মীর মশাররফ হোসেন
কুষ্টিয়া জেলার (তৎকালীন নদীয়া) গৌরী নদীর তীরে লাহিনীপাড়া গ্রামে এক সৈয়দ পরিবারে ১৮৪৭ খ্রিস্টাব্দে মীর মশাররফ হোসেন জন্মগ্রহন করেন। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি সাহিত্য চর্চা শুরু করেন। তাঁর আগে বাংলা গদ্য সাহিত্য চর্চায় উল্লেখযোগ্য কোনো মুসলমান সাহিত্যিকের নাম পাওয়া যায় না। মীর মশাররফ ছিলেন বঙ্কিমচন্দ্রের সমসাময়িক। জমিদার কাচারীর ম্যানেজার হিসেবে তিনি কলিকাতা, টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার, ফরিদপুরের পদমদী এবং তাঁর জন্মভূমি কুষ্টিয়াতেই জীবনের অধিকাংশ সময় কাটান। লেখকের প্রতিভা ছিলো বহুমুখী। কবিতা, উপন্যাস, প্রবন্ধ, রসরচনা, নাটক ও প্রহসন মিলিয়ে প্রায় ৩৫টি গ্রন্থ তিনি রচনা করেন। সাহিত্য রচনার প্রতি তাঁর ছিলো প্রবল আকর্ষণ। বাংলা সাহিত্য চর্চার প্রতি মুসলিম সমাজকে পথ দেখিয়েছেন তিনি। এ জন্যও তাঁর নাম অমর হয়ে থাকবে। মীর মশাররফ হোসেন মূলত সাধুরীতির গদ্যে লিখতেন। তাঁর ভাষা গড়ে নিতেন। ফলে তাঁর রচনায় যেমন প্রচুর তৎসম শব্দের ব্যবহার আছে তেমনি আছে আঞ্চলিক শব্দেরও প্রচুর প্রয়োগ। লেখকের প্রথম উপন্যাস ‘রত্নবতী’, প্রকাশ কাল ১৮৬৯ খ্রিস্টাব্দ। তাঁর শ্রেষ্ঠ উপন্যাস ‘বিষাদসিন্ধু’। তিন পর্বে ১৮৮৫, ১৮৮৭ এবং ১৮৯১ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয়। ১৯১২ খ্রিস্টাব্দে মীর মশাররফ হোসেন ইহলোক ত্যাগ করেন।
মীর মশাররফ হোসেনের বিখ্যাত কয়েকটি গ্রন্থের নাম :
উপন্যাস : উদাসীন পথিকের মনের কথা (১৮৯০), গাজী মিয়াঁর বস্তানী (১৮৯১)।
নাটক : বসন্তকুমারী (১৮৭৩), জমিদার দর্পণ (১৮৭৩)
কাব্য : সঙ্গীত লহরী (১৮৮৭)
আত্মচরিত : আমার জীবনী (১৯০৮)।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comment below if you have any questions