Home » » জাবেদা কাকে বলে

জাবেদা কাকে বলে

জাবেদা কাকে বলে

জাবেদা (Journal)
যে হিসাবের বইতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের লেনদেনসমূহ সংঘটিত হওয়ার সাথে সাথে দু’তরফা দাখিলা পদ্ধতি অনুযায়ী ডেবিট ও ক্রেডিট নির্ণয় করে তারিখের ক্রমানুসারে ব্যাখ্যাসহ লিপিবদ্ধ করা হয় তাকে জাবেদা বলে। ইংরেজী ‘Journal’ শব্দটি ফরাসী ‘Jour’ শব্দ থেকে এসেছে। ‘Jour’ শব্দটির অর্থ দিবস। দৈনন্দিন লেনদেনগুলো প্রতিদিন এই বইতে লেখা হয় বলে এর নাম হয়েছে Journal বা জাবেদা।

প্রতিদিন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে অসংখ্য লেনদেন সংঘটিত হয়। এই সমস্ত লেনদেন দু’তরফা দাখিলা পদ্ধতি অনুযায়ী ডেবিট ও ক্রেডিট নির্ণয় করে তারিখ ক্রমানুসারে ধারাবাহিকভাবে জাবেদায় লিপিবদ্ধ করা হয়। প্রতিটি লেনদেন কিভাবে সংঘটিত হয়েছে তার প্রাসঙ্গিক ব্যাখ্যাও জাবেদায় লেখা হয়। জাবেদার প্রধান উদ্দেশ্য হল লেনদেনসমূহের হিসাব তারিখ অনুযায়ী প্রাথমিকভাবে লিখে রাখা এবং পরে এই বই হতে লেনদেনসমূহের হিসাব স্থায়ী ও পাকাপাকিভাবে খতিয়ানে স্থানান্তর করা। জাবেদা বিভিন্ন নামে পরিচিত। যথাঃ হিসাবের প্রাথমিক বই (Primary Book), মৌলিক হিসাব বই (Book of Original Entry ), সাহায্যকারী হিসাব বই (Subsidiary Book), দৈনিক হিসাব বই (Day Book), ধারাবাহিক হিসাব বই (Chronological Book) ইত্যাদি।

জাবেদার বৈশিষ্ট্য (Features of Journal)

জাবেদার সংজ্ঞা ও এর লিখন পদ্ধতি থেকে নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যগুলো লক্ষ করা যায়ঃ

১. প্রাথমিক হিসাবের বইঃ লেনদেনসমূহ সংঘটিত হওয়ার পর সর্ব প্রথম জাবেদায় লিপিবদ্ধ করা হয় তাই জাবেদাকে হিসাবের প্রাথমিক বই বলা হয়।

২. দৈনন্দিন হিসাবঃ লেনদেন যে দিন সংঘটিত হয় সে দিনই জাবেদায় লিপিবদ্ধ করা হয়। কোন অবস্থাতেই এর ব্যতিক্রম হতে পারে না।

৩. ধারাবাহিকতাঃ সংঘটিত লেনদেনসমূহ ধারাবাহিকভাবে জাবেদায় লিপিবদ্ধ করা হয়। এজন্য জাবেদাকে ধারাবাহিক হিসাবের বইও বলা হয়।

৪. লেনদেনের দ্বৈতসত্তা বিশ্লেষণঃ প্রতিটা লেনদেন সংঘটিত হওয়ার পর দু’তরফা দাখিলা পদ্ধতি অনুযায়ী বিশ্লেষণ করে এক পক্ষকে ডেবিট ও অন্য পক্ষকে ক্রেডিট করে হিসাবভুক্ত করা হয়।

৫. ব্যাখ্যা প্রদানঃ প্রতিটি লেনদেন জাবেদাভুক্তকরণের সময় ব্যাখ্যা লিপিবদ্ধ করা হয়, যা ভবিষ্যতে প্রয়োজনের সময় রেফারেন্স হিসাবে ব্যবহৃত হতে পারে।

৬. সমপরিমাণ অর্থঃ প্রতিটি লেনদেনের একটি হিসাবকে যে পরিমাণ টাকায় ডেবিট করা হয় অপর হিসাবকে সমপরিমাণ টাকায় ক্রেডিট করে জাবেদাভুক্ত করা হয়।

৭. নির্দিষ্ট ছকঃ সুনির্দিষ্ট ছক অনুযায়ী লেনদেনগুলোকে জাবেদায় লিপিবদ্ধ করা হয়। জাবেদার ছকে মোট পাঁচটি কলাম থাকে, যথাঃ তারিখ, বিবরণ, খতিয়ান পৃষ্ঠা, ডেবিট টাকা ও ক্রেডিট টাকা।

৮. শ্রেণীবিভাগঃ ব্যবসায়ের ধরন, লেনদেনের প্রকৃতি ও সংখ্যা, প্রয়োজন ও রীতিনীতির উপর ভিত্তি করে জাবেদার শ্রেণীবিভাগ করা হয়। যথাঃ নগদান বই, ক্রয় বই, বিক্রয় বই, ক্রয় ফেরত বই, বিক্রয় ফেরত বই, প্রাপ্য বিল বই, প্রদেয় বিল বই ও প্রকৃত জাবেদা।

৯. খতিয়ান হিসাবের কাজ সহজিকরণঃ লেনদেন প্রাথমিকভাবে জাবেদায় লেখা হয়। পরে শ্রেণীবদ্ধ করে খতিয়ান হিসাবে স্থানান্তর করা হয়। এক্ষেত্রে জাবেদায় লিখন খতিয়ান হিসাব প্রস্তুতের কাজ সহজ করে।

১০. স্থায়ী দলিলঃ জাবেদায় লেনদেন লিপিবদ্ধ করলে তা স্থায়ী দলিলে পরিণত হয়। লেনদেন সংক্রান্ত কোন তথ্য প্রয়োজন হলে তা জাবেদা থেকেই সংগ্রহ করা হয়।

জাবেদার প্রয়োজনীয়তা (Necessity of Journal):
লেনদেনের হিসাব যদি সরাসরি খতিয়ানে লেখা হয়, তবে নির্ভুল, সংক্ষিপ্ত ও পরিস্কার হিসাব সংরক্ষণে অসুবিধা দেখা দেবে এবং খতিয়ান হিসাবে ক্রটি-বিচ্যুতি ও ভুল-ভ্রান্তির সম্ভাবনা বাড়বে। এসব অসুবিধা দূর করার জন্য এবং সুশৃংখলভাবে খতিয়ান হিসাব সংরক্ষণের জন্য প্রাথমিক হিসাবের বই বা জাবেদার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।

নিম্নে জাবেদার প্রয়োজনীয়তা বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে বর্ণনা করা হলঃ
১. লেনদেনের তথ্য কেন্দ্রঃ জাবেদায় লেনদেনগুলো তারিখ অনুযায়ী প্রতিদিন জাবেদায় লেখা হয় বলে একে আর্থিক লেনদেনের তথ্য কেন্দ্র বলা হয়। লেনদেন সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য জাবেদা থেকে জানা যায়।

২. লেনদেনের পরিমাণঃ প্রতিদিন কতগুলো লেনদেন সংঘটিত হলো তা জাবেদা থেকেই জানা যায়। লেনদেন সরাসরি খতিয়ানে স্থানান্তর করলে দৈনন্দিন লেনদেনের পরিমাণ জানা সম্ভব হবে না।

৩. লেনদেনের বিশ্লেষণঃ প্রতিটি লেনদেন জাবেদায় লিপিবদ্ধ করার আগে দু’তরফা দাখিলা পদ্ধতি অনুযায়ী বিশ্লেষণ করে ডেবিট ও ক্রেডিট নির্ণয় করা হয়। ফলে লেনদেনের সাথে সংশি-ষ্ট পক্ষসমূহের হিসাবখাত ও প্রকৃতি সম্পর্কে জানা যায়।

৪. খতিয়ানকে নির্ভুল, সংক্ষিপ্ত ও পরিচ্ছন্ন রাখাঃ লেনদেনসমূহকে তারিখ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যাখ্যাসহ জাবেদাভুক্ত করা হয়। ফলে খতিয়ানে সবিস্তারে লেখার প্রয়োজন হয় না। ফলে খতিয়ান হয় সংক্ষিপ্ত, নির্ভুল ও পরিচ্ছন্ন।

৫. ভবিষ্যত রেফারেন্সঃ জাবেদায় লেনদেন ব্যাখ্যাসহ লেখা হয়। ফলে ইহা ভবিষ্যতে প্রয়োজন হলে রেফারেন্স হিসাবে ব্যবহার করা হয়।

৬. লেনদেন বাদ পড়ার সম্ভাবনা হ্রাসঃ কোন লেনদেন সংঘটিত হওয়ার সাথে সাথে দ্বৈতসত্তায় জাবেদায় লেখা হয় বলে কোন লেনদেন হিসাবভুক্ত করা থেকে বাদ পড়ার সম্ভাবনা থাকে না।

৭. ভুল ও জালিয়াতির সম্ভাবনা হ্রাসঃ লেনদেনসমূহ প্রাথমিকভাবে তারিখ অনুসারে ব্যাখ্যাসহ জাবেদাভুক্তির ফলে ভুল ও জালিয়াতির সম্ভাবনা হ্রাস পায়। জাবেদার রেফারেন্স থেকে ভুল ও জালিয়াতি উদঘাটন ও প্রতিরোধ করা যায়।

৮. শ্রম বিভাগের সুবিধাঃ বড় প্রতিষ্ঠানে লেনদেনের প্রকৃতি অনুযায়ী জাবেদার শ্রেণীবিভাগ করে দক্ষতা অনুযায়ী বিভিন্ন লোককে কাজে নিয়োজিত করা সম্ভব। এতে দক্ষতা বাড়ে, সময় বাচে এবং হিসাবের কাজও নির্ভুল হয়।

৯. ভুল বুঝাবুঝি নিরসনঃ লেনদেন সংঘটিত হওয়ার সাথে সাথে জাবেদায় লিপিবদ্ধ করা হয় বলে সংশি-ষ্ট পক্ষসমূহের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝি সৃষ্টি হয় না বা হলেও সহজে মিমাংসা করা যায়।

১০. কার্যফল ও আর্থিক অবস্থার ক্ষেত্র সৃষ্টিঃ জাবেদার মাধ্যমে হিসাব প্রক্রিয়া আরম্ভ হয়। অতঃপর জাবেদাভুক্ত লেনদেনের সাহায্যে খতিয়ান হিসাব প্রস্তুত করা হয়। এরপর রেওয়ামিল ও আর্থিক বিবরণী প্রস্তুত করে ব্যবসায়ের কার্যফল ও আর্থিক অবস্থা নির্ণয় করা হয়।

যে হিসাবের বইতে লেনদেন সংঘটিত হওয়ার সাথে সাথে দ্বৈতসত্তা বিশ্লেষণ করে তারিখ ও ধারাবাহিকতা অনুসারে ব্যাখ্যাসহ প্রাথমিকভাবে লিপিবদ্ধ করা হয় তাকে জাবেদা বলে। লেনদেন জাবেদায় লিখন ছাড়াও খতিয়ানে স্থানান্তর করা যায় কিন্তু তাতে নির্ভুল, সংক্ষিপ্ত ও পরিচ্ছন্ন খতিয়ান হিসাব লিখন সম্ভব হবে না। তাই সংক্ষিপ্ত, নির্ভুল ও পরিচ্ছন্ন খতিয়ান হিসাব লিখন ও অন্যান্য সুবিধার জন্য জাবেদা অতি প্রয়োজনীয়।

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comment below if you have any questions

অফিস/বেসিক কম্পিউটার কোর্স

এম.এস. ওয়ার্ড
এম.এস. এক্সেল
এম.এস. পাওয়ার পয়েন্ট
বাংলা টাইপিং, ইংরেজি টাইপিং
ই-মেইল ও ইন্টারনেট

মেয়াদ: ২ মাস (সপ্তাহে ৪দিন)
রবি+সোম+মঙ্গল+বুধবার

কোর্স ফি: ৪,০০০/-

গ্রাফিক ডিজাইন কোর্স

এডোব ফটোশপ
এডোব ইলাস্ট্রেটর

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৮,৫০০/-

ওয়েব ডিজাইন কোর্স

এইচটিএমএল ৫
সিএসএস ৩

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৮,৫০০/-

ভিডিও এডিটিং কোর্স

এডোব প্রিমিয়ার প্রো

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৯,৫০০/-

ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স

ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম, এসইও, গুগল এডস, ইমেইল মার্কেটিং

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ১২,৫০০/-

অ্যাডভান্সড এক্সেল

ভি-লুকআপ, এইচ-লুকআপ, অ্যাডভান্সড ফাংশনসহ অনেক কিছু...

মেয়াদ: ২ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৬,৫০০/-

ক্লাস টাইম

সকাল থেকে দুপুর

১ম ব্যাচ: সকাল ০৮:০০-০৯:৩০

২য় ব্যাচ: সকাল ০৯:৩০-১১:০০

৩য় ব্যাচ: সকাল ১১:০০-১২:৩০

৪র্থ ব্যাচ: দুপুর ১২:৩০-০২:০০

বিকাল থেকে রাত

৫ম ব্যাচ: বিকাল ০৪:০০-০৫:৩০

৬ষ্ঠ ব্যাচ: বিকাল ০৫:৩০-০৭:০০

৭ম ব্যাচ: সন্ধ্যা ০৭:০০-০৮:৩০

৮ম ব্যাচ: রাত ০৮:৩০-১০:০০

যোগাযোগ:

আলআমিন কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র

৭৯৬, পশ্চিম কাজীপাড়া বাসস্ট্যান্ড,

[মেট্রোরেলের ২৮৮ নং পিলারের পশ্চিম পাশে]

কাজীপাড়া, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬

মোবাইল: 01785 474 006

ইমেইল: alamincomputer1216@gmail.com

ফেসবুক: facebook.com/ac01785474006

ব্লগ: alamincomputertc.blogspot.com

Contact form

নাম

ইমেল *

বার্তা *