Home » » গেমিং কনসোল কেনার আগে যা জানতে হবে!

গেমিং কনসোল কেনার আগে যা জানতে হবে!

game-console

গেমিং কনসোল কেনার আগে যা জানতে হবে!

গেমিং কনসোল হলো একটি বিশেষ ধরনের ডিভাইস যা শুধুমাত্র ভিডিও গেম খেলার জন্য তৈরি। সাধারণত টেলিভিশন বা মনিটরের সঙ্গে সংযুক্ত করে এগুলো ব্যবহার করা হয়। স্মার্টফোন বা পিসির মতো বহুমুখী ব্যবহার না থাকলেও, কনসোল বিশেষভাবে গেমিং এর জন্য অপ্টিমাইজড থাকে, ফলে এর পারফরম্যান্স তুলনামূলকভাবে ভালো হয়।

জনপ্রিয় কনসোল ব্র্যান্ড

বর্তমানে বাজারে প্রধানত তিনটি বড় গেমিং কনসোল ব্র্যান্ড রয়েছে –

  • Sony PlayStation

  • Microsoft Xbox

  • Nintendo Switch

প্রতিটি ব্র্যান্ডেরই আলাদা গেম লাইব্রেরি, পারফরম্যান্স এবং গেমপ্লে অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে এই তিনটির মধ্যে কোনটি আপনার জন্য সঠিক হবে তা বোঝা জরুরি।

কেন পিসির চেয়ে কনসোল

অনেকে প্রশ্ন করেন – গেমিং পিসি কেন নয়? আসলে গেমিং পিসি শক্তিশালী হলেও সেটি তৈরি করতে তুলনামূলক বেশি খরচ হয়। অন্যদিকে কনসোল তুলনামূলকভাবে কম দামে সহজেই প্রস্তুত-খেলার অভিজ্ঞতা দেয়। কনসোলে নিয়মিত সফটওয়্যার আপডেট, এক্সক্লুসিভ গেম এবং স্থিতিশীল পারফরম্যান্সের সুবিধা পাওয়া যায়।


গেমিং কনসোল কেনার আগে বিবেচ্য বিষয়গুলো

বাজেট ও মূল্য

গেমিং কনসোল কেনার ক্ষেত্রে বাজেট একটি বড় ভূমিকা পালন করে। প্লে-স্টেশন 5 বা এক্সবক্স সিরিজ এক্স এর মতো হাই-এন্ড কনসোলগুলো তুলনামূলক বেশি দামী। অন্যদিকে এক্সবক্স সিরিজ এস বা নিন্টেন্ডো সুইচ কিছুটা সাশ্রয়ী দামে পাওয়া যায়। শুধু কনসোল নয়, অতিরিক্ত কন্ট্রোলার, সাবস্ক্রিপশন ফি, গেমস কেনার খরচও মাথায় রাখতে হবে।

কনসোলের মূল দাম

কনসোলের বেস প্রাইস তুলনামূলক কম মনে হলেও প্রকৃত খরচ অনেক সময় বেশি হয়। কারণ, গেমস, এক্সেসরিজ ও অনলাইন সার্ভিস ফি মিলিয়ে খরচ বেড়ে যায়।

অতিরিক্ত গেম ও সাবস্ক্রিপশন খরচ

Sony PlayStation Plus, Xbox Game Pass বা Nintendo Switch Online – এগুলো ছাড়া অনলাইন গেমিং উপভোগ করা সম্ভব নয়। তাই এগুলোর মাসিক বা বাৎসরিক খরচও বাজেটে যুক্ত করতে হবে।


গেম লাইব্রেরি

কোন কনসোল কেনার আগে তার গেম লাইব্রেরি সম্পর্কে ধারণা নেওয়া জরুরি।

এক্সক্লুসিভ গেম

PlayStation-এর জন্য God of War, The Last of Us, Xbox-এর জন্য Halo, Forza Horizon কিংবা Nintendo-এর জন্য Mario, Zelda সিরিজ – এগুলো শুধুমাত্র সেই নির্দিষ্ট কনসোলে খেলা যায়। যদি আপনি নির্দিষ্ট গেম খেলতে চান, তবে সেই অনুযায়ী কনসোল বেছে নিতে হবে।

থার্ড-পার্টি গেম

FIFA, Call of Duty, GTA এর মতো জনপ্রিয় গেমগুলো প্রায় সব কনসোলে পাওয়া যায়। তাই শুধুমাত্র এগুলো খেলতে চাইলে ব্র্যান্ডের ভিন্নতা তেমন গুরুত্ব পায় না।


পারফরম্যান্স ও গ্রাফিক্স

একটি কনসোলের পারফরম্যান্স নির্ভর করে তার প্রসেসর, GPU, RAM এবং স্টোরেজ ক্ষমতার ওপর।

প্রসেসিং পাওয়ার

PlayStation 5 এবং Xbox Series X বর্তমানে বাজারের সবচেয়ে শক্তিশালী কনসোল। এগুলোতে 4K গেমিং, রে ট্রেসিং এবং দ্রুত লোডিং সুবিধা রয়েছে।

গ্রাফিক্স মান

যদি আল্ট্রা-রিয়ালিস্টিক গ্রাফিক্স ও 60FPS/120FPS গেমপ্লে চান, তবে হাই-এন্ড কনসোল বেছে নেওয়া উচিত।

স্টোরেজ ক্ষমতা

বড় গেমগুলোর সাইজ অনেক বেশি হয়। তাই 500GB বা 1TB স্টোরেজ কনসোল কিনলে সুবিধা হবে। প্রয়োজনে এক্সটার্নাল হার্ডড্রাইভ বা SSD ব্যবহার করা যায়।


অনলাইন ফিচার ও সার্ভিস

আজকাল কনসোল শুধু অফলাইন গেমিং এর জন্য সীমাবদ্ধ নয়।

মাল্টিপ্লেয়ার সুবিধা

বন্ধুদের সঙ্গে অনলাইনে খেলার জন্য PlayStation Plus, Xbox Live Gold বা Nintendo Switch Online সাবস্ক্রিপশন প্রয়োজন।

ক্লাউড গেমিং

Microsoft-এর Xbox Cloud Gaming, PlayStation Now এর মতো সার্ভিসগুলো গেম ডাউনলোড না করেই খেলার সুযোগ দেয়।

ডাউনলোডেবল কনটেন্ট (DLC)

কোনো গেম রিলিজ হওয়ার পর অনেক সময় নতুন কনটেন্ট বা এক্সপ্যানশন যুক্ত হয়। এগুলো কিনতে আলাদা খরচ হয়।


ডিজাইন ও ব্যবহার অভিজ্ঞতা

গেমিং কনসোলের ডিজাইন, কন্ট্রোলার এবং UI/UX অভিজ্ঞতাও কেনার আগে বিবেচনা করা উচিত।

কনসোল ডিজাইন

কনসোলের সাইজ, ওজন ও আকার আপনার লিভিং রুম বা ডেস্ক সেটআপের সঙ্গে মানানসই হওয়া দরকার।

কন্ট্রোলার অভিজ্ঞতা

Sony-এর DualSense কন্ট্রোলার হ্যাপটিক ফিডব্যাক ও অ্যাডাপটিভ ট্রিগারের কারণে ভিন্ন অভিজ্ঞতা দেয়। অন্যদিকে Xbox কন্ট্রোলার দীর্ঘ সময় খেলার জন্য আরামদায়ক।

ইউজার ইন্টারফেস

PlayStation, Xbox এবং Nintendo-এর ইন্টারফেস ভিন্ন ধরনের। কোনটি আপনার জন্য সহজবোধ্য তা আগে যাচাই করে নেওয়া ভালো।


ব্যাকওয়ার্ড কম্প্যাটিবিলিটি

অনেক সময় পুরোনো কনসোলের গেম নতুন কনসোলে খেলার সুযোগ দেয়। যেমন Xbox Series X/S এ পুরোনো Xbox গেম খেলা যায়। আবার PlayStation 5 এ অনেক PlayStation 4 গেম চালানো যায়। যদি পুরোনো গেমসের প্রতি আগ্রহ থাকে তবে এই বিষয়টি অবশ্যই বিবেচনা করতে হবে।


দীর্ঘমেয়াদী সাপোর্ট

কনসোল কেনার সময় শুধু বর্তমান নয়, ভবিষ্যতের কথাও চিন্তা করতে হবে।

সফটওয়্যার আপডেট

নিয়মিত আপডেট পাওয়া কনসোল দীর্ঘদিন নিরাপদ ও কার্যকর থাকে।

গেম রিলিজ

কনসোলের লাইফসাইকেল সাধারণত ৬–৭ বছর হয়। তাই এমন কনসোল কিনতে হবে যার জন্য ভবিষ্যতেও নতুন গেম আসবে।

রিসেল ভ্যালু

জনপ্রিয় কনসোলগুলোর রিসেল ভ্যালু বেশি থাকে। ভবিষ্যতে নতুন মডেল কেনার সময় পুরোনো কনসোল বিক্রি করে কিছু অর্থ ফেরত পাওয়া সম্ভব।


কোন কনসোল কার জন্য উপযুক্ত

ক্যাজুয়াল গেমার

যারা শুধু বিনোদনের জন্য সাধারণ গেম খেলেন তাদের জন্য Nintendo Switch বা Xbox Series S ভালো বিকল্প হতে পারে।

হার্ডকোর গেমার

যারা হাই-এন্ড গ্রাফিক্স ও এক্সক্লুসিভ AAA টাইটেল খেলতে চান তাদের জন্য PlayStation 5 বা Xbox Series X সেরা পছন্দ।

ফ্যামিলি গেমিং

পরিবারের সবাই মিলে গেম খেলতে চাইলে Nintendo Switch সেরা বিকল্প। এর গেমগুলো তুলনামূলকভাবে সহজ ও ফ্যামিলি-ফ্রেন্ডলি।

বাজেট কনসোল

যাদের বাজেট সীমিত তাদের জন্য Xbox Series S একটি আদর্শ কনসোল। এটি সাশ্রয়ী দামে ভালো পারফরম্যান্স দেয়।


গেমিং কনসোল কেনার টিপস

রিসার্চ করুন

কনসোল কেনার আগে ইউটিউব রিভিউ বা ব্লগ থেকে বিস্তারিত জেনে নিন।

ডেমো চেষ্টা করুন

শপে গিয়ে কনসোল হাতে নিয়ে কন্ট্রোলার অভিজ্ঞতা পরীক্ষা করুন।

অফার ও ডিসকাউন্ট

বিভিন্ন ফেস্টিভাল বা অনলাইন সেলে ভালো ডিসকাউন্ট পাওয়া যায়। তাই সেই সময় কিনলে লাভজনক হয়।

অফিসিয়াল ডিস্ট্রিবিউটর থেকে কিনুন

লোকাল বা অননুমোদিত দোকান থেকে কেনা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। ওয়ারেন্টি নিশ্চিত করতে অফিসিয়াল সোর্স থেকে কেনা উত্তম।

0মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comment below if you have any questions

Contact form

নাম

ইমেল*

বার্তা*