অনুচ্ছেদ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর
বাঙালি জাতির ইতিহাসে সবচেয়ে গৌরবময় ঘটনা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর ২৪ বছরের শোষণ-নিপীড়নের হাত থেকে বাঙালি জাতি তার কষ্টার্জিত মুক্তি লাভ করে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে। এই মুক্তিতযুদ্ধ বাঙালির গৌরব, আমাদের অহংকার। মুক্তিযদ্ধের ইতিহাসকে যথাযথভাবে সংরক্ষণ এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সামনে সেই ইতিহাস তুলে ধরার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত হয় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। এটি বেসরকারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত এবং প্রতিষ্ঠাকাল ১৯৯৬ সালের ২২শে মার্চ। ঢাকার সেগুনবাগিচা এলাকায় এই জাদুঘরের অবস্থান। কয়েকজন বরেণ্য ব্যক্তির উদ্যোগে নিরপেক্ষভাবে স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস সংরক্ষণের জন্য এটি প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করা হয়। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের প্রবেশপথের মুখেই রয়েছে ‘শিখা চির অম্লান’। এই জাদুঘরটি দ্বিতলা ছিল। গত ১৫ এপ্রিল ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নয় তলাবিশিষ্ট নতুন ভবনে মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরটি স্থানামত্মর করা হয় এবং পরের দিন ১৬ এপ্রিল ‘শিখা চির অম্লান’ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। প্রায় দুই বিঘা জায়গাজুড়ে নির্মিত ভবনের ব্যবহারযোগ্য আয়তন ১ লক্ষ ৮৫ হাজার বর্গফুট। মুক্তিযুদ্ধের নানা তথ্য, প্রমাণ, দলিল, ছবি, নিদর্শন, রেকর্ডপত্র, স্মারকচিত্র সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও প্রদর্শনের সুব্যবস্থা রয়েছে এই জাদুঘরে। বাঙালির ইতিহাস ও সংস্কৃতির হাজার বছরের ধারবাহিকতা সংরক্ষিত হয়েছে এখানে। সাধারণ মানুষের মধ্যে বিশেষ করে এই প্রজন্মের তরুণ ছেলেমেয়েদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছড়িয়ে দেয়াই এই জাদুঘর প্রতিষ্ঠার প্রধান লক্ষ্য। এই জাদুঘর প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে একটা ধারণা পাওয়া যাবে যা আমাদের এই মহান ইতিহাসের চেতনাকে বিকশিত করে তুলবে দিন দিন। তবে মুক্তিযুদ্ধের গুরুত্ব বাড়াতে এই জাদুঘরকে কেবল সংগ্রহশালা ও প্রদর্শনশালা হিসেবে ব্যবহার করলে চলবে না। সবধরনের মানুষের অংশগ্রহণের মাধ্যমে একে আরও উন্নত করে তুলতে হবে।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comment below if you have any questions