বহুব্রীহি সমাস
যে সমাসবদ্ধ পদের অর্থ সমস্যমান পদগুলি কোনটিকেই না বুঝিয়ে অন্য কিছুকে বোঝায়, তাকে বহুব্রীহি সমাস বলে। ‘বীণাপাণি’ এই সমাসবদ্ধ শব্দটিতে আছে ‘বীণা’ আর ‘পাণি’। কিন্তু ‘বীণাপাণি’ শব্দে এ দুটির কোনটিকেই বোঝায় না। ‘বীণাপাণি’ অর্থ সরস্বতী। বীণাপাণি-এর ব্যাসবাক্য হলো, ‘বীণা পানিতে যার।’ অতএব এটি বহুব্রীহি সমাস।
সংজ্ঞা: যে সমাসে পূর্বপদ বা উত্তরপদের কোনটিরই অর্থ বোঝায় না এবং সমস্তপদটি অন্য একটি পদের অর্থ বোঝায়, তাকে বহুব্রীহি সমাস বলে।
বহুব্রীহি সমাস এর ক্ষেত্রে মনে রাখার বিষয় সমূহ:
১। বহুব্রীহি সমাসে সহ, সহিত ও সমান শব্দের স্থলে ‘স’ হয় এবং ‘স’ পূর্বপদে বসে। যেমন: ফলের সহিত বা ফলসহ বর্তমান যা = সফল; সমান জাতি যার = সজাতি, লজ্জাসহ বর্তমান যে =সলজ্জ।
২। বহুব্রীহি সমাসে বিশেষণপদ ও সমাসামত্ম পদ প্রায়ই পূর্বে বসে। যেমন: ছিন্ন শাখা যার = ছিন্নশাখা,
পাপে মতি যার = পাপমতি।
৩। পরপদ ‘জায়া’ স্থানে ‘জানি’ হয়। যেমন: সুন্দরী জায়া যার = সুন্দরজানি।
৪। পরপদে ‘অক্ষি’ স্থানে ‘অক্ষ’ হয় এবং স্ত্রীলিঙ্গে ঊর্ণ-প্রত্যয় যুক্ত হয়। যেমন: পদ্মের ন্যায় অক্ষি যার = পদ্মাক্ষ, পদ্মাক্ষী (স্ত্রী লিঙ্গে)।
৫। বহুব্রীহি সমাসে পূর্বপদে ‘ঊণা’ স্থানে ‘ঊর্ণ’ এবং পরপদে ‘নাভি’ স্থানে ‘নাভ’ হয়। যেমন: ঊর্ণা নাভিতে যার = ঊর্ণনাভ; পদ্ম নাভিতে যার = পদ্মণাভ।
৬। বহুব্রীহি সমাসে ঈ-কারান্ত ও উ-কারান্ত স্ত্রীলিঙ্গ পদের উত্তর এবং এ-কারান্ত শব্দের উত্তর ‘ক’ হয়। যেমন: স্ত্রীর সাথে বর্তমান যে = সস্ত্রীক, নদী মাতা যে দেশের = নদীমাতৃক।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comment below if you have any questions