অনুচ্ছেদ নারী শিক্ষা
জাতীয় উন্নয়নে নারীশিক্ষার গুরুতব অপরিসীম। কারণ নারীরাও দেশের মানবসম্পদ। আমাদের দেশের জনসংখ্যার অর্ধেক নারী। আমাদের সামাজিক-অর্থনৈতিক-সাংস্কৃতিক এবং রাজনৈতিক অগ্রগতিতে এখন নারীদের জয়জয়কার। গুহাবাসী আদিম সমাজে নরনারীদের যৌথ চেষ্টার ফলেই গড়ে উঠেছে আজকের সভ্যতা। সামমত্ম যুগে ধর্ম ও নৈতিক অনুশাসনের মাধ্যমে নারীদের ঘরে বন্দি করে রাখা হতো। শিক্ষা দূরে থাক, নারীদের মানুষ হিসেবেই গণ্য করা হতো না। ভোগের পণ্য হিসেবে মনে করা হতো তাদের। কিন্তু সেই সময় পেছনে ফেলে নারীদের বিজয়গাথা এখন চারদিকে শোনা যাচ্ছে। মেধায়, দক্ষতায়, কর্মে ও শিক্ষায় নারীরা আজ বিশবকে জয় করেছে। ইউরোপের মতো উন্নত বিশেব নারীরা শিক্ষা-সমাজ-অর্থনীতি ও রাজনীতির ক্ষেত্রে ব্যাপক স্থান দখল করে নিয়েছে। কিন্তু এশিয়া, আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্যের কিছু দেশে নারীশিক্ষা দারুণভাবে ব্যাহত হচ্ছে। ওই সব স্থানে যেন প্রাচীন অন্ধকার ফিরে এসেছে। ধর্মীর্য় ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে নারীদের কেবল যৌনদাসী বানানোর চেষ্টা চলছে। সমাজতান্ত্রিক বিশেব সবার মতো নারীদের জন্যও শিক্ষাকে কেবল বাধ্যতামূলক করা হয়নি, বরং তাদের নানারকম সুযোগসুবিধাও দেয়া হয়। বাংলাদেশের সংবিধানে নারীদের অধিকারের কথা বলা হলেও বাস্তবক্ষেত্রে তার সুযোগ সীমিত। পথশিশুরা অনেকেই এখনও শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত। বাল্যবিবাহের কারণে অনেক মেয়ের বিয়ে হয়ে যায়, ফলে শিক্ষাগ্রহণ আর হয় না। ইভ টিজিং ও এসিড সন্ত্রাসের ভয়ে অনেক মা-বাবা মেয়েদের স্কুলে পাঠাতে চায় না। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেত্রী, সংসদের স্পিকার প্রত্যেকেই নারী, পুলিশ প্রশাসন থেকে শুরু করে জেলা প্রশাসক, নারী উদ্যোক্তাসহ বিমানচালক এবং বেসরকারি নানা প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনে নারীরা যোগ্যতার সঙ্গে অধিষ্ঠিত হলেও নারীশিক্ষার ক্ষেত্রে আমাদের আরও অনেক উন্নতি করতে হবে। তবে এক্ষেত্রে শুধু সরকারের দিকে তাকিয়ে না থেকে সমাজের সকলকেই নারীশিক্ষার বিস্তারে এগিয়ে আসতে হবে।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comment below if you have any questions