Home » » বাগধারা

বাগধারা

বাগধারা

আমাদের বাংলা ভাষায় এমন অনেক শব্দ বা শব্দসমষ্টি আছে যার আভিধানিক বা শাব্দিক অর্থ একরকম কিন্তু বাক্যে ব্যবহারের পর তার ভিন্ন বা বিশেষ একটি অর্থ প্রকাশ পায়। যেমন : ‘অর্ধচন্দ্র’ দিয়ে আমরা এর আক্ষরিক অর্থ ‘অর্ধেক চাঁদ’-কে বুঝি। কিন্তু যখন এটি বাক্যে এভাবে ব্যবহৃত হয় যে ‘করিম চোরটিকে অর্ধচন্দ্র দিয়ে বিদায় করে দিল’ তখন এটি একটি বিশিষ্ট অর্থ প্রকাশ করে, যার অর্থ ‘গলা ধাক্কা’ দেয়া। এই ‘অর্ধচন্দ্র’ শব্দটি বাক্যে ব্যবহৃত হয়ে আক্ষরিক অর্থ প্রকাশ না করে একটি বিশেষ অর্থ প্রকাশ করার রীতি হলো বাক্যরীতি বা বাগধারা। 

তাহলে আমরা বলতে পারি- কোনো শব্দ বা শব্দসমষ্টি বাক্যে ব্যবহৃত হয়ে যখন তার একটি বিশেষ অর্থ প্রকাশ করে তখন তাকে বাগধারা বলে। 

বাগধারা বাংলা ভাষার একটি বিশিষ্ট সম্পদ। এটি ভাষার শক্তি ও সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে। এর দ্বারা খুব সহজে ও আকর্ষণীয় করে মনের ভাবকে ভাষায় প্রকাশ করা যায়। বাগধারা হিসেবে ব্যবহৃত শব্দাবলি সাধারণ অর্থকে অতিক্রম করে যায় বলে ভাষা প্রাণবন্ত ও তাৎপর্যমন্ডিত হয়ে ওঠে। বাক্য-ব্যবহারে একটি চমক ও রসময়তার সৃষ্টি হয়। এতে ভাষার সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায় ও শ্রুতিমধুরতা আনে। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ভাষার ব্যবহারে এর একটি বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। বাগধারার বিশেষ অর্থটি জানা ও তার যথার্থ ব্যবহার করতে জানলে মনের ভাব প্রাঞ্জলভাবে প্রকাশ করা সহজ হয়।

বাগধারার বিশেষ অর্থ ও বাক্যে তার ব্যবহারগুলো নিম্নে দেয়া হলো:


১. অকাল কুষ্মা- (অপদার্থ) : অকাল কুষ্মা- ছেলেটা প্রতিবছর ফেল করে, তাকে দিয়ে কোনো কাজ হবে না।
২. অক্কা পাওয়া (মারা যাওয়া) : লোকটা দুদিনের জ্বরেই অক্কা পেয়েছে।
৩. অগস্ত্য যাত্রা (চিরদিনের জন্য প্রস্থান) : গরিবের টাকা চুরি করে লোকটা গ্রাম থেকে অগস্ত্য যাত্রা করেছে।
৪. অন্ধের যষ্টি (একমাত্র অবলম্বন) : বুড়ি মায়ের একমাত্র ছেলেটিই অন্ধের যষ্টি।
৫. অরণ্যে রোদন (নিষ্ফল আবেদন) : ঐ কৃপণ বুড়োর কাছে টাকা চাওয়া আর অরণ্যে রোদন করা একই কথা।
৬. অগাধ জলের মাছ (চতুর ব্যক্তি) : সে তো অগাধ জলের মাছ, তার মনের ফন্দি-ফিকির বুঝবে কী করে?
৭. অন্ধকারে ঢিল মারা (না জেনে কিছু করা) : বিষয়টা আগে ভালো করে জেনে নাও, অন্ধকারে ঢিল মারা ঠিক নয়।
৮. অল্পবিদ্যা ভয়ংকরী (অল্পবিদ্যার গর্ব) : অল্পবিদ্যা ভয়ংকরী বলেই ফটিক মিয়া সবার সমালোচনা করে।
৯. অর্ধচন্দ্র (গলাধাক্কা) : বেয়াদব লোকটাকে অর্ধচন্দ্র দিয়ে মজলিশ থেকে বিদায় করে দাও।
১০. অমাবস্যার চাঁদ (অদর্শনীয়) : তুমি যে অমাবস্যার চাঁদ হয়ে গেলে, তোমার আর দেখাই পাওয়া যায় না।
১১. অগ্নিপরীক্ষা (কঠিন পরীক্ষা) : জাতীয় জীবনে এ এক অগ্নি পরীক্ষা- এতে আমাদের উত্তীর্ণ হতেই হবে।
১২. অহিনকুল সম্পর্ক (ভীষণ শত্রুতা) : ভাইয়ে ভাইয়ে এখন অহিনকুল সম্পর্ক: কেউ কারো মুখ পর্যন্ত দেখে না।
১৩. অথৈ জলে পড়া (ভীষণ বিপদে পড়া) : চাকুরিটা হারিয়ে সে এখন অথৈ জলে পড়েছে।
১৪. অগ্নি শর্মা (অতিশয় ক্রুদ্ধ) : কথাটি শোনামাত্র তিনি রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে উঠলেন।
১৫. অকূল পাথার (সীমাহীন বিপদ) : ভিটে মাটি সর্বস্ব হারিয়ে এখন আমি অকূল পাথারে ভাসছি।
১৬. অনুরোধে ঢেঁকি গেলা (অনুরোধে কঠিন কাজ করার সম্মতি জ্ঞাপন) : এ কাজ আমার দ্বারা সম্ভব নয় তবু বন্ধুদের অনুরোধে ঢেঁকি গিলতে হয়েছে।
১৭. আদায় কাঁচকলায় (পরম শত্রুতা) : শ্বাশুড়ি-বৌতে একেবারে আদায় কাঁচকলায় সম্পর্ক।
১৮. আসরে নামা (অবতীর্ণ হওয়া) : আশরাফ সাহেব এবার সুযোগ বুঝে রাজনীতির আসরে নেমে পড়েছেন।


১৯. আকাশ কুসুম (অসম্ভব কল্পনা) : ঘরে বসে আকাশ কুসুম কল্পনা করলে কিছু হবে না- চাই পরিশ্রম আর নিষ্ঠা।
২০. আক্কেল সেলামি (বোকামির দ-) : বিনা টিকিটে ট্রেনে চড়ে ৫০ টাকা আক্কেল সেলামি দিয়ে ফিরে এলাম।
২১. আঙুল ফুলে কলাগাছ (হঠাৎ বড়লোক হওয়া) : কাঁচামালের ব্যবসা করে এখন আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছে।
২২. আক্কেল গুড়ুম (হতবুদ্ধি) : তার মিথ্যা অভিযোগ শুনে তো আমার আক্কেল গুড়ুম।
২৩. আমড়া কাঠের ঢেঁকি (অপদার্থ) : সে একটা আমড়া কাঠের ঢেঁকি- তাকে কোনো দায়িত ব দিয়ে লাভ নেই।
২৪. আকাশ ভেঙে পড়া (ভীষণ বিপদে পড়া) : চাকুরি হারিয়ে তার মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়েছে।
২৫. আষাঢ়ে গল্প (আজগুবি গল্প) : তুমি খালি হাতে বাঘ মেরেছ -এটা আষাঢ়ে গল্প ছাড়া কিছুই নয়।
২৬. আমড়াগাছি করা (তোষামোদ করা) : বড় সাহেবকে আমড়াগাছি করে সে এবার বড় একটা ঠিকাদারি পেয়ে গেছে।
২৭. আকাশ থেকে পড়া (না জানার ভান করা) : তার জেল হয়েছে শুনে তুমি আকাশ থেকে পড়লে মনে হচ্ছে।
২৮. আকাশ পাতাল (দুস্তর ব্যবধান) : আকাশ-পাতাল ভেবে কোনো লাভ নেই, যে সুযোগটা আছে সেটাই গ্রহণ কর।
২৯. আলালের ঘরের দুলাল (আদুরে ছেলে) : ওতো আলালের ঘরের দুলাল, সে এত পরিশ্রমের কাজ পারবে কেন?
৩০. আঁতে ঘা দেওয়া (মনে কষ্ট দেওয়া) : তুমি এমন আঁতে ঘা দেওয়া রূঢ় কথা বলছ কেন?
৩১. আদা জল খেয়ে লাগা (সর্বাত্মক চেষ্টা করা) : পরীক্ষা পাশের জন্য তুমি এবার আদাজল খেয়ে লেগেছ মনে হচ্ছে।
৩২. আঠার মাসে বছর ( দীর্ঘসূত্রিতা) : তোমার তো আঠার মাসে বছর, এই সামান্য কাজ করতেই এতদিন লেগে গেল।
৩৩. আদিখ্যেতা (ন্যাকামি স্বভাব) : বাবা মায়ের শাসন না থাকায় মেয়ের আদিখ্যেতা বেড়ে গেছে।
৩৪. আপন পায়ে কুড়াল মারা (নিজের ক্ষতি করা) : লেখাপড়া না শিখে নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মেরেছ।


৩৫. ইঁচড়ে পাকা (অকালপক ব) : ও ইঁচড়ে পাকা ছেলে- না হলে বাবা-মায়ের সঙ্গে এরকম তর্ক করে।
৩৬. ইতর বিশেষ (পার্থক্য) : ছেলে-মেয়ের মধ্যে ইতর বিশেষ না করে দুজনেরই লেখাপড়ার সমান সুযোগ দাও।
৩৭. ইঁদুর কপালে (মন্দভাগ্য) : আমি হলাম ইঁদুর কপালে - আমার ভাগ্যে কি আর লটারির টাকা জুটবে!
৩৮. ঈদের চাঁদ (আকাঙিক্ষত বস্তু) : অনেক দিন পর ছেলে বাড়ি আসায় মা যেন হাতে ঈদের চাঁদ পেয়েছেন।


৩৯. উত্তম মধ্যম (প্রহার) : পুলিশে দিয়ে কী হবে, চোরটিকে উত্তম মধ্যম দিয়ে গ্রাম থেকে বের করে দাও।
৪০. উলুবনে মুক্তা ছড়ান (অস্থানে মূল্যবান দ্রব্য প্রদান) :চোরকে উপদেশ দেওয়া আর উলুবনে মুক্তা ছড়ান একই কথা।
৪১. উনপাঁজুরে (দুর্বল) : এই উনপাঁজুরে ছেলেটি দুপা হাঁটতেই হাঁপিয়ে উঠে।
৪২. উড়ো কথা (গুজব) : উড়ো কথায় কান দিও না।
৪৩. উড়নচন্ডী (অমিতব্যয়ী) : রহিম সাহেবের উড়নচন্ডী ছেলেটি অল্পদিনেই বাপের সম্পত্তি নষ্ট করে পথে দাঁড়িয়েছে।
৪৪. উড়োচিঠি (বেনামী চিঠি) : চেয়ারম্যান সাহেব উড়োচিঠি পেয়ে একেবারে মুষড়ে পড়েছেন।
৪৫. উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে (একজনের দোষ অপরের ঘাড়ে চাপানো) : রহিমের খাতা দেখে লিখে করিম করল পাশ আর রহিমের গেল নম্বর কাটা -এ যেন উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে।


৪৬. এক চোখা (পক্ষপাতিত ব) : গাঁয়ের মোড়ল একচোখা, তার কাছে সুবিচার পাবে কী করে?
৪৭. এলাহি কান্ড (বিরাট আয়োজন) : ছেলের জন্মদিনে এতবড় আয়োজন, এ যে এক এলাহি কান্ড।
৪৮. এক ঢিলে দুই পাখি (একসঙ্গে দুই কাজ করা) : রফিক এক ঢিলে দুই পাখি মারতে গিয়ে কোনো কাজই করতে পারলো না।
৪৯. এক মাঘে শীত যায় না (বিপদ একবারই আসে না): যেই টাকাটা পেয়েছ, আর দেখা নাই তবে এক মাঘে শীত যায় না, ওকে আবার আসতেই হবে।
৫০. একাদশে বৃহস্পতি (সুসময়) : তোমার তো একাদশে বৃহস্পতি, যাতে হাত দাও তাতেই সোনা ফলে।
৫১. এক কথার মানুষ (প্রতিশ্রুতিতে অটল থাকে) : আমাদের চেয়ারম্যান সাহেব এক কথার মানুষ।
৫২. একহাত নেওয়া (সুযোগ বুঝে প্রতিশোধ নেয়া) : কায়দায় ফেলে নাকি আমাকে এক হাত দেখে নেবে।
৫৩. একক্ষুরে মাথা মুড়ান (একই প্রকৃতির) : তোমরা সবাই একই কথা বলছ, সকলেই কী এক ক্ষুরে মাথা মুড়িয়েছ।


৫৪. ওষুধ ধরা (কাজ হওয়া) : মনে হয় ওষুধ করেছে- বুড়োটা এবার কথামতো কাজ করবে।


৫৫. কথার কথা (গুরুত বহীন কথা) : কাউকে আঘাত দেওয়ার জন্য একথা বলিনি, এ নেহায়েতই কথার কথা।
৫৬. কত ধানে কত চাল (হিসেব করে চলা) : তোমাকে তো উপার্জন করে সংসার চালাতে হয় না আমি উপার্জন করে সংসার চালাই- তাই জানি কত ধানে কত চাল।
৫৭. কড়ায় গন্ডায় (পুরোপুরি) : আগে কড়ায় গন্ডায় পাওনা বুঝিয়ে দাও তারপরে তোমার অন্য কথা।
৫৮. কেতাদুরস্ত (পরিপাটি) : করিম পোশাকে কেতাদুরস্ত হলে কী হবে লেখাপড়া তো কিছুই জানে না।
৫৯. কান পাতলা (বিশ্বাসপ্রবণ) : লোকটির ভয়ানক কান পাতলা, যে যা বলে তাই বিশ্বাস করে।
৬০. কথায় চিড়া ভিজা (বিনা ব্যয়ে কাজ না হওয়া) : কথায় কী আর চিড়ে ভিজে, কিছু টাকা পয়সা ছাড়, এখনই সব ঠিক হয়ে যাবে।
৬১. কেঁচে গন্ডুষ করা (পুনরায় আরম্ভ) : সবই ভুলে গেছি- এখন ছোট ভাইকে অঙ্ক করাতে গিয়ে কেঁচো গন্ডুষ করতে হচ্ছে।
৬২. কাঁচা পয়সা (নগদ উপার্জন) : ঠিকাদারি করা কাঁচা পয়সা তো তাই দুহাতে উড়াচ্ছে।
৬৩. কপাল ফেরা (অবস্থা ভালো হওয়া) : ওর কপাল ফিরেছে, এখন ভালো টাকা-পয়সা উপার্জন করে।
৬৪. কান ভারি করা (কুপরামর্শ দেওয়া) : আমার বিরুদ্ধে নানান কথা বলে ও বড় সাহেবের কান ভারি করেছে।
৬৫. কলুর বলদ (পরাধীন) : দিনরাত কলুর বলদের মতো সংসারের ঘানি টানছি, তবু কারো নেক নজরে পড়িনি।
৬৬. কই মাছের প্রাণ (যে সহজে মরে না) : চোরটির কই মাছের প্রাণ, না হলে এত মার খেয়েও মরল না।
৬৭. ক অক্ষর গোমাংস (বর্ণ পরিচয়হীন) : ওতো একটা ক অক্ষর গোমাংস লেখাপড়া কিছুই জানে না।
৬৮. কাক ভুষন্ডী (দীর্ঘায়ু) : বুড়িটা কাক ভুষন্ডী- না হলে এত দিন ভিটে আগলে পড়ে আছে।
৬৯. কল্কে পাওয়া (পাত্তা পাওয়া) : ঐ বিদ্যা নিয়ে এখানে কল্কে পাওয়া যাবে না- অন্য চাকরির চেষ্টা করো।
৭০. কাঁঠালের আমসত ব (অসম্ভব বস্ত্ত) : হিংসার পৃথিবীতে শান্তি এখন কাঁঠালের আমসতে বর মতোই অসম্ভব বস্ত্ত।
৭১. কূপম-ুক (সীমাবন্ধ জ্ঞান) : মানুষের চাঁদ বিজয়ের কথাও শোননি- তুমি তো আচ্ছা কূপম-ুক।
৭২. কাঠের পুতুল (নির্বাক ও অসাড়) : কাঠের পুতুলের মতো দাঁড়িয়ে আছ কেন? দেখছ না ছেলেটা পুকুরে ডুবে যাচ্ছে।
৭৩. কংস মামা (শত্রুভাবাপন্ন নিকট-আত্মীয়) : কৎস মামার লোকেরা তোমার চারপাশে অশুভ ছায়া ফেলেছে, সাবধানে থেকো।
৭৪. কালেভদ্রে (কদাচিৎ) : শহরবাসীরা কালেভদ্রে গ্রামের বাড়িতে পা রাখে।
৭৫. কচুবনের কালাচাঁদ (অপদার্থ) : তোমার মতো কচুবনের কালাচাঁদের হাতে মেয়ে দেবে কে?
৭৬. কেষ্ট বিষ্টু (গুরুত বপূর্ণ ব্যক্তি) :দলীয় সম্মেলনে কেষ্ট বিষ্টুরাই মুখ্য ভূমিকা পালন করলেন।


৭৭. খয়ের খাঁ (চাটুকার) : তুমি তো বড় সাহেবের খয়ের খাঁ, তুমি আমাদের আন্দোলনে আসবে না।
৭৮. খাল কেটে কুমির আনা (বিপদ ডেকে আনা) : ভাইয়ে-ভাইয়ের বিবাদে প্রতিবেশী ডেকে নিয়ে এসে খাল কেটে কুমির এনেছ, এখন ঠ্যালা সামলাও।


৭৯. গড্ডলিকা প্রবাহ (অন্ধ অনুকরণ) : আমি তোমাদের মতো গড্ডলিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে দিতে চাই না, নিজের মতো করে নিজে বাঁচতে চাই।
৮০. গলগ্রহ (পরের বোঝা স্বরূপ) : আমি কারো গলগ্রহ নই, গায়ে খেটে নিজের অন্ন জোগাড় করি।
৮১. গোবর গণেশ (মূর্খ) : ছেলেটা একেবারে গোবর গণেশ, বুদ্ধিশুদ্ধি বলতে কিছুই নেই।
৮২. গোঁফ খেজুরে (অলস) : সে যা গোঁফ খেজুরে লোক, ঢাকনা খুলে হাঁড়ির ভাতটুকু নিয়েও খেতে পারবে না।
৮৩. গোড়ায় গলদ (আরম্ভে ভুল) : অঙ্ক মিলবে কী করে, গোড়াতেই যে গলদ করে বসে আছ।
৮৪. গুড়ে বালি (আশায় নৈরাশ্য) : ভেবেছিলাম এবার ভালো ফসল পাব কিন্তু সে গুড়ে বালি, বান সব ভাসিয়ে নিয়ে গেছে।
৮৫. গা ঢাকা দেওয়া (লুকিয়ে থাকা) : পুলিশের ভয়ে ও গা ঢাকা দিয়েছে।
৮৬. গায়ের ঝাল ঝাড়া (শোধ দেওয়া) : অনেকদিন পর বদমায়েশটার দেখা পেয়ে আচ্ছা করে গায়ের ঝাল ঝেড়েছি।
৮৭. গোকুলের ষাঁড় (বাধাবন্ধনহীন) : বাপের হোটেলে খাওদাও আর গোকুলের ষাঁড়ের মতো ঘুরে বেড়াও, বলি লেখাপড়া কি একেবারে ছেড়েই দিয়েছ!
৮৮. গোঁয়ার গোবিন্দ (কা-জ্ঞানহীন) : ছেলেটা একটা গোঁয়ার গোবিন্দ- নইলে ছোট ভাইটিকে এরকম করে মারে!
৮৯. গৌরচন্দ্রিকা (ভণিতা) : ওসব গৌরচন্দ্রিকা রেখে আসল কথাটি কী তা বলে ফেল।
৯০. গা তোলা (উঠা) : এবার গা তুলুন ট্রেন আসবার সময় হয়েছে।
৯১. গো বৈদ্য (হাতুড়ে) : গ্রামে গো বৈদ্যের হাতে পড়ে কত সাধারণ রোগী যে মারা যাচ্ছে তার হিসেব কে রাখে।
৯২. গভীর জলের মাছ (চালাক) : রহিম গভীর জলের মাছ- তার মতলব বোঝা কি আমার সাধ্য।
৯৩. গোবরে পদ্ম ফুল (অস্থানে ভালো জিনিষ) : দিন মজুরের ছেলে কিন্তু লেখাপড়ায় এত ভালো- এ যে দেখছি গোবরে পদ্মফুল।
৯৪. গরিবের ঘোড়ারোগ (সাধ্যের অতিরিক্ত করতে যাওয়া) : সামান্য আয়ের কেরানির গাড়ি কেনার শখ, গরিবের ঘোড়ারোগ ছাড়া আর কী।
৯৫. গদাই লস্করি চাল (অলস ভঙ্গি) : এমন গদাইলস্করি চালে হাঁটলে ট্রেন ধরতে পারবে না।
৯৬. গো-বেচারা (নিরীহ) : আজকাল সমাজে গো-বেচারা লোকের মর্যাদা নেই।
৯৭. গোঁজামিল (কোনমতে মেলানো) : কোন কিছুতে গোঁজামিল দিলে তার পরিণাম ভাল হয় না।


৯৮. ঘোড়া রোগ (সাধ্যের অতিরিক্ত করা) : দুবেলা ভাত জোটে না, এদিকে প্রতি রাতে সিনেমা দেখার শখ, এ ঘোড়া রোগ ছাড়া আর কী!
৯৯. ঘটি ডোবে না নাম তালপুকুর (অপদার্থের বড় নাম) : ভাত জোটে না, নামে জমিদার! এ যে দেখছি ঘটি ডোবে না নাম তালপুকুর।
১০০. ঘাটের মড়া (অতি বৃদ্ধ) : গরিব বলে কি ঘাটের মড়ার কাছে মেয়ে সমর্পণ করব?
১০১. ঘোড়ার ডিম (বৃথা, অর্থহীন) : সারা বছর লেখাপড়া না করলে পরীক্ষার খাতায় ঘোড়ার ডিম তো পাবেই।


১০২. চিনির বলদ (ভারবাহী কিন্তু লাভের অংশীদার নয়) : সংসারে দিনরাত খেটে মরছি কিন্তু চিনির বলদের মতো লাভের লাভ কিছুই পাই না।
১০৩. চোখ টাটান (হিংসা করা) : পরের উন্নতি দেখলে তোমার চোখ টাটায় কেন?
১০৪. চোখের চামড়া (লজ্জা) : তোমার চোখের চামড়া থাকলে এ মিথ্যা কথাটা আর বলতে না।
১০৫. চাঁদের হাট (সুখের মিলন) : পুত্র কন্যাদের নিয়ে তোমার সংসারে চাঁদের হাট বসেছে।
১০৬. চোখের বালি (অপ্রিয়) : ও চোখে মুখে মিথ্যা কথা বলে ওর চোখের পর্দা বলে কিছু নেই।
১০৭. চোখে ধুলা দেওয়া (ঠকানো) : মনিবের চোখে ধুলো দিয়ে বেশ পয়সা কামাচ্ছ; কিন্তু এটা চিরদিন চলবে না।
১০৮. চক্ষুদান করা (চুরি করা) সামনের টেবিল থেকে কলমটা কে যে চক্ষুদান করলো ঠিক বুঝতে পারিনি।
১০৯. চোখে সরষের ফুল দেখা (হতভম্ব) : পরীক্ষায় প্রশ্ন কমন পড়েনি- কাজেই চোখের সরষের ফুল দেখছি।
১১০. চোখের মনি (প্রিয়) : মায়ের চোখের মনিকে কখনো আড়াল হতে দেন না।
১১১. চোখের মাথা খাওয়া ( না দেখা) : তুমি কি চোখের মাথা খেয়েছ, সামনে দিয়ে একটা অপরিচিত লোক বাসায় ঢুকল আর তুমি দেখলে না।
১১২. চুল পাকানো (অভিজ্ঞতা) : এই কাজ করেই চুল পাকিয়েছি- তোমার কাছে নতুন করে শিখতে হবে না।
১১৩. চড় মেরে গড় (সর্বনাশ করে সম্মান দেখান) : মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়ে আমার সর্বস্ব নষ্ট করলে এখন এসেছো সান্তবনার কথা বলতে, একেই বলে চড় মেরে গড়।
১১৪. চক্ষুশূল (অসহ্য) : সপত ণীপুত্র বিমাতার চক্ষুশূল হবে, এতো জানা কথা।
১১৫. চশমখোর (নির্লজ্জ) : তোমার মতো চশমখোর লোক আমি জীবনে দেখিনি।
১১৬. চুনোপুটি (সামান্য ব্যক্তি) : রাঘব বোয়ালরা ভয়ে কম্পমান, আর তুমি বাপু চুনোপুটি হয়ে লাফাচ্ছ।
১১৭. চোখের চামড়া (চক্ষুলজ্জা থাকা) : চোখের চামড়া থাকলে বাপের কাছে এমন নির্লজ্জ আবদার সে করতে পারত না।
১১৮. চোরাবালি (প্রচ্ছন্ন আকর্ষণ) : লোভের চোরাবালিতে পড়ে তার ইহকাল ও পরকাল দুইই গেল।
১১৯. চাঁদের হাট (আত্মীয় স্বজন নিয়ে সুখের মিলন) : পুত্র, পৌত্র ও দৌহিত্র নিয়ে অভীর ঘরে চাঁদের হাট বসেছে।


১২০. ছকড়া নকড়া (সস্তা দর) : বাজারে ইলিশ মাছের আমদানি বেশি, তাই ছকড়া নকড়া দরে বিক্রি হচ্ছে।
১২১. ছেলের হাতে মোয়া (সহজলভ্য) : একি ছেলের হাতে মোয়া- চাইলেই পেয়ে যাবে।
১২২. ছা পোষা (পোষ্য ভারাক্রান্ত) : ছা পোষা মানুষ আমি, নুন আনতে পান্তা ফুরায়, আমার কি আর বিদেশ ভ্রমণে শখ করলে চলে!
১২৩. ছাই চাপা আগুন (প্রচ্ছন্ন প্রতিভা) : ছাই চাপা আগুন কোনো দিন ঢাকা থাকে না, একদিন প্রকাশ পাবেই।
১২৪. ছিনিমিনি খেলা (অপব্যয় করা) : সমিতির টাকা নিয়ে ছিনিমিনি খেলবে, তা হতে দেব না।
১২৫. ছাই ফেলতে ভাঙা কুলো (যে ব্যক্তিকে শুধু অপ্রিয় কাজ করানোর জন্যেই স্মরণ করা হয়) : সুসময়ে আমার খোঁজ
নেবে কেন, আমি তো আছি দুঃসময়ের সাথি, ছাই ফেলতে ভাঙা কুলোর দরকার হবেই।


১২৬. জিলিপির প্যাচ (কুবুদ্ধি): তোমার পেটে এত জিলিপির প্যাচ : ক্ষতি আমার করবেই।
১২৭. জগদ্দল পাথর (গুরুভার) : নাবালক ভাইদের সম্পত্তি দেখাশোনার দায়িত ব জগদ্দল পাথরের মতো আমার ঘাড়ে চেপে আছে।
১২৮. জগাখিচুড়ি (সবকিছু এলোমেলো, বিশৃঙ্খল হয়ে থাকা) : গুছিয়ে বলতে না পারার জন্য ব্যাপারটা শেষ পর্যন্ত জগাখিচুড়ি হয়ে গেল।


১২৯. ঝাঁকের কৈ ঝাঁকে মেশা (সুযোগ পাওয়া মাত্র নিজের দলে ফেরা) : গরিবদের জন্য অনেক করলাম কিন্তু তারা শেষ পর্যন্ত আমাকে তাড়া করে ঝাঁকের কৈ ঝাঁকে মিশে গেল।
১৩০. ঝোপ বুঝে কোপ মারা (সুযোগ বুঝে কার্যসিদ্ধি করা) : ঝোপ বুঝে কোপ মারতে পারলে অতি কঠিন কাজেও সফলতা লাভ করা যায়।


১৩১. টনক নড়া (সজাগ হওয়া) : পরীক্ষা সামনে :এতদিনে তোমার টনক নড়েছে।
১৩২. টাকার গরম (ধনসম্পদের অহংকার) : টাকার গরম দেখিয়ে সমাজে যা খুশি করবে তা হতে দেব না।
১৩৩. টাকার কুমির (ধনী) : লোকটা টাকার কুমির কিন্তু গরীব দুখীদের দিকে ফিরেও তাকায় না।
১৩৪. টই টুম্বর (তরল বস্ত্ততে পরিপূর্ণ) : বর্ষাকালে বাংলাদেশের খাল-বিল, মাঠ-প্রান্তর, নদী-নালা সব পানিতে টই-টুম্বর হয়ে যায়।
১৩৫. টুপ ভুজঙ্গ (নেশায় চুর) : আরে, কাকে কী বলছ, দেখছ না নেশা করে একেবারে টুপ ভজঙ্গ হয়ে এসেছে।
১৩৬. টক্কর দেওয়া (পাল্লা দেওয়া) : যার তার সাথে টক্কর দিতে যেও না, শেষে বিপদে পড়বে।


১৩৭. ঠোঁট কাটা (বেহায়া) : ও ছেলের ঠোঁট কাটা, মুরুবিবর সামনেও বেফাঁস কথা বলে ফেলতে পারে।


১৩৯. ডুমুরের ফুল (অদৃশ্য বস্ত্ত) : তুমি ডুমুরের ফুল হয়ে গেছ নাকি, আর যে দেখাই পাওয়া যায় না।
১৪০. ডান হাতের ব্যাপার (আহার) : দুপুরে বেরোবার আগে ডানহাতের ব্যাপারটা সেরেই যাই, কখন ফিরব তার তো ঠিক নেই।
১৪১. ডামাডোল (বিশৃঙ্খলা) : যুদ্ধের ডামাডোলে চোরাকারবারিরা দুহাতে পয়সা লুটছে।
১৪২. ডাকা বুকো (দুঃসাহসী) : তোমার বাবা ছিলেন রীতিমতো ডাকা বুকো মানুষ, আর তুমি হলে কী না ভীরু ও দুর্বল।
১৪৩. টিমে তেতালা (অলস ভঙ্গি) : যেভাবে টিমে তেতালা গতিতে কাজ করছে, তাতে শেষ হবে বলে তো মনে হয় না।


১৪৪. ঢাক ঢাক গুড় গুড় (কপটতা) : অত ঢাক ঢাক গুড় গুড় করছো কেন! যা বলবে বলে ফেল।
১৪৫. ঢাকের কাঠি (মোসাহেব) : কেরানি তো বড় সাহেবের ঢাকের কাঠি, যা বলবে তাই শুনবে।
১৪৬. ঢাকের বাঁয়া (অকেজো) : ছেলের বিয়ের যোগাড় করেছে মা, বাবাটি তো ঢাকের বাঁয়া।


১৪৭. তাসের ঘর (ক্ষণস্থায়ী) : ওদের মধ্যে এত দহরম মহরম কিন্তু সামান্য স্বার্থের টানাপোড়নেই বন্ধুত ব তাসের ঘরের মতো ভেঙে গেল।
১৪৮. তীর্থের কাক (প্রতীক্ষারত) : লোকগুলো সেই সকাল থেকে তীর্থের কাকের মতো বসে আছে: কিন্তু যিনি বস্ত্রদান করবেন তার দেখাই নেই।
১৪৯. তেলে বেগুনে জ বলে উঠা (হঠাৎ অতিশয় রাগান্বিত হওয়া) : পাওনা টাকা চাইতেই তিনি তেলেবেগুনে জ বলে উঠলেন।
১৫০. তালপাতার সেপাই (রোগা) : ছেলেটি তো তালপাতার সেপাই : কী করে সেনাবাহিনীতে সুযোগ পাবে।
১৫১. তুলসী বনের বাঘ (ভ-) : দেখতে সাধুর মতো হলে কী হবে, লোকটা আসলে তুলসী বনের বাঘ।
১৫২. তামার বিষ (অর্থের কুপ্রভাব) : সে যে লম্বা কথা বলে তার মূলে আছে তামার বিষ।
১৫৩. তাল সামলানো (আকস্মিক বিপদ ঠেকানো): বাবার মৃত্যুতে সজল তাল হারিয়ে ফেললেও এখন তাল সামলিয়ে উঠতে পেরেছে।
১৫৪. তালকানা (হুঁশ নেই যার) : তোমার মতো তালকানা ছেলের ভবিষ্যৎ ঝরঝরে।
১৫৫. তুষের আগুন (দীর্ঘস্থায়ী ও দুঃসহ যন্ত্রণা) : পুত্র শোক পিতার বুকে তুষের আগুনের মতো জ বলছে।
১৫৬. তেলা মাথায় তেল দেয়া (ধনীর হাতে আরও ধন তুলে দেওয়া) : তেলা মাথায় তেল দিতে সকলেই ওস্তাদ।


১৫৭. দহরম মহরম (ঘনিষ্ঠতা) : দুজনে খুব দহরম মহরম: এমন কি সব সময় এক সঙ্গেই থাকে।
১৫৮. দুধের মাছি (সুসময়ের বন্ধু) : এখন টাকা আছে তাই দুধের মাছির অভাব নেই।
১৫৯. দক্ষযজ্ঞ ব্যাপার (তুমুল কা-) : বিয়ে বাড়িতে এক দক্ষযজ্ঞ ব্যাপার ঘটে গেল- ছেলের বাবা বিয়ে না দিয়েই বরকে নিয়ে চলে গেলেন।
১৬০. দাঁও মারা (মোটা অঙ্ক লাভ করা) : হঠাৎ চালের দাম বেড়ে যাওয়ায়, চালের দোকানদাররা ভালো দাঁও মেরেছে।
১৬১. দুধে ভাতে (ভালো অবস্থায় থাকা) : সব মা-বাবাই চায় তার সন্তানেরা দুধে ভাতে থাকুক।
১৬২. দায়সারা (অনিচ্ছুক ভাবে কাজ করা) : দায়সারাভাবে কাজ করলে কি আর কাজ সুষ্ঠুভাবে শেষ হয়।
১৬৩. দু’মুখো সাপ (যে উভয় পক্ষক্ষর মিত্র সেজে থাকে, আসলে উভয়েরই শত্রু): দু’মুখো সাপকে বিশ্বাস করা উচিত নয়, সে যে কখন সর্বনাশ করবে তার ঠিক নেই।


১৬৪. ধামাধরা (চাটুকারিতা) : জলিল তো বড় সাহেবের ধামাধরা- ও কি আর আমাদের সঙ্গে থাকবে।
১৬৫. ধরাকে সরা জ্ঞান করা (তুচ্ছ জ্ঞান করা) : হঠাৎ কিছু কাঁচা পয়সা হাতে এসেছে বলে ধরাকে সরা জ্ঞান কোরো না।
১৬৬. ধনুর্ভংগ পণ (অটল প্রতিজ্ঞা) : কোনো অবস্থাতেই অন্যায়ের পৃষ্ঠপোষকতা করব না- এরূপ ধনুর্ভংগ পণই জাতিকে দৃঢ় ও উন্নত করতে পারে।
১৬৭. ধর্মের কল বাতাসে নড়ে বা ধর্মের ঢাক আপনি বাজে (অন্যায় আপনিই প্রকাশিত হবে) : কোনো সত্যকে জোর করে চাপা দেওয়া সাময়িকভাবে সম্ভব হলেও দীর্ঘদিন তা চাপা থাকে না; কারণ ধর্মের কল বাতাসে নড়ে।
১৬৮. ধর্মের ষাঁড় (নিষ্কর্মা, নিশ্চিন্ত বেকার) : তুমি তো আস্ত একটা ধর্মের ষাঁড়।
১৬৯. ধান ভানতে শিবের গীত (এক কাজ করতে বা বলতে গিয়ে অন্য কাজ করা বা বলা) : যে কাজ করতে এসেছ তা না করে তুমি তো দেখছি, ধান ভানতে শিবের গীত আরম্ভ করে দিয়েছ।
১৭০. ধকল সওয়া (সহ্য করা) : তুমি যা-ই বল না কেন, এ বয়সে এত বড় ধকল সহ্য করা আমার পক্ষক্ষ সম্ভব নয়।


১৭১. নয় ছয় (অপচয়) : দুদিনেই ছেলেটা পৈতৃক সম্পত্তি নয় ছয় করে উড়িয়ে দিল।
১৭২. ননীর পুতুল (শ্রম বিমুখ অপদার্থ) : ছেলেগুলোকে অতিরিক্ত আদর দিয়ে ননীর পুতুল করে তুলেছ, ওরা জীবন পথে চলবে কী করে!
১৭৩. নেই আঁকড়া (নাছোড়বান্দা) : পড়েছি নেই আঁকড়াদের হাতে চাঁদা না দিয়ে কি রক্ষক্ষ আছে।
১৭৪. নবমীর পাঠা (যার সামনে আসন্ন বিপদ) : কর্তাবাবুর সামনে অপরাধী চাকরটি নবমীর পাঠার মতো কাঁপতে লাগল।
১৭৫. নবাব খাজা খাঁ (অতিশয় বিলাসী) : দুটো টাকা হাতে না আসতেই একেবারে নবাব খাজা খাঁ হয়ে বসেছ। এভাবে চললে রাজভান্ডারও শেষ হতে দেরি হবে না।
১৭৬. নাছোড়বান্দা (যার চাহিদা না মিটিয়ে উপায় নেই) : তুমি তো দেখছি বাপু একেবারে নাছোড়বান্দা, শেষ পর্যন্ত চাঁদা আদায় করে ছাড়লে।
১৭৭. নাড়ি নক্ষত্র জানা (আনুপূর্বিক সমস্ত কিছু জানা) : আমি চৌধুরী পরিবারের নাড়ি নক্ষত্র জানি, আর তুমি এসেছ এ ব্যাপারে আমাকে ওয়াকিবহাল করতে।
১৭৮. নাড়ির খবর (সকল খবর) নাড়ির খবর জেনেই তবে আমি একাজ করব।
১৭৯. নিজের কোলে ঝোল টানা (নিজের প্রাপ্য অনুচিতভাবে বেশি করে দেখানো): চেয়ারম্যান সাহেব সমাজের উন্নতি করবেন কী, তিনি সব ব্যাপারে নিজের কোলে ঝোল টানতে ব্যস্ত।
১৮০. নজর লাগা (দৃষ্টিতে নষ্ট হওয়া) : নজর লেগে ছেলেটি দিন দিন শুকিয়ে যাচ্ছে।
১৮১. নিমরজি (অল্পরাজি) : দলে আসবে বলে লোকটা নিমরাজি হয়েছে।


১৮২. পটল তোলা (মারা যাওয়া) : জনতার হাতে বেদম মার খেয়ে চোরটা গত রাতে পটল তুলেছে।
১৮৩. পরের ধনে পোদ্দারি (পরের টাকায় বাহাদুরি) : পরের ধনে পোদ্দারি সবাই করতে পারে- নিজের টাকা খরচ করে করলে বুঝতাম বাহাদুরি।
১৮৪. পুকুর চুরি (ব্যাপক চুরি) : একটু আধটু হলে না হয় বুঝতাম, এ যে পুকুর চুরি- গোটা প্রতিষ্ঠানটাই বেমালুম গায়েব।
১৮৫. পোয়াবারো (সুসময়) : মিলের ম্যানেজার অফিসে নেই, ছোটকর্তার তো এখন পোয়াবারো।
১৮৬. পায়াভারী (অহংকার) : এম.এ-তে ভালো রেজাল্ট করে তোমার পায়াভারী হয়েছে বুঝি।
১৮৭. পাথরে পাঁচ কিল (নিরাপদ ও উন্নত অবস্থা) : নিজে মোটা মাইনের চাকরি কর, ব্যবসা থেকে প্রচুর আয় আসছে, তোমার তো এখন পাথরে পাঁচ কিল।
১৮৮. পুঁটি মাছের প্রাণ (ক্ষীণ প্রাণ) : ওতো পুঁটি মাছের প্রাণ- ওকে ধমক ধামক দিয়ে কী লাভ।
১৮৯. পারের কড়ি (পরকালের জন্য সঞ্চয়) : সংসারের মোহে পরকালের কথা ভুলে গেলে চলবে না, পারের কড়ি সংগ্রহ করা দরকার।
১৯০. পিঠ টান দেওয়া (ভয়ে পালিয়ে যাওয়া) : জনগণের প্রতিরোধের মুখে পিঠ টান দিতে বাধ্য হলো নেতারা।
১৯১. পগার পার (পালিয়ে যাওয়া) : পুলিশ আসবার আগেই চোর পগার পার হলো।


১৯২. ফতে নবাব (নবাবি চালের নির্ধন ব্যক্তি) : ওর পোশাক-আশাক দেখে ভুলো না ও একটা ফতে নবাব।
১৯৩. ফুলবাবু (সৌখিন সজা-সজ্জাধারী) : ফুলবাবু সেজে ঘুরে বেড়ালে পেটের ভাত যোগাড় হবে কোত্থেকে।


১৯৪. বউ কাঁটকী (বৌকে যে জ বালাতন করে) : বৌটিকে সারাদিন খাটায়- এমন বৌ কাঁটকী শাশুড়ী তো দেখিনি।
১৯৫. বালির বাঁধ (ক্ষণস্থায়ী) : বড় মানুষের সঙ্গে বন্ধুত ব আর বালির বাঁধ সমান- এই খুশি এই নারাজ।
১৯৬. বক ধার্মিক (ভ-) : লোকটি দেখতে সাধুর মতো হলে কী হবে আসলে একটা বকধার্মিক- লোকের সর্বনাশ করতে জুড়ি নেই।
১৯৭. বাঁ হাতের ব্যাপার (ঘুষ) : অফিসে বাঁ হাতের ব্যাপার খুব চলছে- স্বাভাবিকভাবে কোনো কাজই হতে চায় না।
১৯৮. বাঘের দুধ (দুষ্প্রাপ্য বস্ত্ত) : টাকা হলে বাঘের দুধও পাওয়া যায়।
১৯৯. বুকের পাটা (সাহস) : বয়স কম হলে কী হবে, ছেলেটার বুকের পাটা আছে, না হলে তুফানের মধ্যে এত বড় নদী সাঁতরে পার হতে পারে।
২০০. বুদ্ধির ঢেঁকি (বোকা) : ও যে বুদ্ধির ঢেঁকি, ওকে দিয়ে এ শক্ত কাজ হবে না।
২০১. ব্যাঙের আধুলি (অতি সামান্য ধন) : ব্যাঙের আধুলি পেয়েই এত লাফাচ্ছ: বেশি টাকা পেলে কী করবে ভেবে পাচ্ছি না।
২০২. ব্যাঙের সর্দি (অসম্ভব) : ডাকাতকে দেখাচ্ছ পুলিশের ভয়? ব্যাঙের কোনো দিন সর্দি হয় নাকি!
২০৩. বিসমিল্লায় গলদ (গোড়ায় ভুল) : অঙ্ক মিলবে কী করে, বিসমিল্লায় গলদ করে বসে আছ।
২০৪. বড় মুখ (গর্ব) : বড় মুখ করে এসেছিলাম, ফিরিয়ে দিও না ভাই!
২০৫. বাগে পাওয়া (আয়ত্তের মধ্যে পাওয়া) : এবার তোমাকে বাগে পেয়েছি - সহজে ছাড়ছিনে।
২০৬. বিনা মেঘে বজ্রপাত (আকস্মিক বিপদ): পুত্রের মৃত্যু সংবাদ বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতোই।
২০৭. বসন্তের কোকিল (সুসময়ের বন্ধু) : টাকা পয়সা হাতে দেখলেই বসন্তের কোকিলরা ভিড় জমায়।
২০৮. বাদুড় ঝোলা (বাদুড়ের ন্যায় ঝুলে থাকা) : লোকজনের ভিড়ে বাসে উঠতে না পেরে শেষ পর্যন্ত পা-দানিতে দাঁড়িয়ে বাদুড় ঝোলা হয়ে যেতে হলো।
২০৯. বিড়াল তপস্বী (ভ-) : বৃন্ধ বয়সে সাধু সেজে যারা সারা জীবনের পাপকে ঢাকতে চাচ্ছে, বিড়াল তপস্বী তারাই।
২১০. বিষবৃক্ষ (অন্যায়ের কেন্দ্রভূমি) : নিজের হাতে বিষবৃক্ষ রোপণ করলে তার ফল তোমাকেই ভোগ করতে হবে।
২১১. বিদুরের খুদ (শ্রদ্ধার সামান্য দান) : আমার এ বিদুরের খুদ দিয়ে যদি সমাজের কোনো মঙ্গল হয় তাহলে নিজকে ধন্য মনে করব।


২১২. ভরাডুবি (সব হারান) : পাটের দাম পড়ে গিয়ে ব্যবসায়ের ভরাডুবি হয়েছে : এখন একরকম সর্বসান্ত।
২১৩. ভস্মে ঘি ঢালা (অপাত্রে দান) : তোমার মতো অপদার্থকে অর্থসাহায্য করা আর ভস্মে ঘি ঢালা একই কথা।
২১৪. ভূষন্ডি কাক (দীর্ঘায়ু) : ভূষন্ডি কাক এই বুড়িটা মরেও না, তার রোগ শোকও ভালো হয় না।
২১৫. ভুঁইফোড় (অর্বাচীন) : রবীন্দ্রনাথের নাটক নির্বাচন না করে ভুঁইফোড় লেখকের নাটক নির্বাচন করেছ কেন?
২১৬. ভিজা বিড়াল (কপট) : ওতো একটা ভিজা বিড়াল, চেহারা শান্ত হলেও পেটে যত শয়তানি বুদ্ধি।
২১৭. ভিটায় ঘুঘু চরান (সর্বনাশ করা) : তুমি আমার পেছনে লেগেছ- তোমার ভিটায় ঘুঘু চরিয়ে ছাড়ব।
২১৮. ভানুমতির খেল (ভোজবাজি, ভেল্কি) : খুব তো ভানুমতির খেল দেখালে, তুমি যে এমন ফাঁকিবাজ তা আগে জানলে তোমাকে এ কাজের ভার দিতাম না।
২১৯. ভাগের মা গঙ্গা পায় না (অনেকের ওপর একই দায়িত ব থাকলে সেটা আদৌ পালিত হয় না) : পাঁচ গ্রাম মিলে নাটকের মহড়া দিলে, এখন মঞ্চস্থ করতে টাকা নেই। সাধে কী কথায় বলে- ভাগের মা গঙ্গা পায় না।
২২০. ভূতের বাপের শ্রাদ্ধ (প্রচুর ব্যয় হওয়া সত্ত্বেও কাজের কোনো সার্থকতা নেই) : পরের টাকা হাতে পেলে অযথা ভূতের বাপের শ্রাদ্ধ করতে বাধে না।
২২১. ভূতের বেগার (অহেতুক শ্রম) : সারাটা জীবন অফিসে ভূতের বেগার খেটে গেলাম, লাভ পেলাম না কিছুই।
২২২. ভেরেন্ডা ভাজা (অকাজের কাজ) : হাতে কাজকর্ম নেই তা বলে বসে বসে ভেরেন্ডা ভাজছি।


২২৩. মিছরির ছুরি (মুখে মধু অন্তরে বিষ) : ওর কথায় যত মধুই থাক ও মিছরির ছুরি।
২২৪. মগের মুলস্নুক (অরাজক দেশ) : একি মগের মুলস্নুক পেয়েছ যা খুশি তাই করবে।
২২৫. মাছের মা (নির্মম) : তুমি তো মাছের মা, নিজের ছেলের জন্যও তোমার মায়া মমতা নাই।
২২৬. মান্ধাতার আমল (পুরনো আমল) : মান্ধাতার আমলের নয়, আধুনিক বিজ্ঞান-নির্ভর চাষাবাদ করে দেশকে খাদ্যে স্বনির্ভর করতে হবে।
২২৭. মাকাল ফল (অন্তঃসারশূন্য) : দেখতে সুন্দর হলে কী হবে, আসলে ও মাকাল ফল, গুণ বলতে কিছু নেই।
২২৮. মাছের মায়ের পুত্রশোক (লোক দেখানো কৃত্রিম সহানুভূতি) : নিজের ছেলে মরলে কাঁদল না, সতীনের ছেলের জন্য কান্নাকাটির শেষ নেই - একেই বলে মাছের মায়ের পুত্র শোক।
২২৯. মাটির মানুষ (সরল ব্যক্তি) : রামবাবু সত্যি মাটির মানুষ, সকলের প্রতি তিনি সমান ব্যবহার করেন।
২৩০. মাথার মণি (পরম সমাদরে রাখা ব্যক্তি) : আমাদের অধ্যক্ষ সকালের মাথার মণি।
২৩১. মাথা খাওয়া (প্রশ্রয় দিয়ে নষ্ট করা) : ছেলেটাকে প্রশ্রয় দিয়ে তারা মাথা খেয়েছে।
২৩২. মেও ধরা (বিপদ ঠেকানো) : সবাই যার যার ভাবে চলে গেল, মেও ধরার কেউ নেই।
২৩৩. মণিকাঞ্চন যোগ (অপূর্ব মিল) : যেমন সুশিক্ষক্ষত ছেলে তেমনি সুশিক্ষক্ষতা মেয়ে, একেবারে মণিকাঞ্চন যোগ।
২৩৪. মামাবাড়ির আবদার (অতিরিক্ত দাবি যা যুক্তিসংগত নয়) : এটা মামাবাড়ির আবদার পেয়েছ যা খুশি তাই চাবে?


২৩৫. যত গর্জে তত বর্ষে না (আড়ম্বরের অনুপাতে ফল সামান্য) : তখনই বুঝতে পেরেছিলাম যত গর্জে তত বর্ষে না; সেলিম সাহেব যতটা রেগে গিয়েছিলেন তার তুলনায় প্রতিফল সামান্য।
২৩৬. যমের অরুচি (এমন ব্যক্তি যাকে যমও ছোঁয় না) : বুড়োটা পায়খানা প্রসাব করে একাকার করে রাখে, মরণ তার হয় না, সে একেবারে যমের অরুচি।


২৩৭. রাঘব বোয়াল (অতি ক্ষমতাধর) : ওতো একটা রাঘব বোয়াল, সুযোগ পেলে সহায় সম্পত্তি সবই গিলে খাবে।
২৩৮. রুই-কাতলা (গণমান্য লোক) : এখানে অনেক রুই-কাতলা এসেছিল, আমার মতো সামান্য লোকের জায়গা হবে কী করে?
২৩৯. রগচটা (বদরাগি) : রগচটা লোকের সাথে বন্ধুত ব রক্ষা কঠিন কাজ।
২৪০. রক্তের টান (স্ববংশ প্রীতি) : প্রত্যেক মানুষেরই আপন জনের প্রতি রক্তের টান আছে।
২৪১. রাখে আল্লাহ মারে কে (বিপদ থেকে যে রক্ষা পাবার মতো সে রক্ষা পাবেই) : লঞ্চ ডুবে অনেকে মারা গেল, আমি ভাসমান কাঠ ধরে কোনো রকম বেঁচে গেলাম। রাখে আল্লাহ মারে কে।
২৪২. রাবণের চিতা (অনির্বাণ শোক) : উপর্যুপরি তিনটি ছেলের মৃত্যুশোক বৃদ্ধের বুকে রাবণের চিতার মতো জ্বলছে।


২৪৩. লেফাফা দুরস্ত ( বাইরের পরিপাটি ভাব) : লোকটা পোশাকে আশাকে লেফাফাদুরস্ত কিন্তু লেখাপড়া একটুও জানে না।
২৪৪. লম্বা দেওয়া (পালিয়ে আত্মরক্ষা) : পুলিশ দেখা মাত্র চোরটা লম্বা ছিল।


২৪৫. শাঁখের করাত (উভয় সংকট) : আমার হয়েছে শাঁখের করাত -এখন হ্যাঁ বললেও বিপদ না বললেও বিপদ।
২৪৬. শিরে সংক্রান্তি (আসন্ন বিপদ) : সামনের মাসে চাকুরি থেকে অবসর নেব, এখন আমার শিরে সংক্রান্তি; তোমার সঙ্গে বসে আড্ডা দেবার সময় নেই আমার।
২৪৭. শকুনি মামা (অসৎ বুদ্ধিদাতা আত্মীয়) : অসৎ কাজে প্রেরণা দিতে শকুনি মামারা চিরকালই লেগে আছে।
২৪৮. শাপে বর (আপাতদৃষ্টিতে মন্দ হলেও পরিণামে যা ভালো) : চৌধুরী বাড়ির শিক্ষক্ষতা মেয়ের সাথে বিয়ে ভেঙে যাওয়ার শফিক মনে কষ্ট পেলেও এ তার পক্ষক্ষ শাপে বর হয়েছে, কারণ মেয়েটির নাকি ক্যান্সার।
২৪৯. শাক দিয়ে মাছ ঢাকা (নিন্দনীয় কাজ গোপন করার চেষ্টা) : ছেলের কুকর্ম ঢাকতে গিয়ে মিথ্যা বললেন হাজি সাহেব, শাক দিয়ে কি মাছ ঢাকা যায়।
২৫০. শিবরাত্রির সলতে (একমাত্র ভরসা) : বিধবার একমাত্র ছেলেটি তার শিবরাত্রির সলতে।
২৫১. শিয়ালের যুক্তি (নিরর্থক পরামর্শ) : ধূর্ত ব্যক্তিদের পরামর্শ গ্রহণ করা ঠিক নয়, কারণ তারা শিয়ালের যুক্তি দিয়ে হয়রানি করতে ওস্তাদ।


২৫২. ষোলকলা (সম্পূর্ণ) : জীবনে যা কাম্য সবই পেয়েছেন তিনি: বলা চলে ষোলকলা পূর্ণ হয়েছে তাঁর।


২৫৩. সোনায় সোহাগা (সুন্দর মিলন) : যেমন বর তেমন কনে, একেই বলে সোনায় সোহাগা।
২৫৪. সাপে নেউলে (শত্রুভাব) : দু ভাইয়ে এখন সাপে-নেউলে ভাব, কেউ কারো মুখদর্শন পর্যন্ত করে না।
২৫৫. সরস্বতীর বরপুত্র (বিদ্বান) : সরস্বতীর বরপুত্ররা একটা দেশ ও জাতির গৌরব।
২৫৬. সবুরে মেওয়া ফলে (ধৈর্য্যলব্ধ সুফল) : এতে অধৈর্য হলে চলবে কেন, তুমি তো জানো সবুরে মেওয়া ফলে।
২৫৭. সাত পাঁচ (নানা রকম) : সাত পাঁচ ভাববার সময় নেই, শত্রু দোর গোড়ায়, এখনই বেরিয়ে পড়।
২৫৮. সোনার পাথর বাটি (অসম্ভব ব্যাপার) : যে সংবাদ তুমি পরিবেশন করলে তা সোনার পাথর বাটির মতোই অসম্ভব ও অলীক।
২৫৯. সুখের পায়রা (সৌভাগ্যের সহচর এবং দুর্দিনে যে থাকে না) : সুদিনে সুখের পায়রা চারদিক ঘিরে থাকে।


২৬০. হাটে হাঁড়ি ভাঙা (গোপন কথা ফাঁস করা) : আমাকে জব্দ করার চেষ্টা করলে হাটে হাঁড়ি ভেঙে তোমার সব গোপন কথা ফাঁস করে দেব।
২৬১. হাত টান (চুরির অভ্যাস) : টাকা পয়সা সাবধানে রাখ, চাকরটার হাত টানের অভ্যাস আছে।
২৬২. হ-য-ব-র-ল ( বিশৃঙ্খলা) : অফিসের ফাইলপত্র সব হ-য-ব-র-ল হয়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে।
২৬৩. হাতে খড়ি (আরম্ভ) : ব্যবসায়ে ছেলেটার হাতে খড়ি দিলাম, কিছু করে খেতে হবে তো।
২৬৪. হরিষে বিষাদ (আনন্দে বিষাদ) : যেদিন চাকরি পাবার খবর এল তার পরের দিনই বাবা মারা গেলেন : এ যে হরিষে বিষাদ।
২৬৫. হস্তীমূর্খ (বোকা) : তুমি একটা হস্তীমুর্খ -দেহ বিরাট হলে কী হবে মাথায় একটুও বুদ্ধি নেই তোমার।
২৬৬. হাড়ে বাতাস লাগা (শান্তি পাওয়া) : চোরটা মরেছে; এবার গাঁয়ের লোকের হাড়ে বাতাস লাগবে।
২৬৭. হা পিত্যেশ (আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করা) : সেই সকাল থেকে তোমার জন্য হা পিত্যেশ করে বসে আছি, আর তুমি এলে কিনা রাত দশটায়।
২৬৮. হাতের পাঁচ (শেষ অবলম্বন) : না ভাই, হাতের পাঁচ এ ক’টি টাকা তোমাকে দিয়ে আমি ঝুঁকি নিতে রাজি নই।
২৬৯. হাঁড়ির হাল (অত্যন্ত দূরবস্থা) : ওমা, তোমার এ হাঁড়ির হাল অবস্থা কেমন করে হলো?
২৭০. হালে পানি না পাওয়া (কিছুতেই সুরাহা না করতে পারা) : দুর্দিনে আমার সংসারতরী হালে পানি পাচ্ছে না।
২৭১. হাড় হাভাতে (অভাবী) : তোমার এ হাড় হাভাতে অবস্থার জন্য তুমিই দায়ী।
২৭২. হাড়ে দুর্বা গজানো (লাঞ্ছনার একশেষ হওয়া) : ছেলেপেলেদের ব্যবহার আমার হাড়ে দুর্বা গজিয়েছে, আজ আমি অথর্ব হয়ে পড়ে আছি বলেই এ অবস্থা।
২৭৩. হিরের টুকরো (অতি মূল্যবান) : রশিদ সাহেবের ছেলেগুলো এক একটি হিরের টুকরো, লেখাপড়ায় সবাই ভালো।
২৭৪. হাঁড় জুড়ানো (শান্তি পাওয়া) : সতীনের ছেলে বিদেশ চলে যাওয়ায় আমার হাঁড় জুড়ালো।
২৭৫. হাড় হদ্দ (নাড়ি নক্ষত্র) : আমি তার হাড় হদ্দ সবই জানি।
২৭৬. হাতির খোরাক (বেশি খরচ) : এ সংসারে হাতির খোরাক যোগাতে আমি জীবনপাত করলাম, অথচ কেউ তার মূল্য দিল না।

বাগধারা pdf

 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
tags:

বাগধারা
বাংলা বাগধারা
বাগধারা pdf
বাংলা বাগধারা ও প্রবাদ প্রবচন
গুরুত্বপূর্ণ বাগধারা pdf
বাংলা বাগধারা pdf download
বাগধারা pdf download
রাবণের চিতা বাগধারা
চক্ষুদান বাগধারা
শব্দের যোগ্যতার বিকাশ ও বাগধারা
বাংলা ব্যাকরণ বাগধারা

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comment below if you have any questions

অফিস/বেসিক কম্পিউটার কোর্স

এম.এস. ওয়ার্ড
এম.এস. এক্সেল
এম.এস. পাওয়ার পয়েন্ট
বাংলা টাইপিং, ইংরেজি টাইপিং
ই-মেইল ও ইন্টারনেট

মেয়াদ: ২ মাস (সপ্তাহে ৪দিন)
রবি+সোম+মঙ্গল+বুধবার

কোর্স ফি: ৪,০০০/-

গ্রাফিক ডিজাইন কোর্স

এডোব ফটোশপ
এডোব ইলাস্ট্রেটর

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৮,৫০০/-

ওয়েব ডিজাইন কোর্স

এইচটিএমএল ৫
সিএসএস ৩

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৮,৫০০/-

ভিডিও এডিটিং কোর্স

এডোব প্রিমিয়ার প্রো

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৯,৫০০/-

ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স

ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম, এসইও, গুগল এডস, ইমেইল মার্কেটিং

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ১২,৫০০/-

অ্যাডভান্সড এক্সেল

ভি-লুকআপ, এইচ-লুকআপ, অ্যাডভান্সড ফাংশনসহ অনেক কিছু...

মেয়াদ: ২ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৬,৫০০/-

ক্লাস টাইম

সকাল থেকে দুপুর

১ম ব্যাচ: সকাল ০৮:০০-০৯:৩০

২য় ব্যাচ: সকাল ০৯:৩০-১১:০০

৩য় ব্যাচ: সকাল ১১:০০-১২:৩০

৪র্থ ব্যাচ: দুপুর ১২:৩০-০২:০০

বিকাল থেকে রাত

৫ম ব্যাচ: বিকাল ০৪:০০-০৫:৩০

৬ষ্ঠ ব্যাচ: বিকাল ০৫:৩০-০৭:০০

৭ম ব্যাচ: সন্ধ্যা ০৭:০০-০৮:৩০

৮ম ব্যাচ: রাত ০৮:৩০-১০:০০

যোগাযোগ:

আলআমিন কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র

৭৯৬, পশ্চিম কাজীপাড়া বাসস্ট্যান্ড,

[মেট্রোরেলের ২৮৮ নং পিলারের পশ্চিম পাশে]

কাজীপাড়া, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬

মোবাইল: 01785 474 006

ইমেইল: alamincomputer1216@gmail.com

ফেসবুক: facebook.com/ac01785474006

ব্লগ: alamincomputertc.blogspot.com

Contact form

নাম

ইমেল *

বার্তা *