Home » » আইন সভা কি

আইন সভা কি

আইন সভা কি / আইনসভা কি

আইনসভা

সরকারের যে বিভাগ আইন প্রণয়ন, পরিবর্তন ও সংশোধন করে তাকে আইন বিভাগ বলে। 

গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় বিশেষ করে সংসদীয় গণতন্ত্রে আইন বিভাগের গুরুত্ব অপরিসীম। আইন বিভাগ কর্তৃক প্রণীত আইনের মাধ্যমে একটি দেশের শাসনকার্য পরিচালিত হয়। আইনসভার সদস্যগণ হলেন জনসাধারণ কর্তৃক প্রত্যক্ষভাবে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। 

অধ্যাপক জে ডব্লিউ গার্নার (J.W. Garner) বলেন, “সরকারের যে সকল বিভাগের মাধ্যমে রাষ্ট্রের ইচ্ছা প্রকাশিত ও কার্যকরী হয় তন্মধ্যে নিঃসন্দেহে আইন বিভাগের স্থান সর্বোচ্চ।” 

ইংল্যান্ডের সংবিধান বিশেষজ্ঞ ওয়াল্টার বেইজট আইনসভা সম্পর্কে বলেন, “এটা হল জনপ্রিয় প্রতিষ্ঠানের মহান চালিকা শক্তি, যেখানে সকল সমস্যার সমাধান হয় এবং সর্বক্ষেত্রে জনগণের প্রাধান্য থাকে।” 

আইনসভায় জনমতের যেমন প্রতিফলন হয় তেমনি জনগণের আশা-আকাঙ্খও নির্বাচিত প্রতিনিধিরা তুলে ধরেন। সরকারের সকল কাজে আইনসভার অনুমোদন প্রয়োজন হয়। আইনসভার অনুমোদন ছাড়া সরকার আর্থিক কাজ সম্পন্ন করতে পারে না। আইন বিভাগ শাসন বিভাগকে সংগঠন করে, সংসদীয় গণতন্ত্রে মন্ত্রিসভা গঠন করে এবং মন্ত্রিসভাকে পদচ্যুতও করে থাকে। আইনসভা দেশের সংবিধান প্রণয়ন ও তা বাতিল বা সংশোধন করতে পারে। সুতরাং আইনসভার মর্যাদা ও গুরুত্ব সীমাহীন।


আইনসভার উদ্ভব ও ক্রমবিকাশ 

বর্তমানে প্রত্যেকটি দেশে সরকারের অন্যতম একটি বিভাগ হচ্ছে আইনসভা। আইন প্রণয়ণে আইনসভা কার্যকরি ভূমিকা পালন করে। কিন্তু প্রাচীনকালে সরকারের এ আইনসভার কোন অস্তিত্ব ছিল না। তখন রাজতন্ত্রের রাজা কিংবা অভিজাততন্ত্রের অভিজাত ব্যক্তিবর্গই আইন প্রণয়ন ও কার্যকর করতেন। প্রাচীন গ্রীক নগররাষ্ট্রগুলির মধ্যে বিশেষ করে এথেন্সে রাষ্ট্র পরিচালনা প্রধান হিসেবে কাজ করত এসেম্বলি। এই এসেম্বলি কিছু মাত্রাতে আজকের দিনের আইনসভা হিসেবে কাজ করত। তবে আধুনিক আইনসভা জনসাধারণের ভোটে নির্বাচিতদের দ্বারা গঠিত হয়। 

পক্ষান্তরে, এ্যাসেম্বলির জন্য নির্বাচনের কোন বিধান ছিল না। প্রাচীন জার্মানীর টিউটিনদের (Teutons) শাসন ব্যবস্থার মধ্যে কিছুটা প্রতিনিধিত্বমূলক ব্যবস্থা লক্ষ্য করা যায়। ব্রিটিশ পার্লামেন্টকে বলা হয় আইনসভার জননী। অধ্যাপক মুনরো (Professor Munro) বলেন, "The British Parliament is the mother of all Parliaments.” শুরুর দিকে এই আইনসভাও সাধারণ নাগরিকদের জন্য উন্মুক্ত ছিল না। ১৬৮৮ সালে গৌরবময় বিপ্লবের পরে ইংল্যান্ডে একচ্ছত্র রাজতন্ত্রের অবসান হয়ে নিয়মতান্ত্রিক রাজতন্ত্র চালু হয়। তখন থেকেই ইংল্যান্ডের আইনসভা তথা পার্লামেন্ট জনপ্রতিনিধিত্বমূলক হতে শুরু করে।

0 comments:

Post a Comment

Comment below if you have any questions

Contact form

Name

Email *

Message *