Home » » ডায়াবেটিস কি

ডায়াবেটিস কি

ডায়াবেটিস কি

ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র এক প্রকার বিপাকজনিত রোগ। মানবদেহের রক্তে গ্লুকোজের স্বাভাবিক মাত্রা হলো ৮০-১২০ মি.গ্রা/ডেসি.লি। রক্তে যদি এ মাত্রা বেড়ে যায় তাহলে তাকে ডায়াবেটিস মেলিটাস বলে। এ রোগে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ দীর্ঘস্থায়ীভাবে বেড়ে যায়। ডায়াবেটিসে রক্তে শর্করার পরিমাণ বেশি থাকায় এটি দেহের বিভিন্ন অঙ্গের, যেমন হৃদপিন্ড, বৃক্ক, চোখ, ইত্যাদির স্বাভাবিক কাজে বাধা সৃষ্টি করে। দেখা গেছে ডায়োবেটিস রোগীদের কারোনারি হৃদরোগ হওয়ায় প্রবণতা বেশি থাকে। যা হৃদপিন্ডকে অচল করে দেয় এবং রোগী স্ট্রোক হয়ে মারা যায়। এছাড়া দীর্ঘস্থায়ী ডায়াবেটিস রোগে রক্ত চাপ বেড়ে যায় এবং এর থেকে উচ্চ রক্ত চাপ বা হাইপারটেনশন হয়। উচ্চ রক্ত চাপ করোনারি হৃদরোগের পূর্ব লক্ষন। ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে শর্করার মাত্রা দীর্ঘদিন অনিয়ন্ত্রিত থাকলে করোনারি হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্বাবনা খুবই বেশি।

ডায়াবেটিস হওয়ার কারণ

যে কেউ যে কোনো সময়ে ডায়াবেটিসে আক্রান্তহতে পারে। তবে নিম্নলিখিত কারণে ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা বেশি-

১. যাদের বংশে ডায়াবেটিস আছে।

২. যাদের ওজন বেশি এবং শরীর মেদবহুল।

৩. যারা ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রমের কোনো কাজ করে না।

৪. দীর্ঘদিন যারা স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ সেবন করে।

৫. যারা আঁশ জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করে না।

ডায়াবেটিস এর লক্ষণ

১. ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া, বিশেষ করে রাতে ঘনঘন প্রস্রাব হওয়া।

২. খুব বেশি পিপাসা লাগা।

৩. বেশি ক্ষিদে পাওয়া এবং অতিমাত্রায় শারীরিক দুর্বলতা অনুভব করা।

৪. যথেষ্ট খাওয়া সত্ত্বেও ওজন কমে যাওয়া এবং শীর্ণতা।

৫. সামান্য পরিশ্রমে ক্লান্তি ও দুর্বলতা বোধ করা।

৬. চামড়া শুকিয়ে যাওয়া।

৭. চোখে ঝাপসা দেখা।

৮. শরীরের কোথাও ক্ষতের সৃষ্টি হলে, দেরিতে শুকানো।

ডায়াবেটিস রোগীর পথ্য

ডায়াবেটিস রোগকে দমিয়ে রাখতে খাদ্যের ভূমিকা অসামান্য। ডায়াবেটিস রোগের জন্য ওষুধ সেবন করলেও রোগীকে খাদ্য নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। নিয়ন্ত্রিত খাদ্য ব্যবস্থা না থাকলে ওষুধ সেবন করেও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। রোগীকে এমন খাদ্য দ্রব্য দিতে হবে যা তার ন্যূনতম ক্যালরির চাহিদা পূরণ করে এবং খাদ্যের দ্বারা রক্তে ও প্রস্রাবে শর্করা বেড়ে না যায়।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের সহজ উপায়

ক. ডায়াবেটিসের পথ্য নিয়ন্ত্রণ: মোটা লোকদের ডায়াবেটিস হলে তাদের ওজন স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত খাদ্য দ্রব্য ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খেতে হবে। ডায়াবেটিস রোগীদের মিষ্টি খাওয়া চলবে না। তাদের এমন খাবার খাওয়া উচিত যা প্রোটিন সমৃদ্ধ আর যাতে শ্বেতসার কম থাকে।

খ. ওষুধ সেবন: সব ডায়াবেটিস রোগীকেই খাদ্য নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙখলা মেনে চলতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে রোগীদের এ দু’টি নিয়ম যথাযথভাবে পালন করলে রোগ নিয়ন্ত্রণে এসে যায়। কিন্তু ইনসুলিন নির্ভর রোগীর ক্ষেত্রে ইনসুলিন ইনজেকশনের দরকার হয়।

গ. জীবন শৃঙখলা: শৃঙখলা ডায়াবেটিস রোগীর জীবন কাঠি। সে কারণে নিম্নোক্ত বিষয়ে রোগীকে বিশেষ নজর দিতে হবে-
১. নিয়মিত ও পরিমাণ মতো সুষম খাবার খেতে হবে।
২. নিয়মিত ও পরিমাণ মতো ব্যায়াম করতে হবে।
৩. নিয়মিত প্রস্রাব পরীক্ষা এবং ফলাফল লিখে রাখতে হবে।
৪. মিষ্টি খাওয়া সম্পূর্ণ ছাড়তে হবে।

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comment below if you have any questions

Contact form

নাম

ইমেল *

বার্তা *