বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
পশ্চিম বাংলার নৈহাটির কাছাকাছি কাঁঠালপাড়া গ্রামে ১৮৩৮ সালে বঙ্কিমচন্দ্রের জনম হয়। হুগলী মোহসিন কলেজ এবং প্রেসিডেন্সি কলেজে তিনি লেখাপড়া করেন। ১৮৫৮ সালে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.এ পাশ করেন। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম গ্রাজুয়েট। কর্মজীবনে তিনি প্রথম ভারতীয় ও বাঙালী ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্টর ছিলেন।
বঙ্কিমচন্দ্রের প্রথম রচনা ‘ললিতা। পুরাকালিক গল্প। ‘তথা মানস’ একটি কাব্যগ্রন্থ। প্রকাশিত হয় ১৮৫৩ সালে। ১৮৬৪ সালে প্রকাশিত হয় Rajmohan`s wife। সাহিত্য রচনায় ঝোঁক তাঁর বরাবরই ছিল। বাঙলা সাহিত্য সাধনার প্রতি তিনি আকৃষ্ট হলেন। কাব্য এবং ইংরেজি রচনা ছেড়ে তিনি গদ্য রচনায় মন দিলেন। ১৮৬৫ সালে প্রকাশিত হল ‘দুর্গেশনন্দিনী’। বাঙলা সাহিত্যে এটিই প্রথম সার্থক বাংলা উপন্যাস। গদ্য সাহিত্যের জগতে আলোড়ন সৃষ্টি করলো এ উপন্যাস। বাঙলা গদ্যেও যে উত্তম সাহিত্য রচনা সম্ভব ‘দুর্গেশনন্দিনী’ উপন্যাস লিখে বঙ্কিমচন্দ্র সে কথাই প্রমাণ করলেন। বিদ্যাসাগরের সংস্কৃত ঘেঁষা সাধু রীতির বাঙলায় যেটুকু জড়তা ছিলো, বঙ্কিমচন্দ্রের হাতে তা দূর হলো- বাঙলা হয়ে উঠলো সাহিত্যের উপযোগী ভাষা। গুণে-মানে ভাব ও ভাষায় বঙ্কিমচন্দ্রের সাধুরীতির গদ্য রচনা সমাজে খুবই সমাদর পেয়েছিল। ১৮৯৪ সালে বঙ্কিমচন্দ্র ইহলোক ত্যাগ করেন।
বাঙলা গদ্যের বিভিন্ন শাখায় তিনি অবদান রেখেছেন। তবে তাঁর বিখ্যাত রচনার মধ্যে উপন্যাসই প্রধান।
কয়েকটি বিখ্যাত গ্রন্থের নাম :
উপন্যাস : কপালকন্ডলা (১৮৬৬), মৃণালিনী (১৮৬৯), কৃষ্ণকান্তের উইল (১৮৭৮), বিষবৃক্ষ(১৮৭৩), রাজসিংহ ইত্যাদি।
রম্য রচনা : কমলাকান্তের দপ্তর (১৮৭৫)।
প্রবন্ধ : বিবিধ প্রবন্ধ (প্রথম ও দ্বিতীয় ভাগ ১৮৮৭-৯২), কৃষ্ণচরিত্র (১৮৮৬)।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comment below if you have any questions