Home » » স্মার্টফোনে নিরাপত্তা বজায় রাখার উপায়!

স্মার্টফোনে নিরাপত্তা বজায় রাখার উপায়!

smartphone

স্মার্টফোনে নিরাপত্তা বজায় রাখার উপায়!

স্মার্টফোনে থাকে আপনার ব্যক্তিগত ছবি, ভিডিও, চ্যাট, নোট, কন্ট্যাক্ট, এমনকি পাসওয়ার্ড সংক্রান্ত তথ্য। এগুলো যদি ভুল হাতে চলে যায়, তবে তা ভয়াবহ হতে পারে।

অনলাইন ব্যাংকিং ও আর্থিক লেনদেন

বর্তমানে বেশিরভাগ মানুষ মোবাইল ব্যাংকিং বা ইন্টারনেট ব্যাংকিং ব্যবহার করেন। নিরাপত্তা দুর্বল হলে আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খালি হয়ে যেতে পারে।

ডিজিটাল পরিচয় রক্ষা

সোশ্যাল মিডিয়ার একাউন্ট হ্যাক হলে আপনার পরিচয় ব্যবহার করে প্রতারণা করা হতে পারে।

ব্যবসায়িক গোপন তথ্য

অফিসিয়াল ইমেইল বা ব্যবসায়িক ডকুমেন্ট যদি হ্যাকারদের হাতে যায়, তবে তা প্রতিষ্ঠান বা ব্যবসার জন্য ভয়ংকর ক্ষতির কারণ হতে পারে।


শক্তিশালী পাসওয়ার্ড এবং বায়োমেট্রিক সুরক্ষা ব্যবহার

জটিল পাসওয়ার্ড ব্যবহার

সহজ পিন বা 1234 ধরনের পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা কখনোই নিরাপদ নয়। সবসময় বড় হাতের অক্ষর, ছোট হাতের অক্ষর, সংখ্যা ও বিশেষ চিহ্ন মিলিয়ে জটিল পাসওয়ার্ড তৈরি করুন।

পাসওয়ার্ড ম্যানেজার অ্যাপ

ভালো মানের পাসওয়ার্ড ম্যানেজার ব্যবহার করলে আপনাকে সব পাসওয়ার্ড মুখস্থ রাখতে হয় না। এটি নিরাপত্তা আরও জোরদার করে।

বায়োমেট্রিক লক

ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর বা ফেস আনলক ব্যবহার করলে ডিভাইসের সুরক্ষা অনেক বেড়ে যায়। এগুলো পাসওয়ার্ড অনুমান করা থেকে অনেক বেশি নিরাপদ।


সফটওয়্যার এবং সিস্টেম আপডেট করা

কেন আপডেট প্রয়োজন

সফটওয়্যার ডেভেলপাররা নিয়মিত সিকিউরিটি প্যাচ প্রকাশ করে। এগুলো না করলে হ্যাকাররা পুরনো দুর্বলতা ব্যবহার করে আক্রমণ করতে পারে।

অটোমেটিক আপডেট সক্রিয় রাখা

স্মার্টফোনে সবসময় অটো-আপডেট চালু রাখলে নতুন সুরক্ষা আপডেট স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইনস্টল হয়।

অ্যাপ আপডেট রাখা

শুধু সিস্টেম নয়, ব্যবহার করা প্রতিটি অ্যাপ নিয়মিত আপডেট করা জরুরি। পুরনো অ্যাপ অনেক সময় হ্যাকিংয়ের বড় সুযোগ তৈরি করে।


নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার

পাবলিক ওয়াইফাই ব্যবহারে সতর্কতা

পাবলিক ওয়াইফাই ব্যবহার করলে হ্যাকাররা সহজেই ডেটা ইন্টারসেপ্ট করতে পারে। তাই ব্যাংকিং বা সংবেদনশীল কাজ কখনোই পাবলিক ওয়াইফাইতে করবেন না।

ভিপিএন ব্যবহার

ভালো মানের ভিপিএন ব্যবহার করলে আপনার ইন্টারনেট কানেকশন এনক্রিপ্টেড হয়, ফলে গোপনীয়তা বাড়ে।

ব্রাউজার নিরাপত্তা

সবসময় সিকিউর ওয়েবসাইটে (https) প্রবেশ করুন। ব্রাউজারে সিকিউরিটি ও প্রাইভেসি সেটিংস কনফিগার করে রাখুন।


অ্যাপ ইনস্টলেশনে সচেতনতা

অফিসিয়াল স্টোর থেকে অ্যাপ ইনস্টল

সবসময় Google Play Store বা Apple App Store থেকে অ্যাপ ইনস্টল করুন। অজানা সোর্স থেকে অ্যাপ ডাউনলোড ঝুঁকিপূর্ণ।

অ্যাপ পারমিশন নিয়ন্ত্রণ

অ্যাপ ইনস্টল করার সময় যে অনুমতি চাইছে তা খেয়াল করুন। অনেক অ্যাপ অপ্রয়োজনীয় পারমিশন চায়, যা ডেটা চুরির সুযোগ তৈরি করতে পারে।

অজানা লিঙ্কে ক্লিক এড়িয়ে চলা

এসএমএস, ইমেইল বা সোশ্যাল মিডিয়ায় পাওয়া সন্দেহজনক লিঙ্কে কখনো ক্লিক করবেন না। এগুলোতে ফিশিং বা ম্যালওয়্যার থাকতে পারে।


স্মার্টফোন এনক্রিপশন এবং ডেটা ব্যাকআপ

ডেটা এনক্রিপশন

এনক্রিপশন সক্রিয় রাখলে আপনার স্মার্টফোনের সব ডেটা এনক্রিপ্টেড থাকে। ফলে কেউ অনুমতি ছাড়া প্রবেশ করলেও ডেটা পড়তে পারবে না।

নিয়মিত ব্যাকআপ

ক্লাউড স্টোরেজ বা এক্সটার্নাল ডিভাইসে নিয়মিত ব্যাকআপ রাখলে স্মার্টফোন হারিয়ে গেলেও ডেটা নিরাপদ থাকে।

রিমোট ওয়াইপ সুবিধা

বেশিরভাগ স্মার্টফোনে রিমোট ওয়াইপ সুবিধা আছে। এটি চালু রাখলে হারিয়ে গেলে ডিভাইস দূর থেকে মুছে ফেলা যায়।


সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সচেতনতা

প্রাইভেসি সেটিংস

Facebook, Instagram বা অন্য প্ল্যাটফর্মে সবসময় প্রাইভেসি সেটিংস কনফিগার করুন।

অপরিচিত ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট এড়িয়ে চলা

অপরিচিত বা সন্দেহজনক প্রোফাইল থেকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট গ্রহণ করবেন না।

ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার না করা

মোবাইল নম্বর, ঠিকানা বা অফিস সংক্রান্ত তথ্য খোলাখুলি শেয়ার করা থেকে বিরত থাকুন।


নিরাপত্তা অ্যাপ ও অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার

বিশ্বস্ত অ্যান্টিভাইরাস

বিশ্বস্ত অ্যান্টিভাইরাস অ্যাপ ব্যবহার করলে ম্যালওয়্যার ও ভাইরাস শনাক্ত করা যায়।

এন্টি-থেফট ফিচার

অ্যান্টিভাইরাসে থাকা এন্টি-থেফট ফিচার দিয়ে ডিভাইস লোকেট করা, লক করা বা ডিলিট করা যায়।

ফায়ারওয়াল অ্যাপ

কিছু ফায়ারওয়াল অ্যাপ আছে যা নির্দিষ্ট অ্যাপের ইন্টারনেট অ্যাক্সেস বন্ধ করে নিরাপত্তা বাড়াতে সাহায্য করে।


শিশু ও পরিবারের জন্য নিরাপত্তা

প্যারেন্টাল কন্ট্রোল

শিশুদের স্মার্টফোন ব্যবহারে সবসময় প্যারেন্টাল কন্ট্রোল চালু রাখুন।

অনলাইন ঝুঁকি সম্পর্কে শিক্ষা

পরিবারের সবাইকে বিশেষ করে শিশুদের অনলাইন প্রতারণা ও হ্যাকিং সম্পর্কে সচেতন করুন।

সীমিত স্ক্রিন টাইম

শিশুদের অতিরিক্ত ব্যবহার এড়াতে সীমিত স্ক্রিন টাইম নির্ধারণ করুন।


ফিশিং এবং প্রতারণা থেকে সুরক্ষা

ফিশিং ইমেইল শনাক্ত করা

অতিরিক্ত লোভনীয় অফার, ভুল বানান, বা অচেনা প্রেরকের ইমেইল ফিশিং হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

ওটিপি শেয়ার না করা

ব্যাংক বা সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান কখনোই ফোনে বা মেসেজে ওটিপি চাইবে না।

দ্বি-স্তরের যাচাই (Two-Factor Authentication)

সব গুরুত্বপূর্ণ অ্যাকাউন্টে দ্বি-স্তরের যাচাই চালু রাখুন। এতে পাসওয়ার্ড ফাঁস হলেও অ্যাকাউন্ট হ্যাক হওয়া কঠিন হয়ে পড়ে।


শারীরিক নিরাপত্তা

ডিভাইস লক করে রাখা

যখনই ব্যবহার করছেন না, সবসময় ডিভাইস লক করে রাখুন।

স্মার্টফোন ট্র্যাকিং ফিচার

“Find My Device” বা সমতুল্য ফিচার চালু রাখুন।

চার্জিং পোর্টে সতর্কতা

অপরিচিত স্থানে চার্জ দেওয়ার সময় সতর্ক থাকুন, কারণ USB পোর্ট দিয়ে ডেটা চুরি হতে পারে।

0মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comment below if you have any questions

Contact form

নাম

ইমেল*

বার্তা*