অক্সিজেন কি
অক্সিজেন (oxygen): অক্সিজেন স্বাদহীন, বর্ণহীন ও গন্ধহীন গ্যাসীয় পদার্থ। এটি একটি অধাতব মৌল । প্রতীক ০, আণবিক সঙ্কেত | 02,। পারমাণবিক সংখ্যা ৮, পারমাণবিক ওজন ১৬। তিন রকম আইসোটোপ বা সমস্থানিক আছে, অক্সিজেন১৬, অক্সিজেন-১৭ ও অক্সিজেন-১৮। প্রকৃতিতে অক্সিজেন মুক্ত ও যুক্ত অবস্থায় পাওয়া যায় । ওজন অনুপাতে ভূ-ত্বকে শতকরা ৪৮.৬ ভাগ এবং বাতাসে মুক্ত অবস্থায় অক্সিজেন আছে শতকরা ২০.৯ ভাগ অর্থাৎ বাতাসের আয়তনের প্রায় এক পঞ্চমাংশ অক্সিজেন । পানিতে সামান্য দ্রবণীয় । তরল অক্সিজেন ফিকে নীল রঙের হয়।
দহন ও শ্বাস কার্যের জন্য অক্সিজেন অপরিহার্য। | অক্সিজেন ছাড়া জীবজন্তুর জীবনধারণ অসম্ভব। খাদ্য ও পানির অভাবে আমরা কয়েক দিন বাঁচতে পারি, কিন্তু অক্সিজেনের অভাবে পাঁচ মিনিটের বেশি বাঁচতে পারি না। গাছের সালোকসংশ্লেষণের সময় অক্সিজেন মুক্ত হয় । অক্সিজেন একটি সক্রিয় রাসায়নিক পদার্থ । নিষ্ক্রিয় গ্যাস ব্যতীত সকল মৌল অক্সিজেনের সাথে যৌগ গঠন করে । অক্সিজেন জারণ বিক্রিয়ার মাধ্যমে অন্য মৌলের সাথে অক্সাইড গঠন করে। অক্সিজেন জীবদেহে হাইড্রোজেন, কার্বন ও অন্যান্য পদার্থের সাথে মিলিত অবস্থায় থাকে।
ওজোন অক্সিজেনের একটি বহুরূপ। উর্ধ্বাকাশে অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাবে অক্সিজেন ওজোনে (03) পরিণত হয়। রকেট জ্বালানিতে অক্সি-অ্যাসিটিলিন ও অক্সি-হাইড্রোজেন শিখায় অক্সিজেন ব্যবহৃত হয়।
ইস্পাত ও তামা, অ্যামোনিয়া, সংশ্লেষিত গ্যাস ও মিথাইল অ্যালকোহল প্রস্তুতে অক্সিজেন ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়া কাচ শিল্পেও অক্সিজেনের ব্যবহার রয়েছে। উর্ধ্বাকাশের বায়ুতে অক্সিজেন কম থাকে, খনিতে যে বায়ু থাকে তা শ্বাস-প্রশ্বাসের উপযোগী নয় এবং মহাকাশে, খনিতে ও সমুদ্রতলে শ্বাস নেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় বায়ু পাওয়া যায় না বলে নভোচারী, খনি শ্রমিক ও ডুবুরিদের সাথে করে অক্সিজেন সিলিন্ডার নিতে হয় । অক্সিজেন প্রাণিদেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা বজায় রাখতে সহায়তা করে এবং দৈহিক ও মানসিক কাজ করার ক্ষমতা বা শক্তি যোগায়।
অক্সিজেনের তিনটি তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ তৈরি করা গেছে। এগুলি হল অক্সিজেন-১৪, অক্সিজেন-১৫ ও অক্সিজেন-১৯। এসব তেজস্ক্রিয় আইসোটোপের অর্ধায়ু (half-life) খুবই কম।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comment below if you have any questions