Home » » হিটলারের রাশিয়া অভিযান

হিটলারের রাশিয়া অভিযান

হিটলারের রাশিয়া অভিযান

রাশিয়া অভিমুখে জার্মান বাহিনী

দুই রণাঙ্গনে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার দুর্বল দিকগুলো বুঝতে পেরে জার্মানরা ১৯৩৯ সালের আগস্টে রাশিয়ার সাথে একটা ১০ বছর মেয়াদি চুক্তি করে। এক্ষেত্রে অন্য রাষ্ট্রের ভূমি জবরদখল থেকে শুরু করে আনুষঙ্গিক আরো নানা কারণ নিয়ে চুক্তি হয় রুশ-জার্মান বাহিনীর মধ্যে। তাদের সমঝোতা অনুযায়ীই ১৯৩৯ সালের দিকে রুশরা আক্রমণ করে দখল করে নেয় পোল্যান্ড । এই বছরের ১ সেপ্টেম্বর হিটলার পোল্যান্ড দখল করলে তাঁর বিরুদ্ধে একইসাথে যুদ্ধ ঘোষণা করে ব্রিটেন ও ফ্রান্স। ১৯৪১ থেকে শুরু হওয়া পূর্ব রণাঙ্গনের ভয়াবহ লড়াইয়ে রুশরা একইসাথে সামরিক ও অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে নিজেদের শক্ত অবস্থান জানান দেয় যা নিঃসন্দেহে নাৎসি জার্মানির মাথাব্যথার হেতুতে পরিণত হয়। তাদের দমন করতে এবার সরাসরি রাশিয়া আক্রমণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন হিটলার। নির্দেশ পাওয়ামাত্র ১৯৪১ সালের ২২ জুন ভোরে ৪০ লাখের মত জার্মান, ইতালীয় ও রুমানিয়ার সৈন্য রাশিয়ায় প্রবেশ করে। এক্ষেত্রেও জার্মান পাঞ্জার ডিভিশন তাদের অপ্রতিরোধ্য ইমেজ ধরে রাখতে সক্ষম হয়। তারা তিনদিক থেকে সাঁড়াশি আক্রমণ করে রুশদের একেবারে বন্দি করে ফেলে। এভাবে একমাস ধরে লড়াই করে জার্মান সৈন্যরা অপ্রতিরোধ্যভাবে লেনিনগ্রাদের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। তবে প্রচণ্ড বৃষ্টিপাত, তুষারঝড় এবং শীতল আবহাওয়ার কারণে শেষ পর্যন্ত জার্মান বাহিনীর এই অগ্রযাত্রা টিকে থাকেনি। আর ঐতিহাসিক সত্য হিসেবে রুশ প্রকৃতি এবারেও তাদের প্রধান প্রতিরক্ষা হিসেবে কাজ করে।


অবরুদ্ধ লেনিনগ্রাদ

জার্মান পাঞ্জার ডিভিশনের অপ্রতিরোধ্য আক্রমণের মুখে নেহাত ঠুনকো মনে হয় রুশ বাহিনীকে। প্রকৃতি তাদের সহায় না হলে শেষ পর্যন্ত জার্মান বাহিনী তাদের একেবারে কচুকাটা করে ছাড়তো। তবে তাদের চৌকস নৈপুণ্যে সব ধরনের সমস্যা উত্তরণ করে জার্মানরা। বলতে গেলে ১৯৪১ সালে ৮ সেপ্টেম্বর থেকে ১৯৪৪ সালের ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রায় ৯০০ দিন অবরুদ্ধ ছিল এ অঞ্চল । দীর্ঘদিনের অবরোধে প্রাণ যায় প্রায় ৬ লাখ ৩২ হাজার মানুষের। ১৯৪১ সালের বড়দিনে সেখানে অনাহারেই মারা যায় ৪০০০-এর বেশি মানুষ। এই লেনিনগ্রাদ অবরোধ ছিল রাশিয়ায় জার্মানির সর্বাত্মক অভিযানের অংশ। প্রায় ৪০ লাখ সৈন্য নিয়ে বিশাল এ ফ্রন্টে লড়াই শুরু করে শুধুমাত্র জ্বালানি সংকটের কারণে মস্কো অধিকার করতে পারেনি জার্মানরা। রাশিয়ার ভূখণ্ড জার্মান ট্যাংক চলার উপযোগী না হলেও সেখানে তাদের বিজয় নিশ্চিত ছিল। কিন্তু


স্ট্যালিনগ্রাড অবরোধ

৪০ লক্ষ জার্মান বাহিনীর আক্রমণ প্রতিরোধে প্রায় ৩০ লক্ষের মত রুশ সৈন্য বিভিন্ন ফ্রন্টে অবস্থান গ্রহণ করে। তারা প্রথম দিকে ভালো রকম মার খেলেও শেষ পর্যন্ত প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তোলে জার্মানদের বিরুদ্ধে। বিশেষ করে বিরুদ্ধ রাশিয়ার প্রকৃতি যেখানে জার্মানির জন্য বড় বিপদের কারণ সেখানে রুশ বাহিনী নতুন করে সক্রিয় হয়। তাই বেশিরভাগ ইতিহাসবিদ মনে করেন স্ট্যালিনগ্রাড অবরোধ হিটলারের অনেকগুলো ভয়ানক ভুলের একটি। আর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিজেই নিজের ভয়াবহ পরাজয় ডেকে এনেছিলেন জার্মান নেতা হিটলার। জার্মান বাহিনী একাধারে পশ্চিম রণাঙ্গনে ইউরোপের লড়ছিল অন্যদিকে পূর্ব রণাঙ্গনের লড়াইও থেমে ছিলো না। এ অবস্থায় স্ট্যালিনগ্রাড অবরোধের সিদ্ধান্ত হিটলারের জন্য নিঃসন্দেহে হঠকারী হয়ে দেখা দেয়। অন্তত একসাথে এতোগুলো ফ্রন্টে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার মত ক্ষমতা তখন জার্মান বাহিনীর ছিল না।

জার্মান পাঞ্জার ডিভিশন নিঃসন্দেহে দ্রুত আক্রমণ করে যেকোনো অঞ্চলে দখলে নিয়ে ত্রাস সৃষ্টি করতে পারত। তবে রাশিয়ার বিরুদ্ধ শীতল প্রকৃতিতে টিকে থাকার ক্ষমতা বিশ্বের কোনো বাহিনীরই ছিল না। তা জার্মান বাহিনীর স্ট্যালিনগ্রাড অবরোধের ব্যর্থতায় আরেকবার প্রমাণ হয়ে যায়। স্ট্যালিনগ্রাডে প্রায় ২০০ দিনের অবরোধ চলে প্রথমে জার্মানরা সেখানে অবরোধ করলেও শেষ পর্যন্ত রাশিয়া সেখানে আরো শক্তিশালী অবরোধ গড়ে তোলে। আক্রমণের ভয়াবহতা আঁচ করে সেখানে আক্রমণের দায়িত্বে থাকা পাউলাসকে ফিল্ড মার্শাল পদে উন্নীত করেন হিটলার। এর আগে কোনো জার্মান ফিল্ড মার্শাল যুদ্ধ ক্ষেত্রে আত্মসমর্পণ করেননি। তবে পাউলাস তার বিধ্বস্ত হেডকোয়ার্টার্সের কাছে হাত তুলে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হন। ১৯৪৩ সালের ২ জানুয়ারি প্রায় ৯১ হাজার জার্মান সৈন্য আত্মসমর্পণে বাধ্য হয়। এ যুদ্ধের অবরোধকালে মারা যায় লক্ষাধিক জার্মান, তাদের সাথে ছিল প্রায় ৮৭ হাজার ইতালীয় ও লক্ষাধিক রুমানিয়ার সেনা। তবে স্ট্যালিনগ্রাডে রুশ অবরোধের সময় মারা যায় আরো লাখ তিনেক জার্মান সৈন্য। দুর্ধর্ষ ষষ্ঠ জার্মান পাঞ্জার ডিভিশনকে উদ্ধার করতে গিয়েও শেষ পর্যন্ত মৃত্যুমুখে পতিত হয় আরো কয়েক হাজার জার্মান সৈন্য। বলতে গেলে স্ট্যালিনগ্রাড অভিযান এক রক্তগঙ্গা বইয়ে দেয় যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ ঘটনা।

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comment below if you have any questions

অফিস/বেসিক কম্পিউটার কোর্স

এম.এস. ওয়ার্ড
এম.এস. এক্সেল
এম.এস. পাওয়ার পয়েন্ট
বাংলা টাইপিং, ইংরেজি টাইপিং
ই-মেইল ও ইন্টারনেট

মেয়াদ: ২ মাস (সপ্তাহে ৪দিন)
রবি+সোম+মঙ্গল+বুধবার

কোর্স ফি: ৪,০০০/-

গ্রাফিক ডিজাইন কোর্স

এডোব ফটোশপ
এডোব ইলাস্ট্রেটর

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৮,৫০০/-

ওয়েব ডিজাইন কোর্স

এইচটিএমএল ৫
সিএসএস ৩

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৮,৫০০/-

ভিডিও এডিটিং কোর্স

এডোব প্রিমিয়ার প্রো

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৯,৫০০/-

ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স

ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম, এসইও, গুগল এডস, ইমেইল মার্কেটিং

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ১২,৫০০/-

অ্যাডভান্সড এক্সেল

ভি-লুকআপ, এইচ-লুকআপ, অ্যাডভান্সড ফাংশনসহ অনেক কিছু...

মেয়াদ: ২ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৬,৫০০/-

ক্লাস টাইম

সকাল থেকে দুপুর

১ম ব্যাচ: সকাল ০৮:০০-০৯:৩০

২য় ব্যাচ: সকাল ০৯:৩০-১১:০০

৩য় ব্যাচ: সকাল ১১:০০-১২:৩০

৪র্থ ব্যাচ: দুপুর ১২:৩০-০২:০০

বিকাল থেকে রাত

৫ম ব্যাচ: বিকাল ০৪:০০-০৫:৩০

৬ষ্ঠ ব্যাচ: বিকাল ০৫:৩০-০৭:০০

৭ম ব্যাচ: সন্ধ্যা ০৭:০০-০৮:৩০

৮ম ব্যাচ: রাত ০৮:৩০-১০:০০

যোগাযোগ:

আলআমিন কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র

৭৯৬, পশ্চিম কাজীপাড়া বাসস্ট্যান্ড,

[মেট্রোরেলের ২৮৮ নং পিলারের পশ্চিম পাশে]

কাজীপাড়া, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬

মোবাইল: 01785 474 006

ইমেইল: alamincomputer1216@gmail.com

ফেসবুক: facebook.com/ac01785474006

ব্লগ: alamincomputertc.blogspot.com

Contact form

নাম

ইমেল *

বার্তা *