আইসোটোপ কাকে বলে
আইসোটোপ (isotope): একই মৌলিক পদার্থের সকল পরমাণুতে সাধারণত সমান সংখ্যক প্রোটন ও নিউট্রন থাকে। অর্থাৎ এদের ভরসংখ্যা সমান হয় । ভরসংখ্যা হল পরমাণুর প্রোটনসংখ্যা ও নিউট্রনসংখ্যার যোগফল; পরমাণুর প্রোটনসংখ্যাকে পারমাণবিক সংখ্যা বলে। যে সকল পরমাণুর প্রোটনসংখ্যা সমান, কিন্তু ভরসংখ্যা সমান নয় তাদের বলা হয় আইসোটোপ । | আইসোটোপগুলোর পারমাণবিক সংখ্যা সমান, কিন্তু পারমাণবিক ভর পৃথক হয়। নিউট্রনসংখ্যার পার্থক্যের কারণে পারমাণবিক ভরে পার্থক্য হয় । বিশেষ বিশেষ অবস্থায় কোনো কোনো মৌলিক পদার্থের বেলায় পরমাণুর ভরের এই পার্থক্য দেখা যায়। এ ধরনের একই মৌলিক পদার্থের পৃথক পারমাণবিক ভরবিশিষ্ট মাণু দিয়ে গঠিত পদার্থকে বলা হয় ঐ মৌলিক দার্থের আইসোটোপ। | যেমন কার্বন-১২ (5c12) এবং কার্বন-১৪ =c14) উভয়ই কার্বন । উভয়ের পারমাণবিক সংখ্যা ৬ অর্থাৎ এদের প্রত্যেকের পরমাণুতে ৬টি করে প্রোটন রয়েছে । কিন্তু কার্বন-১২-এর ভরসংখ্যা ১২ এবং কার্বন-১৪-এর ভরসংখ্যা ১৪। অর্থাৎ কার্বন-১২-এর নিউট্রনসংখ্যা ৬ এবং কার্বন-১৪-এর উইনসংখ্যা ৮। গ্রিক ভাষায় আইসো (iso) অর্থ সম’ এবং টোপ (tope) অর্থ স্থান’ বা ‘ঘর’। সুতরাং আইসোটোপ বলতে বোঝায় 'সমস্থানিক’ বা ‘সমঘর'। পর্যায় সারণিতে (periodic table) মৌলিক পদার্থের তালিকায় এদের স্থান একই ঘরে; তাই এদের রাসায়নিক ধর্ম প্রায় একই রকম। কোনো মৌলিক পদার্থের আইসোটোপের রাসায়নিক ধর্ম ঐ মৌলিক পদার্থেরই অনুরূপ। কিন্তু এদের ভৌত ধর্মে কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। কোনো কোনো মৌলিক পদার্থের একাধিক আইসোটোপ থাকতে পারে; যেমন হাইড্রোজেনের রয়েছে তিনটি আইসোটোপ- এরা ভিন্ন ভিন্ন নামে পরিচিত। এগুলো হল প্রোটিয়াম (ভরসংখ্যা ১), ডয়টেরিয়াম (ভরসংখ্যা ২) এবং ট্রিটিয়াম (ভরসংখ্যা ৩)। এ রকম অক্সিজেনেরও আছে তিনটি আইসোটোপ অক্সিজেন-১৬, অক্সিজেন-১৭ ও অক্সিজেন-১৮, এবং ইউরেনিয়ামেরও আছে তিনটি আইসোটোপ ইউরেনিয়াম-২৩৪, ইউরেনিয়াম-২৩৫ ও ইউরেনিয়াম-২৩৮। অনেক স্বাভাবিক মৌলিক পদার্থে তাদের বিভিন্ন আইসোটোপ মেশানো থাকে। যন্ত্রের সাহায্যে কৃত্রিম আইসোটোপ তৈরিও করা যায়। কোনো কোনো আইসোটোপ আবার তেজস্ক্রিয়। চিকিৎসাশাস্ত্রে তেজস্ক্রিয় আইসোটোপের বিভিন্ন প্রয়োগ রয়েছে ।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comment below if you have any questions