বুয়াইয়া কারা
আব্বাসী শাসনামলে যে সকল আঞ্চলিক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজবংশের শাসন সূচনা হয়, সে গুলোর মধ্যে বুয়াইয়া বংশ অন্যতম। এই বংশটি ছিল শিয়া মতাবলম্বী এবং আব্বাসীয় খিলাফতে এই বংশের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক প্রভাব লক্ষ করা যায়।
বুয়াইয়াদের উত্থান
উৎপত্তি :
আবু সুযা বুয়াইয়া ছিলেন এই বংশের একজন শক্তিশালী নেতা, যার নেতৃত্বে বুয়াইয়ারা প্রভাবশালী হয়ে ওঠে। তারা কাস্পিয়ান সাগরের দক্ষিণ উপকূলে তাবারিস্তান ও গীলানের মধ্যবর্তী ভূ-ভাগ দাইলাম নামক স্থানে বসবাস করতেন। এই অঞ্চলে তখন সামানী বংশের শাসন কার্যকরী ছিল, এবং আবু সুযা বুখারার সামানীয় বংশের অধীনে চাকরি করতেন। আলী হাসান ও আহমদ নামক আবু সুর ৩ পুত্র ছিল। এই বংশটি ক্রমেই শক্তিশালী হয়ে ওঠে।
নামকরণ ও প্রতিষ্ঠা :
সিরায হতে দাইলামী শাসকগণ ইরাক, ওয়াসিত দখল করে রাজদানী বাগদাদের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। বাগদাদে এই সময় আব্বাসীয় খলীফা ছিলেন মুস্তাকফী (৯৪৪-৪৬খ্রি:)। বাগদাদে এই সময় তুর্কি দেহরক্ষী বাহিনীর আধিপত্য বেড়ে যায়। খলীফা তুর্কি বাহিনীর হাতের পুতুলে পরিণত হন। সকল ক্ষমতা তুর্কিদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হতো। এই সময় বুয়াইয়ারা আহমদ এর নেতৃত্বে বাগদাদ উপকণ্ঠে হাজির হন এবং খলীফা আহমদ এর নিকট সাহায্য প্রার্থনা করেন। আহমদ খলীফার আহবানে সাড়া দিয়ে বাগদাদে প্রবেশ করেন। তুর্কি আল-আমির-উল-উমারা ও তুর্কি বাহিনী রাজধানী হতে পলায়ন করেন। আহমদ বাগদাদে খলীফাকে তার সিংহাসনে পুন:প্রতিষ্ঠিত করেন। খলীফা তাঁর উপর সন্তুষ্ট হয়ে তাকে আমীর-উল-উমারা হিসেবে নিযুক্ত করেন এবং মুইয-উদ-দৌলাহ উপাধিতে ভূষিত করেন। এইভাবে মুইয-উদ-দৌলা বাগদাদে যে বংশ প্রতিষ্ঠা করেন তা তাঁর পিতার নামানুসারে নাম রাখেন বুয়াইয়া বংশ।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comment below if you have any questions