জেলা পরিষদ
দেশে সুশাসন ও গণতান্ত্রিক কাঠামোকে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে একটি শক্তিশালী স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন জরুরি। এ জন্য দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় জেলা পরিষদের গুরুত্ব নিয়ে তত্ত্বগত জগতে নানা ধরনের কথাবার্তা হয়ে আসছে। জেলা পরিষদ এ দেশের তিনস্তর বিশিষ্ট স্থানীয় সরকার কাঠামোর সর্বোচ্চ স্তর। ১৮৮৫ সালের বেঙ্গল লোকাল সেলফ গভর্মেন্ট এ্যাক্টের মাধ্যমে যে জেলা বোর্ড গঠন করা হয়েছিল তারই পরিবর্তিত ও পরিবর্ধিত রূপ আজকের এই জেলা পরিষদ। একটি জেলার সকল ধরনের উন্নয়নমূলক কাজের জন্য জেলা পরিষদ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। ২০০০ সালে জেলা পরিষদ এ্যাক্ট প্রণয়ন করা হয় এবং ২০১৬ সালে এই আইনের কিছু সংশোধনী করা হয়। এই সংশোধিত আইনানুসারেই জেলা পরিষদ পরিচালিত হচ্ছে। এই আইনে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং কোন সদস্যের বিরুদ্ধে যদি কোন ফৌজদারী অভিযোগ বাংলাদেশের কোন আদালত গ্রহণ করে তাহলে তাকে সরকার কর্তৃক অপসারণের বিধান সৃষ্টি করা হয়েছে। স্বাধীনতার ৪৫ বছর পরে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে প্রথমবারের মত এই স্থানীয় সরকারের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। একটি ইলেক্টোরাল কলেজের মাধ্যমে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ২১ জন সদস্যকে নির্বাচিত করা হয়। একটি জেলার অন্তর্গত সকল সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের সকল নির্বাচিত প্রতিনিধিরা এই ইলেক্টোরাল কলেজের ভোটার। আইনানুসারে প্রতি পাঁচ বছর পর পর জেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। একটি জেলার অন্তর্গত স্থানীয় সরকারের সকল কর্মকান্ডের মধ্যে সমন্বয় সাধন জেলা পরিষদের অন্যতম কাজ। এছাড়াও রাস্তা-ঘাট থেকে শুরু করে প্রায় সকল ধরনের অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজের দায়িত্ব পালন করে জেলা পরিষদ।
চেয়ারম্যান জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী ক্ষমতার অধিকারী। জেলা পরিষদ তার কাজের সুবিধার্থে আইন-শৃঙ্খলা, স্বাস্থ্য, কৃষি, শিক্ষা, সমাজকল্যাণ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, যোগাযোগ ও অবকাঠামোর মত বিষয়ের উপর একটি করে স্ট্যান্ডিং কমিটি করে থাকে । জেলা পরিষদের সদস্যের একজন একটি স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করে থাকে ।
জেলা পরিষদের কার্যাবলি:
জেলা পরিষদ অবশ্য করণীয় এবং ঐচ্ছিক এই দুই ধরনের কাজ করে থাকে ।
অবশ্য করণীয় কাজ
জেলা পরিষদের অবশ্যকরণীয় কাজগুলো নিম্নরূপ :
- জেলার সকল উন্নয়নমূলক কাজের পর্যালোচনা করা।
- উপজেলা পরিষদ ও সকল নগর সরকার কর্তৃক গৃহীত সকল উন্নয়ন কার্যক্রমের সমন্বয় সাধন ও পরীক্ষণ এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা ।
- সাধারণ লাইব্রেরীর রক্ষণাবেক্ষণ।
- জেলার অন্তর্গত যে সকল পানি পথ, কালভার্ট ও সেতু ইত্যাদি উপজেলা পরিষদ, নগর সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকার দ্বারা গঠিত, রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়ন করা হয় না সেগুলোর গঠন, রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়ন করা।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comment below if you have any questions