ট্রানজিস্টর (Transistor) আবিষ্কারের ইতিহাস
ইংরেজী ১৮৮৬ খ্রীষ্টাব্দে জার্মান বিজ্ঞানী উইঙ্কলার একটি নতুন মৌলিক পদার্থ আবিষ্কার করেন। নিজ মাতৃভূমির নামানুসারে পদার্থটির নামকরণ করেন জার্মেনিয়াম।
নতুন পদার্থ জার্মেনিয়াম নিয়ে অতঃপর শুরু হয় গবেষণা। তড়িৎ পরিবাহিতার ক্ষেত্রে একে চিহ্নিত করা হয়েছিল অর্ধপরিবাহীরূপে।
এরপর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে গেলে বেতার গ্রাহক যন্ত্রে রেডিও ভাল্বের পরিবর্তে ওকে ব্যবহার করার জন্য বিজ্ঞানীরা সচেষ্ট হয়ে উঠলেন। এর একটা কারণ অবশ্য ছিল। বিজ্ঞানীরা অনেকেই আগেই ঘোষণা করেছিলেন, অর্ধপরিবাহী জার্মেনিয়ামকে রেডিও ভাল্বরূপে ব্যবহার করা যাবে। জগদীশচন্দ্র বসু, মার্কনি প্রভৃতি বিজ্ঞানী চেষ্টাও করেছিলেন ওকে কাজে লাগাতে, কিন্তু ব্যর্থ হয়েছিলেন। এবার প্রচুর পরিমাণে ব্যবহার চলতে থাকায় খরচ কমানোর জন্য অনেকেই আগ্রহী হয়ে উঠলেন এবং গবেষণা শুরু হলো নানা জায়গায়। অবশেষে ভাল্বের পরিপূরক হিসাবে জার্মেনিয়াম প্রথম ব্যবহার করে সাফল্য অর্জন করলেন ডঃ জন বার্ডিন এবং জন ওয়াল্টার ব্রাটাইন নামে দুজন মার্কিন বিজ্ঞানী। এইটিই ট্রানজিস্টর।
অবশেষে ১৯৫১ সালে বহু বিজ্ঞানীর বহু গবেষণালব্ধ ফল থেকে সত্য- সত্যই আবিষ্কার হলো প্রকৃত ট্রানজিস্টার। আর রেডিও ভাল্বের দরকার হলোনা, সে কাজ ছোট্ট ও হালকা একটুকরো ট্রানজিস্টার সম্পন্ন করলো।
বর্তমানে ট্রানজিস্টারের অভাবনীয়ভাবে উন্নতি হয়েছে। চাহিদা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তৈরি হচ্ছে নানা জাতীয় ট্রানজিস্টার। অনেকে আবার সিলিকনকে ঐ কাজে প্রয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিন্তু জার্মেনিয়ামের একটা বড় গুণ হচ্ছে, ওর মত এত বিশুদ্ধ পদার্থ খুব কমই পাওয়া যায়।
এত বিশুদ্ধ যে, হাজার কোটি জার্মেনিয়াম পরমাণুর সঙ্গে মাত্র একটি অন্য পদার্থের পরমাণু মিশে থাকে কিনা সন্দেহ। তাই জার্মেনিয়াম হচ্ছে ট্রানজিস্টর তৈরির আদর্শ মৌল।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comment below if you have any questions