উপভাষা কাকে বলে
উপভাষা বা আঞ্চলিক ভাষা
সাধারণভাবে উপভাষা বা আঞ্চলিক ভাষা বলতে বোঝানো হয় দেশের বিভিন্ন ক্ষুদ্র অঞ্চলে ব্যবহৃত ভাষাকে। ‘উপভাষা' শব্দটি গ্রীক ‘ডায়ালেক্ট শব্দের ইংরেজি থেকে অনুবাদ। ফারগুসন ( ১৯৬০ ) উপভাষার সংজ্ঞা দিয়েছেন এভাবে, “উপভাষা হচ্ছে কোন ভাষার এক বা একাধিক বৈচিত্র্যের গুচ্ছ, যেগুলোতে বিদ্যমান থাকে একটি বা একগুচ্ছ সাধারণ বৈশিষ্ট্য, যা তাদের স্বতন্ত্র্য করে দেয় ভাষার অন্যান্য বৈচিত্র্য থেকে এবং এই বৈশিষ্ট্যগুলোকে ভাষিক বা অভাষিক ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যায় একক রূপে।”
অর্থাৎ উপভাষা বা আঞ্চলিক ভাষা হচ্ছে কোন ব্যাপক ভাষা অঞ্চলে ব্যবহৃত ভাষা, যেগুলোর মধ্যে বিদ্যমান থাকে নানা পার্থক্য, কিন্তু তা পরস্পর বোধগম্য।
উপভাষার/আঞ্চলিক ভাষার উদাহরণ:
“সইত্য কথা ক তো, মনো, তোর প্রাণডা পেরথম ঝটকাতেই ব্যায়রাইয়া গেছিল? কষ্ট পাস নাই তো? নাকি লড়ছিলি? অইন্তত একঘান কোপ ও মারছিলি সে সুম্বুদ্ধির ভাইডার মাথায়? তোরে আমরা অনেক বিছরাইয়াছিলাম, বিশ্বাস কর, মনো, খোঁজার আর কিছু বাকি রাখি নাই।” (জল জঙ্গল আকাশ, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়)
উপভাষার / আঞ্চলিক ভাষার বৈশিষ্ট্য
১. আক্ষরিক ও সামাজিক অর্থে ‘উপভাষা' বা আঞ্চলিক ভাষা শব্দটি ভাষার চেয়ে একটু নিম্ন, কিছুটা কম মর্যাদা সম্পন্ন ভাষাকে নির্দেশ করে।
২. অনেকের কাছে উপভাষা হচ্ছে বিকৃত ভাষা, আবার অনেকের কাছে তা অনুন্নত ভাষার নামান্তর। এ ধারণাগুলোর কোনটিই সত্য নয়। একথা সত্য যে উপভাষার প্রতি বিশ্ববাসী খুব শ্রদ্ধাশীল নয়। তবে এরও রয়েছে ব্যতিক্রম, রোমান্টিকেরা মুগ্ধ হয়েছিলেন উপভাষার শোভা সৌন্দর্য্যে, অনেকে কবিতায় ধারণ করেছেন ঔপভাষিক সৌন্দর্য্য মাধুর্য ।
৩. উপভাষা শব্দটি শুধু আঞ্চলিক ভাষিক বৈচিত্র্যের প্রতিই নির্দেশ করে না, বরং বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার ভাষার প্রতিও নির্দেশ করে। যেমন- উকিলের উপভাষা, চোরের উপভাষা, মুদির উপভাষা, আমলার উপভাষা।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comment below if you have any questions