বহুব্রীহি সমাস কত প্রকার
বহুব্রীহি সমাসের প্রকারভেদ:
বহুব্রীহি সমাস কয়েক প্রকার হয়। বহুব্রীহি সমাসকে নিম্নলিখিত কয়েকটি প্রধান ভাগে ভাগ করা যায়।
১। ব্যধিকরণ বহুব্রীহি : যে বহুব্রীহি সমাসের পূর্বপদ ও উত্তরপদ উভয়ই বিশেষ্য হয়, তাকে ব্যধিকরণ বহুব্রীহি সমাস বলে। যেমন, পেট সর্বস্ব যার = পেট সর্বস্ব, আশীতে বিষ যার = আশিবিষ।
২। সমানাধিকরণ-বহুব্রীহি : পূর্বপদ বিশেষণ ও পরপদ বিশেষ্য হলে তাকে সমানাধিকরণ বহুব্রীহি বলে। যেমন: দশ আনন যার = দশানন; বদমেজাজ যার = বদমেজাজি।
৩। ব্যতিহার-বহুব্রীহি : ক্রিয়ার পারস্পরিক সম্পর্ক বোঝালে এবং একই শব্দের পুনরুক্তি দ্বারা যে বহুব্রীহি হয়, তাকে ব্যতিহার বহুব্রীহি বলে। যেমন: লাঠিতে লাঠিতে লড়াই যেখানে = লাঠালাঠি, কানে কানে কথা যেখানে = কানাকানি।
৪। মধ্যপদলোপী বহুব্রীহি : যে বহুব্রীহি সমাসে ব্যাস বাক্যস্থিত এক বা একাধিক পদ লোপ পায়, তাকে মধ্যপদলোপী বহুব্রীহি সমাস বলে। যেমন: চাঁদের মত সুন্দর মুখ যার = চাঁদমুখ; রসপূর্ণ যে গোল্লা = রসগোল্লা।
৫। নঞর্থক বহুব্রীহি : নাস্তি, অভাব, অপকৃষ্টতা প্রভৃতি অর্থে যে বহুব্রীহি সমাস হয়, তাকে নঞর্থক বহুব্রীহি সমাস বলে। যেমন: নেই হায়া যার = বেহায়া; নেই মমতা যার = নির্মম।
৬। উপমাপ্রধান বহুব্রীহি : উপমেয় ও উপমান সম্বন্ধবোধক দুটি বিশেষ্যের মধ্যে যে বহুব্রীহি সমাস হয়, তাকে উপমাপ্রধান বহুব্রীহি সমাস বলে। যেমন: কমলের ন্যায় অক্ষি যার = কমলাক্ষ, মৃগের নয়নের ন্যায় নয়ন যার = মৃগনয়না।
৭। প্রত্যয়ান্ত বহুব্রীহি : যে বহুব্রীহি সমাসের শেষে আ, এ, ও প্রত্যয় থাকে, তাকে প্রত্যয়ান্ত বহুব্রীহি সমাস বলে। যেমন: ঘরের দিকে মুখ যার = ঘরমুখো, একদিকে চোখ যার = একচোখা।
৮। অলুক বহুব্রীহি : যে বহুব্রীহি সমাসে পূর্বপদের বিভক্তি লোপ হয় না, তাকে অলুক বহুব্রীহি সমাস বলে। যেমন: হাতে খড়ি দেয়া হয় যে অনুষ্ঠানে = হাতেখড়ি, গায়ে হলুদ দেয়া হয় যে অনুষ্ঠানে =গায়ে হলুদ।
৯। দ্বিগু বা সংখ্যাবাচক বহুব্রীহি : সংখ্যাবাচক শব্দের সাথে সমাস হয়ে সমাহার অর্থ না বুঝিয়ে অন্য কোন অর্থ বোঝালে তাকে দ্বিগু বা সংখ্যাবাচক বহুব্রীহি সমাস বলে। যেমন: চার চাল আছে যার =চৌচাল, পাঁচ সের ওজন যার = পাঁচসেরী/পাঁচসেরি।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comment below if you have any questions