পদ মূল্যায়নের সুবিধা কি
পদ মূল্যায়নের সুবিধা সমূহ (Advantages of job evaluation):
পদ মূল্যায়ন একটি চলমান প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের প্রত্যেকটি কাজের আপেক্ষিক গুরুত্ব ও মূল্য নির্ধারণ করা যায়। কার্য বা পদ মূল্যায়নের মত ধারাবাহিক প্রবাহমান এ কাজের মাধ্যমে বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে সকল সুবিধা পাওয়া যায় সেগুলো নিম্নরুপঃ
কার্য বিশ্লেষণ (Job analysis): কার্য বা পদ মূল্যায়নের পূর্বের কাজ হলো কার্য বিশ্লেষণ করা। কার্য মূল্যায়নের মাধ্যমে প্রতিটি কাজের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা, সুবিধা-অসুবিধা ইত্যাদি অতি সহজে নির্ণয় করা যায়। এছাড়া প্রতিটি স্তরের কাজকে তুলনামূলক ভাবে বিশ্লেষণ করা সহজ হয়।
তথ্যাবলির বহুবিধ ব্যবহার (Various use of Information): প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি স্তরের কাজকে তুলনামূলক ভাবে মূল্যায়ন করার জন্য বিভিন্ন ধরনের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এসব তথ্য প্রতিষ্ঠানের কার্য ছাড়াও অন্যান্য কাজ যেমন-কর্মী সংগ্রহ ও নির্বাচন, কর্মী প্রশিক্ষণ, উপযুক্ত কার্য পরিবেশ সৃষ্টি, উৎসাহমূলক মজুরি প্রদান ইত্যাদি কাজেও ব্যবহার করা যায়।
শিল্প সম্পর্ক উন্নয়ন (Development of Labour Relation): উন্নত শিল্প সম্পর্ক প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। শিল্প সম্পর্ক বলতে মালিক-শ্রমিক বা শ্রমিক-মালিক সম্পর্ককে বুঝায়। কর্ম বিশ্লেষণের মাধ্যমে কর্মীদের যোগ্যতা ও চাহিদা অনুযায়ী মজুরি ও অন্যান্য সুবিধা সঠিকভাবে নির্ধারণ করা যায়। তাই এতে উন্নত শিল্প সম্পর্ক গড়ে উঠে।
তুলনামূলক কর্মসূচি (Comparative Program): একটি প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন বিভাগ থাকে আবার প্রতিটি বিভাগের কাজ ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। তাই নিজ প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন বিভাগের ভিন্ন ভিন্ন কাজ অথবা সমগোত্রীয় প্রতিষ্ঠানের কাজের সাথে তুলনা করতে কার্য মূল্যায়ন বিশেষ ভূমিকা রাখে।
মজুরি সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি (Settlement of Disputes Related to wages): কর্মী কাজ করে মূলত অর্থের জন্য। আর এ অর্থ পরিশোধ করা হয় মজুরি প্রদানের মাধ্যমে। কার্য মূল্যায়নের মাধ্যমে কর্মীদের মধ্যে মজুরি সংক্রান্ত কোন বিরোধ দেখা দিলে তা অতি সহজে নিষ্পত্তি করা যায়।
মজুরি হার উন্নয়ন (To Develop of wage Rate): প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনে বিভিন্ন কারণে কর্মীর পদ পরিবর্তন বা দায়িত্ব ও কর্তব্য পরিবর্তন করা হয়। এজন্য পারিশ্রমিক বা মজুরি প্রদানের হার কম বেশী হয়ে থাকে। কার্য মূল্যায়নের মাধ্যমে মজুরি হার সঠিক নির্ধারণ করা যায়। আরো যে সকল সুবিধা পাওয়া যায় সেগুলো হলোঃ
১. পদ মূল্যায়নের মাধ্যমে শ্রমিক কর্মীদের কর্মস্পৃহা বৃদ্ধি করা যায়।
২. সঠিক পদে উপযুক্ত ব্যক্তি নিয়োগের দ্বারা কর্মীদের জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন করা যায়।
৩. পদ বা কার্য মূল্যায়ন দ্বারা কর্মীর দক্ষতা, যোগ্যতা ও অন্যান্য জ্ঞান ভাল ভাবে যাচাই করা যায় বলে কর্মী নিয়োগের কাজটি সহজে করা যায়।
৪. পদ মূল্যায়ন কমিটি কর্মীর গোত্র বা রাজনৈতিক দর্শন বিবেচনা না করে শুধুমাত্র পদকে মূল্যায়িত করে ফলে নির্দিষ্ট পদের জন্য অধিক যোগ্য ব্যক্তি নির্বাচন করা যায়।
৫. প্রতিষ্ঠানের সামগ্রীক উদ্দেশ্যের সহজ বাস্তবায়ন করা যায়।
৬. কর্মীদের সহজে তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comment below if you have any questions