Home » » ব্যক্তিত্ব কাকে বলে?

ব্যক্তিত্ব কাকে বলে?

ব্যক্তিত্ব কাকে বলে?

‘ব্যক্তিত্ব' পদবাচ্যটির সংজ্ঞা দেওয়া খুব সহজ নয়। ব্যক্তিত্ব মানুষের কতিপয় অন্তর্নিহিত ও বাহ্যিক উপাদানের সমাহারে সৃষ্ট । মানুষ মাত্রই ব্যক্তিত্ব রয়েছে। যেখানে রয়েছে ব্যক্তির অস্তিত্ব, সেখানে ছায়ার মত বিদ্যমান ব্যক্তিত্ব। ব্যক্তির মধ্যেই ব্যক্তিত্বের অবস্থান। ‘ব্যক্তিত্ব' শব্দটি নিরপেক্ষ। কারও ব্যক্তিত্ব যেমন মনমোহিনী হতে পারে, ঠিক তেমনি কারো কারো ব্যক্তিত্ব ঘৃনাব্যঞ্জকও হতে পারে। একজন ব্যক্তি যথেষ্ট ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন, আরেকজন ব্যক্তিত্বহীন এর মানে হলো প্রথম ব্যক্তির মধ্যে এমন কিছু গুন রয়েছে যা তাকে অন্যদের নিকট মার্জিত ও গ্রহণযোগ্যরূপে প্রকাশ করছে। আর দ্বিতীয় ব্যক্তির মধ্যে সেসব গুন নেই বলে তার মধ্যে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিত্ব গড়ে উঠতে পারেনি। ‘ব্যক্তিত্বহীন' কথাটি ব্যবহার করা হলেও আসলে লোকটির ব্যক্তিত্ব ঠিকই আছে কিন্তু তার সেই ব্যক্তিত্ব সমাজে গ্রহণযোগ্য নয়।

ব্যক্তিত্ব কী?

What is Personality?

উপরের আলোচনা থেকে ‘ব্যক্তিত্ব' সম্পর্কে একটি সাধারণ ধারণা আমরা পেয়েছি। আভিধানিক সংজ্ঞা অনুসারে: “Personality is what constitutes a person.” ব্যক্তি যে পেশারই হোক তার মধ্যে ব্যক্তিত্বের অবস্থিতি বিদ্যমান। ব্যক্তিত্ব হলো ব্যক্তির সকল বৈশিষ্ট্যের সামগ্রিক রূপ যার ভিতর দিয়ে প্রকাশ পায় তার স্বাতন্ত্র্য ভাব। প্রত্যেক ব্যক্তি অন্য ব্যক্তি হতে পৃথক সত্ত্বার অধিকারী। এ ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যই হচ্ছে প্রকৃতপক্ষে ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব।

ব্যক্তিত্ব মূল্যায়নের মূল উদ্দেশ্য হলো, কোন লোক কাজের জন্য উপযুক্ত তা নির্ণয় করা। আচরণের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি নম্র ও বিনয়ী হয়; কেউবা হয় উগ্র, রুক্ষ ও প্রতাপশালী। কিছু লোক প্রফুল্ল চিত্তের অধিকারী হয় ও কাজ কর্মে প্রসন্ন থাকে। আবার অনেকে গম্ভীর, বিষণ্ন ও বেরসিক হয়। অনেকে কর্মঠ আবার অনেকে অলস ও ধীরগামী হয়; কেউবা নির্বোধ আবার কেউবা বুদ্ধিমান হয়। সুতরাং, ব্যক্তিত্বের ধরন মতে মানুষকে নানা শ্রেণিভুক্ত করা যায় এবং সেভাবে তাদেরকে পরিচালিত ও সংগঠিত করা যায়।


ব্যক্তিত্ব নির্ধারক

Personality Determinants

অনেক মনোবিজ্ঞানী মনে করেন, ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব হচ্ছে বংশগতি অথবা পরিবেশের ফলাফল। তারা মনে করেন ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব জন্মের সময় পূর্বনির্ধারিত হয়ে থাকে অথবা পরিবেশের মিথস্ক্রিয়ার দ্বারা হয়ে থাকে। আসলে এর কোনো সরাসরি উত্তর দেওয়া সম্ভবনা। তবে বহু গবেষণা থেকে এটা বলা যায় যে, ব্যক্তিত্ব এ দুইটি বিষয়ের দ্বারা প্রভাবিত হয়। নিম্নে এ দুইটি নির্ধারক সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হল:


• বংশগতি (Heredity)

ব্যক্তির বংশগতির সূচনা হয় মাতৃগর্ভে। ব্যক্তির সার্বিক বিকাশে বংশগতির প্রভাব অনস্বীকার্য। উত্তরাধিকার সূত্রে মা-বাবা এবং পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে প্রাপ্ত বৈশিষ্ট্যাবলিকে বংশগতি বলে। বংশগতির কারণেই এক একজন মানুষ এক একরকম বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হয়। এ বংশগতির প্রভাবে মানুষের শারীরিক গঠন, কর্মশক্তি, চোখের রঙ, চুলের রঙ, মেজাজ ইত্যাদি প্রভাবিত হয়।

বংশগতিবাদী মনোবিজ্ঞানীরা মনে করেন, ব্যক্তি যে পরিবেশেই জন্মগ্রহণ করুক না কেন একমাত্র উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত বৈশিষ্ট্যাবলি তার বিকাশকে প্রভাবিত করবে। পরিবেশ বা শিখনের প্রভাব নেই বললেই চলে। কার্ল পিয়ারসন (Karl Pearson) একটি পরীক্ষণ চালান ইংল্যান্ডের তিনটি বিখ্যাত পরিবারে। এসব পরিবারের এক হাজার বছরের বংশপঞ্জী পর্যালোচনা করে তিনি দেখেন যে, কয়েক পুরুষ ধরে এ তিন পরিবারের বিভিন্ন ব্যক্তি ইংল্যান্ডের সাহিত্য, দর্শন, রাজনীতি, বিজ্ঞান ও অর্থনীতিতে ব্যাপক অবদান রেখেছেন। এ থেকে তিনি এ সিদ্ধান্তে পৌঁছান যে, এর কারণ হলো বংশগতি ।

o পরিবেশ (Environment)

পরিবেশ বলতে ব্যক্তির গণ্ডি বা পরিবেষ্টনীকে বোঝানো হয়। অর্থাৎ ব্যক্তি যার দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকে তাই হলো তার পরিবেশ। মনোবিজ্ঞানে পরিবেশ শব্দটিকে বিশেষ অর্থে ব্যবহার করা হয়। মনোবিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত যেসব উদ্দীপক ব্যক্তির উপর প্রভাব বিস্তার করে সেগুলোর সমষ্টিই হচ্ছে তার পরিবেশ। ব্যক্তির বিকাশে পরিবেশ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রভাব বিস্তার করে। ব্যক্তির বিকাশে জন্ম-পূর্ব পরিবেশ এবং জন্ম-উত্তর পরিবেশ দুটাই গুরুত্বপূর্ণ। জন্ম-পূর্ব পরিবেশ বলতে মায়ের খাদ্য, পুষ্টি, আবেগ, ঔষধ সেবন, রক্তের উপাদান ইত্যাদিকে বুঝায়। এগুলো গর্ভস্থ শিশুর বিকাশে প্রভাব বিস্তার করে। জন্ম-উত্তর পরিবেশ বলতে প্রাকৃতিক ও সামাজিক পরিবেশকে বুঝায়। প্রাকৃতিক পরিবেশ হলো জলবায়ু, আবহাওয়া, ভূ-প্রকৃতি ইত্যাদি। অপরদিকে পরিবার, শিক্ষাঙ্গন বিভিন্ন সংগঠন সামাজিক পরিবেশের অন্তর্ভুক্ত। এ সবকিছুই ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব ও আচরণের বিকাশে তাৎপর্য ভূমিকা পালন করে। ক্যাটেল, ওয়াটসন, গর্ডন প্রমুখ মনোবিজ্ঞানীরা ছিলেন চরম পরিবেশবাদী। তারা মনে করেন ব্যক্তির বিকাশে পরিবেশই মুখ্য ভূমিকা পালন করে। তারা বলেন, ব্যক্তির বংশগতি যাই হোক না কেন তাকে যদি উপযুক্ত পরিবেশে রেখে উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া যায় তবে ব্যক্তির কাংখিত বিকাশ সম্ভব।


ব্যক্তিত্বের লক্ষণ Personality Traits

ব্যক্তিত্ব হচ্ছে এমন একটি ধারণা যা আচরণের সাথে সম্পর্কযুক্ত। আমরা বাইরে থেকে মানুষের বিভিন্ন আচরণ দেখে এদেরকে বিভিন্নভাবে নামকরণ করি। যেমন-সৎ মানুষ, বদমেজাজী, হাসি-খুশী, অলস ইত্যাদি নামকরণের মাধ্যমে ব্যক্তিত্বের বর্ণনা দিয়ে থাকি। মনোবিজ্ঞানীরা এ শব্দগুলোকে নিয়ে গবেষণা করেছেন এবং পরিশেষে এ ধারণায় উপনীত হয়েছেন যে, এ শব্দগুলো ব্যক্তিত্বের লক্ষণ। লক্ষণ হচ্ছে একটি আচরণের স্থায়ী দিক যা পরিবেশ ও পরিস্থিতিতে সাধারণত একই রকম থাকে ।

১৯৭০ সালে পল কস্তা ও রবার্ট ম্যাককেয়ার নামক দুইজন গবেষক আলাদাভাবে ব্যক্তিত্বের উপর গবেষণা করেন যা বিগ ফাইভ মডেল (Big Five Model) নামে পরিচিত। তাঁরা দু'জনই এ ধারণায় উপনীত হন যে, একজন ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব পাঁচটি মৌলিক ফ্যাক্টরের উপর গড়ে ওঠে:

১. Extraversion: আমরা আমাদের সমাজে দুই ধরনের মানুষ দেখি। একদল মানুষ আছে যারা সকলের সাথে কথা বলে, বন্ধুত্বসুলভ এবং সবার সাথে সম্পর্ক গড়তে পছন্দ করে। এরা Extroverts বা বহুমুখী বা বহিমুখী। বহিমুখী মানুষ সামাজিক মিথস্ক্রিয়া পছন্দ করে। সকলের মনোযোগ আকর্ষণ করার পাশাপাশি নতুন ব্যক্তির সাথে কথা ও বন্ধুত্ব স্থাপনে উৎসাহী হয়। আশেপাশে মানুষ আছে যারা শুধুমাত্র বাছাইকৃত কয়েকজন ব্যক্তি ছাড়া অন্যদের সাথে কথা বলতে খুব আগ্রহী হয়না। এদেরকে Introverts বা অন্তর্মুখী ব্যক্তি বলা হয়। এ ধরনের মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে তারা নিজেরাই থাকে । সামাজিক মিথস্ক্রিয়া এরা খুব একটা পছন্দ করেনা।

২. Agreeableness: এ ধরনের মানুষেরা অমায়িক প্রকৃতির হয়ে থাকে। এরা অন্যদের তুলনায় আলাদা, সবাই তাদেরকে পছন্দ করে, কখন কখন তাদের মত হতে চায়। এরা নেতিবাচক চিন্তা তেমন করেন না, তারা বহিমুখী এবং পরিশ্রমী। এ ধরনের মানুষের উপর অন্যরা ভরসা করতে পারে। যে মানুষের মধ্যে এ উপাদানটি যত কম ততই এরা নিজেদের প্রয়োজনের কথা বেশি চিন্তা করে, অন্যদের প্রয়োজন নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামায়না।

3. Conscientiousness: এ ধরনের ব্যক্তিরা সুবুদ্ধি সম্পন্ন এবং পরিশ্রমী। এরা সুনির্দিষ্ট কিছু লক্ষ্য স্থির করে যা উদ্দেশ্যপূর্ণ উপায়ে অর্জনে এগিয়ে যায়। এ ধরনের ব্যক্তিরা দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে পছন্দ করেন। অন্যদিকে এ উপাদানের মাত্রা যাদের মধ্যে কম তারা অধিক পরিমাণ লক্ষ্য নির্ধারণে আগ্রহী থাকে এবং বিভ্রান্ত থাকে।

৪. Neuroticism: মানসিক অবসাদ না থাকা সত্ত্বেও বিনা কারণে রাগ, জেদ, অপরাধবোধ, নিঃসঙ্গ অনুভব করেন অনেকেই। এটাও মানসিকতার একটা বিশেষ ধরন, যাকে বলা হয় Neuroticism। এ ধরনের ব্যক্তিরা সাধারণত অন্যের প্রতি ঈর্ষা অনুভব করে যখন তারা মনে করে অন্যেরা তার থেকে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। তারা বেশিরভাগ সময়ই বিরক্ত এবং হতাশাগ্রস্থ থাকে। সাধারণত এ অবস্থার সৃষ্টি হয় যখন তারা প্রায়শই বিভিন্ন চাপ মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়।

৫. Openness to Experience: এ ধরনের ব্যক্তিরা নতুন কিছু জানতে ও বুঝতে বেশ আগ্রহী থাকে। পরিবর্তন ও নতুনত্বের প্রতি থাকে এদের প্রবল ঝোঁক। তারা যেমনি কাল্পনিক তেমনি শিল্প সংবেদনশীল এবং বুদ্ধিজীবী হয়ে থাকে। তারা তাদের অভিজ্ঞতার আলোকে নতুনের পেছনে ছোটে।

0মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comment below if you have any questions

Basic Computer Course

MS Word
MS Excel
MS PowerPoint
Bangla Typing, English Typing
Email and Internet

Duration: 2 months (4 days a week)
Sun+Mon+Tue+Wed

Course Fee: 4,500/-

Graphic Design Course

Adobe Photoshop
Adobe Illustrator

Duration: 3 months (2 days a week)
Fri+Sat

Course Fee: 9,000/-

Web Design Course

HTML 5
CSS 3

Duration: 3 months (2 days a week)
Fri+Sat

Course Fee: 8,500/-

Digital Marketing Course

Facebook, YouTube, Instagram, SEO, Google Ads, Email Marketing

Duration: 3 months (2 days a week)
Fri+Sat

Course Fee: 15,000/-

Class Time

Morning to Noon

1st Batch: 08:00-09:30 AM

2nd Batch: 09:30-11:00 AM

3rd Batch: 11:00-12:30 PM

4th Batch: 12:30-02:00 PM

Afternoon to Night

5th Batch: 04:00-05:30 PM

6th Batch: 05:30-07:00 PM

7th Batch: 07:00-08:30 PM

8th Batch: 08:30-10:00 PM

Contact:

Alamin Computer Training Center

796, West Kazipara Bus Stand,

West side of Metro Rail Pillar No. 288

Kazipara, Mirpur, Dhaka-1216

Mobile: 01785 474 006

Email: alamincomputer1216@gmail.com

Facebook: www.facebook.com/ac01785474006

Blog: alamincomputertc.blogspot.com

Contact form

নাম

ইমেল*

বার্তা*

-->