সাধু ও চলিত ভাষার পার্থক্য
সাধু ও চলিত ভাষার পার্থক্য সমূহ নিম্নে দেয়া হলো:
১। সাধারণত সাধু ভাষার শব্দভান্ডারে তৎসম (সংস্কৃত) শব্দ বেশি থাকে। কিন্তু চলিত ভাষায় তদ্ভব ও দেশী, বিদেশী শব্দের আধিক্য দেখা যায়।
২। সাধু ভাষায় সর্বনামের পূর্ণরূপ ব্যবহৃত হয়। যেমন- তাহা, যাহা, যাহার, ইহা, তাহাদের, যাহাদের ইত্যাদি। চলিত ভাষায় সর্বনামের সংক্ষিপ্ত রূপ ব্যবহৃত হয়। যেমন- তা, যা, যাব, তাদের, এ, ও ইত্যাদি।
৩। সমাসবদ্ধ পদের সংখ্যা সাধু ভাষায় বেশি ব্যবহৃত হয়। যেমন- আসমুদ্র হিমাচল, কার্যকারণ শৃঙখলিত ইত্যাদি। চলতি ভাষায় সমাসবদ্ধ পদের ব্যবহার কম। যেমন: সমুদ্র থেকে হিমালয় পর্যন্ত, কার্য ও কারণের দ্বারা শৃঙখলিত ইত্যাদি।
৪। সাধুভাষায় অনেক ক্ষেত্রে ক্রিয়ার দীর্ঘরূপ প্রচলিত। যেমন- করিয়া, করিতেছি, করিয়াছিলাম ইত্যাদি। চলতি ভাষায় ক্রিয়ার সংক্ষিপ্ত রূপ ব্যবহৃত হয়। যেমন- করে, করছি, করেছিলাম ইত্যাদি।
৫। বিভক্তির বদলে ব্যবহৃত কতকগুলি অনুসর্গেরও সাধু ও চলিত ভাষার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। যেমন- সাধু ভাষা : দ্বারা, সহিত, হইতে, অভ্যন্তরে ইত্যাদি। চলিত ভাষা : দিয়ে, সঙ্গে, ভিতরে, ভেতরে বা মধ্যে ইত্যাদি।
৬। অন্য ভাষায় প্রচলিত প্রবাদ প্রবচন (Proverbs) ও বিশিষ্টার্থক পদগুচ্ছ (Idioms) চলিত ভাষায় সহজেই খাপ খেয়ে যায়। কিন্তু সাধু ভাষায় সেগুলোর প্রয়োগ বিরল। যেমন- জোর যার মলুক তার, ছাই ফেলতে ভাঙা কুলো, কলা দেখানো ইত্যাদি।
৭। সাধু ভাষার মধ্যে কর্তা-কর্ম-ক্রিয়া এই বিন্যাসক্রম সাধারণত লঙ্ঘন করা হয় না । কিন্তু চলিত ভাষার ক্ষেত্রে বাক্যে পদের বিন্যাসক্রম অনেক খানি নমনীয়। যেমন- বৃষ্টি পড়ছে সকাল থেকে।
৮। যৌগিক ক্রিয়াপদের ব্যবহার সাধু ভাষায় বেশি। কিন্তু চলিত ভাষায় কিছুটা কম। যেমন- সাধু ভাষা: গমন করা, শয়ন করা, শ্রবণ করা ইত্যাদি। চলিত ভাষা: যাওয়া, শোয়া, শোনা ইত্যাদি।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comment below if you have any questions