বাক্য ও যুক্তিবাক্যের মধ্যে পার্থক্য
বাক্য ও যুক্তিবাক্যের সংজ্ঞা, প্রকৃতি ও উদাহরণ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে এদের মধ্যে বেশ কিছু পার্থক্য রয়েছে ।
বাক্য ও যুক্তিবাক্যের মধ্যে পার্থক্য গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্যগুলো নিচে তুলে ধরা হলো:
ক. বাক্যের একক হলো শব্দ । আর যুক্তিবাক্যের একক হলো পদ।
খ. বাক্যে মোট দুটি অংশ থাকে; উদ্দেশ্য ও বিধেয় । কিন্তু যুক্তিবাক্যের চারটি অংশ থাকে; যথা- উদ্দেশ্য, বিধেয়, সংযোজন ও পরিমাণ।
গ. একটি সার্থক বাক্যের তিনটি গুণ থাকতে হয়; যথা- আকাঙ্খ, আসক্তি ও যোগ্যতা। একটি যুক্তিবাক্যের আবশ্যিক গুণ হলো সত্য বা মিথ্যা হওয়ার যোগ্যতা।
ঘ. বাক্যে গুণ ও পরিমাণ স্পষ্টভাবে প্রকাশিত হয় না। যুক্তিবাক্যে গুণ ও পরিমাণ স্পষ্টভাবে প্রকাশিত হয়। যেমন: মানুষ মরণশীল' বাক্যের যুক্তিসম্মত আকার হলো সকল মানুষ হয় মরণশীল'।
ঙ. ব্যাকরণসম্মত বাক্যে সংযোজকটি সকল সময় উল্লিখিত হবে এমন কোনো কথা নেই। কিন্তু যুক্তিবাক্যে সংযোজকটি অনিবার্যরূপে চিহ্নিত হতে হয়।
চ. ব্যাকরণে বাক্য পাঁচ রকমের হয়; কিন্তু বিবৃতিমূলক বাক্যই কেবল যুক্তিবাক্য বলে স্বীকৃত। অন্যান্য বাক্যগুলোকে যুক্তিবাক্যের কাঠামো অনুসারে রূপান্তর করলেই কেবল তাদেরকে যুক্তিবাক্য বলা যায় ।
ছ. একই বাক্য ভিন্ন ব্যক্তির দ্বারা কিংবা একই ব্যক্তির দ্বারা ভিন্ন ভিন্ন সময়ে পৃথকভাবে ব্যবহৃত হতে পারে । কিন্তু যুক্তিবাক্যের অর্থ সকল ক্ষেত্রে একই হবে।
যুক্তিবাক্য ব্যাকরণসম্মত বাক্য হলেও সকল ব্যাকরণগত বাক্য যুক্তিবাক্য নয়। কোনো বিষয় সম্পর্কে সাধারণভাবে কিছু বর্ণনা করতে গেলে, কোনো প্রশ্ন করতে গেলে, কোনো আদেশ বা অনুরোধ করতে হলে অথবা বিস্ময় প্রকাশ করতে হলে আমরা তা ভাষায় বাক্যের মাধ্যমে প্রকাশ করি। এর মধ্যে শুধুমাত্র বর্ণনামূলক বাক্যই যুক্তিবাক্য হতে পারে । প্রশ্নবোধক, অনুজ্ঞামূলক, বিস্ময়সূচক ইত্যাদি বাক্যসমূহ যুক্তিবাক্য নয়। তাই বলা হয় যে, সকল যুক্তিবাক্যই বাক্য কিন্তু সকল বাক্য যুক্তিবাক্য নয়।'
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comment below if you have any questions