মানবাধিকার কাকে বলে / মানবাধিকার কি
অধিকারবোধ থেকে মানবাধিকারের উৎপত্তি হয়েছে। মানবাধিকার বলতে সেসব আইনগত ও নৈতিক অধিকারকে বোঝায়, যা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এবং সমগ্র বিশ্বের মানুষের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। অর্থাৎ মানবাধিকার আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত অধিকার। প্রতিটি মানুষ এ অধিকার নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। ১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ কর্তৃক মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্র গৃহীত হয়। এই ঐতিহাসিক দলিল গ্রহণের মধ্য দিয়ে বিশ্বে এক নতুন দিগন্তের সূচনা ঘটে।
জাতিসংঘ কর্তৃক গৃহীত ঘোষণাপত্রে মানবাধিকার সংক্রান্ত কতগুলো সাধারণ নীতি রয়েছে। যেমন—
১. সকল মানুষ সমান মর্যাদা ও অধিকার নিয়ে জন্মগ্রহণ করে।
২. সকল মানুষ যেকোন প্রকার পার্থক্য, যথা- জাতি, গোত্র, বর্ণ, লিঙ্গ, ভাষা, ধর্ম, মতাদর্শ, জাতীয় ও সামাজিক পরিচিতি, সম্পত্তি, জন্ম বা অন্য কোন মর্যাদা নির্বিশেষে ঘোষণায় উল্লেখিত সকল অধিকার ও স্বাধীনতা ভোগের অধিকারী।
৩. মানবাধিকার সমগ্র বিশ্বের সর্বস্থানে সর্বকালের সকল মানুষের প্রাপ্য।
৪. বিশ্বের যেকোন রাষ্ট্রের নাগরিককে তাঁর দেশের বা আন্তর্জাতিক মর্যাদার ভিত্তিতে কোন পার্থক্য করা হবে না। উপরিউক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায়, মানবাধিকারের পরিধি ব্যাপক ও বিস্তৃত। মানবাধিকারের ধারণা, নীতি ও পরিধি পর্যালোচনা করলে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে- প্রথমত, মানবাধিকার এমন কিছু অধিকার যা সকল মানুষের জন্য প্রযোজ্য। দ্বিতীয়ত, মানবাধিকার সকলের অধিকার, কোন শ্রেণি বা দলের নয়। তৃতীয়ত, মানবাধিকার সকল মানুষের জন্য সমভাবে প্রাপ্য; কারো জন্য কম বা বেশি নয়। চতুর্থত, মানবাধিকার কোন বিশেষ মর্যাদা বা সম্পদের উপর নির্ভরশীল নয়। পঞ্চমত, মানবাধিকার হল এমন অধিকার যা আদায়যোগ্য। ষষ্ঠত, মানবাধিকার সমগ্র বিশ্বের সর্বস্থানে, সর্বকালের সকল মানুষের প্রাপ্য। সপ্তমত, মানবাধিকার কেউ কাউকে দেয় না এবং এটি প্রাপ্তি কারো কৃপার উপর নির্ভরশীল নয়। সংক্ষেপে মানবাধিকার হল জাতিসংঘ কর্তৃক ঘোষিত বা স্বীকৃত এমন কতগুলো অধিকার যা জাতি-ধর্ম-বর্ণ-লিঙ্গ নির্বিশেষে সমভাবে ভোগ করা যায়।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comment below if you have any questions