বাংলাদেশের উৎসব অনুচ্ছেদ
বৈচিত্র্যময় দেশ আমাদের এই বাংলাদেশ। উৎসবে-উপলক্ষ্যে-আয়োজনে বাংলাদেশ প্রায় সারা বছরই মুখর থাকে। বিভিন্ন উৎসব পালনের মধ্য দিয়ে বাঙালিরা প্রাণচঞ্চল হয়ে ওঠে। এদেশের শত দুঃখ-কষ্ট ও দারিদ্রে্যর মধ্যেও মানুষ উৎসবমুখী। এই উৎসবগুলোর মধ্যে রয়েছে সামাজিক-সাংস্কৃতিক-পারিবারিক-ধর্মীয় ও জাতীয় উৎসব। বাংলাদেশ একটি উদার সহিষ্ণু দেশ। জাতীয় নানা উৎসবের মধ্যে তার প্রতিফলন দেখা যায়। নববর্ষের উৎসব বাংলাদেশের সব মানুষের উৎসব। এটি একটি সর্বজনীন ধর্মনিরপেক্ষ উৎসব। বর্ণ-ধর্ম নির্বিশেষে সব শ্রেণির মানুষ বাঙালি হিসেবে নিজের পরিচয় তুলে ধরে। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক শাশ্বত পরিচয়টি ফুটে ওঠে। সামাজিক উৎসবের মধ্য দিয়ে মানুষের সমাজবন্ধনসম্প্রীতি ও আমত্মরিকতার পরিচয় পাওয়া যায়। পারিবারিক উৎসব ও সামাজিক উৎসবের মধ্যে মূলত তেমন পার্থক্য করা যায় না। পারিবারিক উৎসবগুলোও সামাজিক উৎসবের নামামত্মর। বিবাহ-জন্মদিন প্রভৃতি উৎসবগুলো পারিবারিক গল্প ছাপিয়ে সামাজিক উৎসবের রূপ লাভ করে। কৃষিভিত্তিক নবান্ন উৎসবটিও একইসঙ্গে পারিবারিক ও সামজিক উৎসব হয়ে ওঠে। নবান্নতে আত্মীয়স্বজন ছাড়াও পাড়া-প্রতিবেশিদেরও আমন্ত্রণ জানানো হয়। বাংলাদেশে ধর্মীয় উৎসবগুলোর মধ্যে রয়েছে ইদ, দুর্গাপূজা, বড়দিন ও বৌদ্ধ পূর্ণিমা। মুসলিম-হিন্দু-বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের মানুষ নিজ নিজ রীতি মেনে এইসব উৎসব পালন করে থাকে। উৎসব বাঙালির প্রাণ, বাঙালির আনন্দ। ধর্মীয় উৎসবগুলোও এখন সামাজিক রূপ নিয়েছে। বছরব্যাপী উৎসব হওয়াতে আমাদের অর্থনীতি ও ব্যবসাবাণিজ্যেও এর দারুণ সুফল লক্ষ্য করা যায়। ব্যবসাবাণিজ্য চলে, ভালো বেচাকেনা হয়, মানুষের জীবনে সচ্ছলতা দেখা দেয়। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির সাথে সাথে মানুষের জীবনমানের উন্নতি ঘটে।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comment below if you have any questions