ডেবিট ক্রেডিট কি
ডেবিট এবং ক্রেডিট (Debit and Credit)
হিসাবের ডেবিট ও ক্রেডিট নির্ণয়ের নিয়ম জানতে হলে প্রথমে ডেবিট ও ক্রেডিট বলতে কি বুঝায় তা জানা প্রয়োজন। ডেবিট এবং ক্রেডিট সম্পর্কে সঠিক ধারণা লাভ করা সহজ নয়। ডেবিট শব্দটির বাংলা প্রতিশব্দ খরচ বা বিকলন। আর ক্রেডিট শব্দটির বাংলা প্রতিশব্দ জমা বা আকলন। আমরা জানি, প্রতিটি লেনদেনে দুটি পক্ষ বা হিসাব সংশ্লিষ্ট থাকে। এক পক্ষ সুবিধা গ্রহণ করে, অপর পক্ষ সুবিধা প্রদান করে। সুবিধা গ্রহণকারী পক্ষকে ডেবিট এবং সুবিধা প্রদানকারী পক্ষকেকে ক্রেডিট বলা হয়। প্রকৃত অর্থে, হিসাব বিজ্ঞানের নিয়ম অনুযায়ী ডেবিট বলতে হিসাবের বাম পার্শবকে বুঝায়। আর ক্রেডিট বলতে হিসাবের ডান পাশর্বকে বুঝায। ডেবিট করা বলতে কোন লেনদেনের এক পক্ষকে হিসাবের বাম পাশের্ব লিপিবদ্ধ করা বুঝায় এবং ক্রেডিট করা বলতে লেনদেনের অপর পক্ষকে সংশি-ষ্ট হিসাবের ডান পাশের্ব লিপিবদ্ধ করা বুঝায়। যেমন: জনাব রহমান ১,০০,০০০ টাকা নিয়ে ব্যবসা শুরু করলেন। লেনদেনটিতে অন্তর্ভুক্ত হিসাব দুটি হলো ‘নগদান হিসাব’ ও ‘মূলধন হিসাব’। নগদান হিসাব ডেবিট হবে এবং মূলধন হিসাব ক্রেডিট হবে। অর্থাৎ নগদান হিসাবের ডেবিট তথা বাম পাশে ১,০০,০০০ টাকা লিখতে হবে এবং মূলধন হিসাবের ক্রেডিট তথা ডান পাশে ১,০০,০০০ টাকা লিখতে হবে। ডেবিট ও ক্রেডিটকে সংক্ষেপে যথাক্রমে ডে: ও ক্রে: দিয়ে বুঝানো হয়।
হিসাবের ডেবিট ও ক্রেডিট নির্ণয়ের নিয়ম (Rules for Determining Debit and Credit):
হিসাবের ডেবিট এবং ক্রেডিট দুই নিয়মে নির্ণয় করা যায়। যথা-
১. প্রচলিত বা হিসাব শ্রেণীভিত্তিক নিয়ম
২. আধুনিক বা হিসাব সমীকরণভিত্তিক নিয়ম
প্রচলিত বা হিসাব শ্রেণীভিত্তিক নিয়ম (Traditional or Accounts class-based Rules): প্রতিটি লেনদেনের সাথে জড়িত হিসাব দুটি চিহ্নিত করে তাদের কোনটি কোন্ শ্রেণীভুক্ত তা নির্ণয় করতে হবে। এরপর নিম্নের সূত্র অনুযায়ী ডেবিট ও ক্রেডিট নির্ধারণ করতে হবেঃ
ক. ব্যক্তিবাচক হিসাব (Personal Account): কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সাথে লেনদেন হলে যদি ঐ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সুবিধা গ্রহণ করে তাহলে ডেবিট আর যদি সুবিধা প্রদান করে তাহলে ক্রেডিট হবে।
খ. সম্পত্তিবাচক হিসাব (Real Account): লেনদেনের মাধ্যমে ব্যবসায়ে কোন সম্পত্তি আসলে উক্ত হিসাব ডেবিট এবং কোন সম্পত্তি ব্যবসায় থেকে চলে গেলে তা ক্রেডিট হবে।
গ. নামিক হিসাব (Nominal Account): ব্যবসায়ের সমস্ত ব্যয়, খরচ বা ক্ষতি সংক্রান্ত হিসাব ডেবিট এবং আয় বা লাভ সংক্রান্তত হিসাব ক্রেডিট হবে।
ডেবিট ও ক্রেডিট নির্ণয়ের উপরোক্ত নিয়মাবলী সুসষ্ট এবং যথাযথভাবে অনুসরণ করা হয়। তাই উক্ত নিয়মাবলীকে ডেবিট ও ক্রেডিট নির্ণয়ের স্বর্ণসূত্র (Golden Rules) বলা হয়।
সহজে মনে রাখার জন্য ডেবিট ও ক্রেডিট নির্ণয়ের স্বর্ণসূত্রটি সংক্ষেপে বলা যায়:
ক. ব্যক্তিবাচক হিসাবঃ গ্রহীতা ডেবিট এবং দাতা ক্রেডিট
খ. সম্পত্তিবাচক হিসাবঃ আগত সম্পত্তি ডেবিট এবং নির্গত সম্পত্তি ক্রেডিট
গ. নামিক হিসাবঃ ব্যয়, খরচ ও ক্ষতি ডেবিট এবং আয় ও লাভ ক্রেডিট।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comment below if you have any questions