যা থাকতে পারে।

২। সাউন্ড কার্ড মাদারবোর্ডের সাথে ঠিক ম্যাচ করছে না।

সমাধান:

১। গ্রাফিক্স কার্ডের ড্রাইভার আন-ইন্সটল করে পূণরায় ইন্সটল করে পরীক্ষা করতে হবে। ডিসপ্লে কার্ডটি খুলে এতে ময়লা থাকলে পরিস্কার করতে হবে। পুণরায় স্লটে বসিয়ে পরীক্ষা করতে হবে। প্রয়োজনে ডিসপ্লে কার্ডটি পরিবর্তন করে নিতে হবে।

২। কখনও কখনও সাউন্ড কার্ডের সমস্যার জন্য এমনটি হতে পারে। কোনো নতুন কম্পিউটারে এমন সমস্যা হলে সেটি সাউন্ড কার্ড এবং মেইনবোর্ডের কনফ্লিক্টের কারণেও হতে পারে। এক্ষেত্রে অন্য একটি সাউন্ড কার্ড লাগিয়ে পরীক্ষা করে নিতে হবে।


উদারহরণ-১৪: কীবোর্ড কাজ করছে না।

কারণ: কীবোর্ডের ক্যাবলটি যথাযথভাবে সংযুক্ত নেই।

সমাধান:

১। কীবোর্ডের ক্যাবলটি খুলে সঠিকভাবে পোর্টে পূণরায় লাগিয়ে দিতে হবে।  

২। কম্পিউটার রিস্টার্ট করে দেখা যেতে পারে।

৩। এরপরও কাজ না করলে ধরে নিতে হবে কিবোর্ডটি নস্ট। নতুন একটি কিবোর্ড দ্বারা রিপ্লেস করতে হবে।


উদারহরণ-১৫: মাউস কাজ করছে না।

কারণ:

১। মাউসের ক্যাবলটি যথাযথভাবে সংযুক্ত নেই।

২। মাউসটি নস্ট হয়ে যেতে পারে।

সমাধান:

১। মাউসটি খুলে পুণরায় লাগিয়ে দিতে হবে।

২। কাজ না হলে নতুন একটি মাউস লাগিয়ে দিতে হবে।


উদারহরণ-১৬: Insert System disk and Press any key to Continue মেসেজ দেখায়।

কারণ:

১। হার্ডডিস্ক থেকে সিস্টেম ফাইল মুছে গেছে।

২। হার্ডডিস্কটি নস্ট হয়ে থাকতে পারে।

৩। পাওয়ার কানেকশন ঠিক নাও থাকতে পারে।

সমাধান:

১। Setup Utility থেকে IDE/SATA HDD Auto Detection চেপে দেখেতে হবে। যদি হার্ডডিস্ক ডিটেক্ট করতে পারে তবে হার্ডডিস্কটি ঠিক আছে বুঝতে হবে। এক্ষেত্রে একটি বুটেবল ডিস্ক থেকে কম্পিউটার বুট করতে হবে।

২। হার্ডডিস্ক এর সাথে মাদারবোর্ড এর ক্যাবল খুলে লাগিয়ে দেখতে হবে।

৩। এরপরও না হলে হার্ডডিস্ক নস্ট থাকতে পারে।

 

আরো কিছু ট্রাবলশুটি নিম্নে দেয়া হলো:

কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের প্রতিনিয়তই কোনা না কোনো সমস্যায় পড়তে হয়। সফ্টওয়্যার, হার্ডওয়্যার, নেটওয়ার্ক, সিস্টেম সিকিউরিটি, ভাইরাসজনিত সমস্যা ইত্যাদি। এসব সমস্যা নিরুপণের জন্য কিছু পর্যায়ক্রমিক কাজ করতে হয়, যাকে বলা হয়ে থাকে কম্পিউটার ট্রাবলশুটিং। অর্থাৎ ট্রাবলশুটিং হচ্ছে সমস্যার উৎস বা উৎপত্তি স্থল নির্ণয়ের প্রক্রিয়া।  মূলত অন্য যে কোন ইলেট্রনিক যন্ত্রের তুলনায় কম্পিউটার বা আইসিটি যন্ত্রের ট্রাবলশুটিং একটু বেশিই প্রয়োজন হয়। এর একটি সম্ভাব্য কারণ হতে পারে এ যন্ত্রগুলো সাধারণত বেশি সময় ধরে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। নিচে আরো কিছু ট্রাবলশুটিং নিয়ে আলোচনা করা হলঃ

১। কম্পিউটারের বুটিং জনিত সমস্যা।

 সমাধান:
(১) কম্পিউটার কেসটি বা কেসিং Open করে ডিসপেস্ন কার্ডটি (যদি থাকে) খুলে আবার লাগাতে হবে।
(২) কম্পিউটার বা কেসিং Open করে মেমোরি কার্ড খুলে আবার লাগাতে হবে।

২। সিস্টেম সঠিকভাবে চলছে কিন্তু মনিটরে কিছু দেখা যাচ্ছে না।

 সমাধানঃ
(১) মনিটরের সিগনাল ক্যাবল চেক করতে হবে এবং খুলে পুনরায় সংযোগ স্থাপন করতে হবে।
(২) ক্যাবলের কানেকটরের পিন বাঁকানো আছে কিনা দেখতে হবে। কম্পিউটার (সিপিইউ) এর পাওয়ার ক্যাবল খুলে ১০-২০ মিঃ পরে আবার লাগাতে হবে এবং কম্পিউটার পুনরায় চালু বা অন করতে হবে।

৩। মাউস অথবা কী-বোর্ড সঠিকভাবে কাজ করছে না।

 সমাধান:
(১) সিপিইউ বডির পিছনের পিএস ২ মাউস/কী-বোর্ড পোর্ট উল্টা সংযোগ হতে পারে। USB port হলে খুলে আবার সংযোগ দিতে হবে এবং কম্পিউটারটি রিবুট করতে হবে।
(২) রিবুট এর সময় বারবার F8 চাপ দিতে হবে। Advanced option দেখা গেলে ’Safe Mode’ এ যেতে হবে।
(৩) Save Mode এ বুটিং হবার পর Start → control panel → Performance and Maintenance → System →
Hardware → Device Administrator. এখন মাউস / কী-বোর্ড আইটেম সিলেক্ট এবং ডবল কি লক করে ড্রাইভার লিষ্ট সব ডিলিট করতে হবে। এবার OK কি লক করে সিস্টেম রিবুট করতে হবে।

৪। মনিটরের স্ক্রিনে ”Keyboard failure error” মেসেজ দেখায় এবং কম্পিউটার বুট হয় না।

 সমাধান:
সিপিইউ এর পিছন থেকে কী-বোর্ডের খুলে আবার লাগাতে হবে। এরপর রিবুটের সময় যদি বিপ সাউন্ড করে তবে F2/dell প্রেস করে CMOS সেট আপ এ যেতে হবে এবং ‘‘Load optimize default” এ গিয়ে ভেলু চেক করে F10 দিয়ে সেভ করে রিবুট করতে হবে।

৫। মনিটরের স্ক্রিনে ‘‘Out of Range” মেসেজ দেখায় ।

 সমাধান:
রিবুট এর সময় বারবার F8 চাপ দিতে হবে। Advanced option দেখা গেলে ‘Safe Mode’ এ যেতে হবে। Safe mode-এ বুট হবার পর Start → Control Panel →Display Setup সিলেক্ট করে Advance এ প্রেস করতে হবে। তারপর Monitor সিলেক্ট করে Screen replay frequency suitable এ গিয়ে মান 70 Hz এর নিচে দিতে হবে। ’

৬। মনিটরের স্ক্রিনে ‘‘CMOS Checksum Error ’’ মেসেজ দেখায়।

 সমাধান:
কম্পিউটার রিবুট করে Delete or F2 প্রেস করে CMOS সেট আপ এ গিয়ে ‘ Load File Safe Default ’ এ এন্টার করে F10 → Y প্রেস করে রিবুট করে দেখতে হবে। যদি সমাধান না হয় তবে মেইন বোর্ডের/মাদার বোর্ডের ব্যাটারী পরিবর্তন করতে হবে।

৭। কম্পিউটার হার্ড-ডিস্ক চিনতে পারে না এবং স্ক্রিনে ‘‘Operating System not found ’’ মেসেজ দেখায়।

 সমাধান:
(১) CMOS সেটআপ এ গিয়ে Standard CMOS Feature থেকে IDE Primary Master/Slave কে Auto করে দিতে হবে।
(২) সমাধান না হলে কম্পিউটার খুলে IDE ক্যাবল কানেকশন ও পাওয়ার ক্যাবল কানেকশন চেক করতে হবে এবং পুনরায় কম্পিউটার চালু করতে হবে।

৮। Windows Log-on Password ভুলে যাওয়া জনিত সমস্যা।

সমাধান:
F8 প্রেস করে Safe mode-এ বুট করতে হবে। তারপর Administrator এ দিয়ে Start→ Control Panel → User Account ভুলে যাওয়া PW account সিলেক্ট করে ‘‘Change my Password’ এ গিয়ে মুছে ফেলা অথবা নুতন পাসওয়ার্ড দিতে হবে। এরপর সিস্টেম রিবুট করতে হবে।

৯। কম্পিউটার বুট করতে অনেক সময় লাগে।

 সমাধান:
(১) Start → Run→ Type msconfig → Ok.
(২) Start Program এ কি লক করতে হবে। এবার প্রোগ্রাম লিষ্ট থেকে অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ্লিকেশন আন চেক করে বাদ দিতে হবে।
(৩) ব্যাক-গ্রাউন্ডের ইমেজ বা ফটো পরিবর্তন করে None দিতে হবে।
(৪) ব্যাক গ্রাউন্ডের স্ক্রিন থেকে অপ্রয়োজনীয় আইকন মুছে ফেলা ফেলতে হবে।
(৫) Start → Program → Start Program থেকে অপ্রয়োজনীয় প্রোগ্রাম ডিলিট করা করতে হবে।

১০। সিস্টেম অত্যন্ত গরম হয়ে যায় এবং অস্বভাবিকভাবে হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়।

 সমাধান: মাদারবোর্ড থেকে সতর্কতার সাথে সিপিইউ ফ্যানটি সরিয়ে ভিতরের ধুলিবালি ভালভাবে পরিস্কার করে পুনরায় সংযুক্ত করতে হবে। সমাধান না হলে স্থানীয় কোনো সার্ভিস সেন্টারে নিয়ে অভিজ্ঞ কাউকে দেখাতে হবে।

১১। প্রিনটারে প্রিন্ট হচ্ছে না। 

সমাধান: প্রিন্টারের সাথে পাওয়ার ক্যাবলটি সংযুক্ত আছে কি না পরীক্ষা করে দেখতে হবে। তারপর দেখতে প্রিন্টারের ভেতরে কোনো প্রকার কাগজ কিংবা অন্য কোনো কিছু আটকে আছে কি না। প্রিন্টারের কার্টিজে কালি আছে কি না অথবা  প্রিন্টার থেকে কার্টিজটি খুলে ভালভাবে নড়াচড়া করে পুনরায় কার্টিজটিকে যথাযথ স্থানে স্থাপন করে দেখতে হবে। যদি সমস্যা সমাধান না হয় তাহলে নতুন প্রিন্টারের সাথে সরবরাহকৃত ড্রাইভার সফ্টওয়্যারটি ইনস্টল করতে হবে।

 

কম্পিউটার সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ

কম্পিউটার সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করার জন্য নিমণলিখিত বিষয়গুলো বা নিয়ামকগুলোর প্রতি বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে-

(১) তাপমাত্রা (Temperature)

(২) কম্পিউটার চালু ও বন্ধ করা (Turning the Computer On/Off)

(৩) বিদ্যুৎ সংযোগ ব্যবস্থা (Plugging in the System)

(৪) ময়লা ও দূষণ (Dust and Pollutants) ; ইত্যাদি।

# তাপমাত্রা (Temperature)

 কম্পিউটার সিস্টেমকে অবশ্যই সার্বক্ষণিক একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রার মধ্যে রাখার চেষ্টা করতে হয় । শীতপ্রধান অঞ্চলে যেখানে অফিসে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে দিনের বেলা উষ্ণ রাখা হয় এবং রাতের বেলা অনেক ঠান্ডা হয়ে যায়। মাইক্রোকম্পিউটার সে পরিবেশে বেশি সিস্টেম নষ্টের সম্মুখীন হয় । সক্রিয় একটি মাইক্রোকম্পিউটারের জন্য আদর্শ রুম টেমপারেচার হল ৬০ থেকে ৯০ ডিগ্রী ফারেনহাইট এবং বন্ধ থাকা অবস্থায় ৫০ থেকে ১১০ ডিগ্রী ফারেনহাইট। মাইক্রোকম্পিউটারের জন্য অতিমাত্রায় তাপমাত্রার ওঠা নামা অত্যন্ত বিপদজনক। এই কারণে কম্পিউটার কখনও কোন উত্তপ্ত বা অধিক ঠান্ডা স্থানে রাখা উচিত নয় বা সরাসরি সূর্যালোকেও রাখা উচিত নয় ।

# কম্পিউটার চালু ও বন্ধ করা (Turning the Computer On/Off)

 হঠাৎ তাপমাত্রার পরিবর্তন কম্পিউটারের মারাত্নক ক্ষতি করতে পারে। যখন একটি কম্পিউটার সিস্টেম চালু করা হয় তখন তাপমাত্রার ব্যাপক পরিবর্তন হতে পারে কারণ কম্পিউটার সাধারণত বন্ধ অবস্থায় ঠান্ডা থাকে। কিন্তু চালু বা অন করার সাথে সাথেই তা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। যদি দৈনিক ২-৩ ঘন্টা ব্যবহারের মাত্রা থাকে তাহলে ব্যবহার শেষে বন্ধ করে দেয়াই ভাল। কিন্তু দৈনিক ব্যবহারের মাত্রা যদি বহুবার হয় সেক্ষেত্রে একবার চালু করে পুরো দিনের কাজ শেষ হবার পরেই বন্ধ করা উচিৎ। এক্ষেত্রে অব্যবহৃত সময়ে কম্পিউটারের Sleep Mode ব্যবহার করা যেতে পারে।

# বিদ্যুৎ সংযোগ ব্যবস্থা (Plugging in the System)

 অনেক ব্যবহারকারী বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইসকে একটি পাওয়ার স্ট্রিপ বা লাইনের মাধ্যমে চালনা করে থাকেন যেমন: কফি মেকার, লেজার প্রিন্টার, কপি মেশিন ইত্যাদি। একই পাওয়ার লাইনে যদি উক্ত ইলেকট্রনিক ডিভাইসগুলো সাথে কম্পিউটার চালনা করা হয় তবে সেক্ষেত্রে কম্পিউটার সিস্টেমটি নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই কম্পিউটার সিস্টেমটি ভিন্ন পাওয়ার লাইনে চালনা করা উচিত। কম্পিউটারের হালকা ইলেকট্রনিক ডিভাইসগুলো যদি একই পাওয়ার লাইনে থাকে তবে কম্পিউটার চালনার পূর্বে অন্যান্য ডিভাইসগুলো চালনা করতে হবে। এক্ষেত্রে নিশ্চিত হতে হবে যে বৈদ্যুতিক সার্কিট যন্ত্রগুলো বৈদ্যুতিক চাহিদা যোগান দিতে সক্ষম।

# ময়লা ও দূষণ (Dust and Pollutants)

প্রতিটি কম্পিউটারের মাইক্রোপ্রসেসরের সাথে একটি কুলিং ফ্যান থাকে। এই কুলিং ফ্যানের কাজ হলো বাইরে থেকে বাতাস টেনে নিয়ে কম্পিউটারের সিস্টেম ইউনিটকে ঠান্ডা রাখা। কুলিং ফ্যানটি যখন বাতাস টেনে নেয় তখন বাতাসের সাথে অনেক ধুলোবালিও সিস্টেম ইউনিটে প্রবেশ করে। এই ধুলোবালি সিস্টেম ইউনিটের উপর একটি ময়লার আবরণ ফেলে এবং যার ফলে সিস্টেম ইউনিট সঠিকভাবে কুলিং হয় না। ফলে মাইক্রোপ্রসেসর অতিরিক্ত গরম হতে পারে ; এমনকি মাইক্রোপ্রসেসর নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে। তাই মাইক্রোপ্রসেসরের উপর যাতে এরকম আস্তরণ না পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে এবং প্রয়োজনে একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর পরিস্কার করতে হবে। ডিস্ক ড্রাইভ ধুলোবালির ক্ষেত্রে খুব সংবেদনশীল কারণ তাদের মধ্য দিয়ে একটি বায়ু চলাচলের পথ রয়েছে। সাধারণত এই ডিস্ক ড্রাইভ ধুলোবালির সংস্পর্শে আসলে সঠিকভাবে কাজ করে না। তাই ধুলোবালির হাত থেকে ডিস্ক ড্রাইভকে রক্ষা করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।  

কম্পিউটারকে ট্রাবল থেকে রক্ষা করার জন্য নিম্নের কাজগুলি করতে হবে:

১। কম্পিউটার রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে অর্থাৎ সঠিকভাবে যত্ন নেয়া, নির্দিষ্ট সময় পর পর এর বিভিন্ন যন্ত্রাংশ এবং আনুষঙ্গিক যন্ত্রাংশ পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, কোন যন্ত্র ঠিকমতো কাজ না করলে তা মেরামত কিংবা প্রয়োজনে পরিবর্তন করা।

২। কম্পিউটার বন্ধ করার পর ঢেকে রাখা ও নিয়মিত ধুলাবালি পরিস্কার করা।

৩।  সিপিইউ এবং মনিটরের বহিরাবরণ খুলে ভেতরের ময়লা পরিস্কার করতে ব্লোয়ার বা ভ্যাকুয়াম ক্লিনার ব্যবহার করা।

৩। হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে যাওয়া সমস্যার জন্য হার্ডডিস্কের ক্ষতি হয় এজন্য ইউপিসএস ব্যবহার করা।

৪। ভাইরাসের সমস্যা থেকে বাচার জন্য ভালো মানের এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার করা।

৫। কম্পিউটার রুমের তাপমাত্র স্বাভাবিক রাখার ব্যবস্থা করা।

৬।  হার্ডডিস্কে জায়গা কিছুটা খালি রাখা।

৭। প্রয়োজনীয় ফাইল/সফটওয়্যার বা ডাটার ব্যাকআপ রাখা।

৮। ডিস্ক ক্লিনআপ সফটওয়্যার ব্যবহার করা।

৯। মাঝে মাঝে ডিস্ক ডিফ্রাগমেন্টেশন করা।

১০। অপ্রয়োজনী সফটওয়্যার আনইস্টল করা ইত্যাদি।

0 comments:

Post a Comment

Comment below if you have any questions

Contact form

Name

Email *

Message *