ক্ষেপণাস্ত্র কি
ক্ষেপনাস্ত (Missile) : সাধারণত দূরবর্তী কোনো লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার উদ্দেশ্যে নিক্ষিপ্ত কোনো বস্তুকে বলঅ হয় ক্ষেপনাস্ত্র। আরো সুনির্দিষ্টভাবে বলা যায়, মিসাইল বা ক্ষেপনাস্ত্র বলতে বুঝায় এমন একটি অস্ত্র যা উৎক্ষেপণ যন্ত্র ত্যাগ করার পর আপনা-আপনি চালিত হয়ে থাকে।
আধুনিক ক্ষেপনাস্ত্রসমূহ মূলত দুই ধরনের হয়ে থাকে: অনিয়ন্ত্রিত (Unguided) এবং নিয়ন্ত্রি (Guided)। কার্যকর হওয়ার প্রয়োজনে সব ক্ষেপনাস্ত্রকেই এক অর্থে নিয়ন্ত্রিত হতে হয়। তবে যেগুলো উৎক্ষেপণ যন্ত্র ত্যাগ করার পর আর কোনো নিয়ন্ত্রণের আওতায় থাকে না সেগুলোকেই সাধারণত অনিয়ন্ত্রিত বলা হয়।
প্রযুক্তির বিশেষ করে ইলেকট্রনিক্স এবং স্বয়ংক্রিয় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার উন্নতির ফলে উড্ডয়নশীল ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ন্ত্রণের কৌশল উদ্ভাবন করা সম্ভব হয়েছে। কিছু কিছু লক্ষ্যবস্তুকে এদের প্রতিবেশ থেকে সুষ্পষ্টভাবে আলাদা করে চিহ্নিত করা যায় নিঃসরণকারী বা প্রতিফলনকারী বিকিরণের দ্বারা। এই ধরনের লক্ষ্যবস্তুর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে উড়োজাহাজ এবং সামুদ্রিক জাহাজ। এই ধরনের লক্ষবস্তুর দিক, এবং কখনো কখনো দুরত্ব প্রায়শ বিকিরণ-গ্রাহক যন্ত্রের সাহায্যে বুঝা যায়। ক্ষেপনাস্ত্রের মধ্যে অথবা ভূমিতে এই যন্ত্র স্থাপন করে তা ক্ষেপণাস্ত্রটিকে অবিরাম লক্ষ্যবস্তু অভিমুখে নিয়ন্ত্রণের জন্যে ব্যবহার করা যায়।
অন্য ধরনের কিছু লক্ষ্যবস্তু আছে যেগুলোকে তাদের প্রতিবেশ থেকে কোনো যন্ত্রের সাহায্যে পৃথক করে চিহ্নিত করা যায় না। এগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবহৃত নিয়ন্ত্রিত ক্ষেপনাস্ত্রকে প্রায়শ ঐ ধরনের লক্ষবস্তুর পূর্বনির্ধারিত ভৌগলিক অবস্থানের দিকে চালিত করা হয়। নিয়ন্ত্রণ-ষ্টেশন থেকে লক্ষ্যবস্তুর দূরত্ব বেশি হলে নিয়ন্ত্রণ ত্রুটি যথেষ্ট বেশি হতে পারে। এরূপ ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক কারণে নিউক্লিয় ক্ষেপনাস্ত্র মুখের ব্যবহার অত্যাবশ্যক হয়ে পড়ে।
উৎক্ষেপণ উৎসের এবং লক্ষ্যস্থলের বিচারে ক্ষেপনাস্ত্র বিভিন্ন শ্রেণির হতে পারে, যেমন: ভূমি থেকে আকাশ ক্ষেপনাস্ত্র, ভূমি থেকে ভূমি ক্ষেপনাস্ত্র, আকাশ থেকে ভূমি ক্ষেপনাস্ত্র ইত্যাদি। আবার কত দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম তার ভিত্তিতেও ক্ষেপনাস্ত্রের শ্রেণিবিন্যাস হতে পারে।
উড্ডয়ন রূপরেখা অনুযায়ীও ক্ষেপনাস্ত্রের শ্রেণিবিভাজন হতে পারে। দুটি শ্রেণির একটি হচ্ছে এয়ারোডায়নামিক ক্ষেপনাস্ত্র বা ক্রুজ ক্ষেপনাস্ত্র এবং অপরটি হচ্ছে ব্যালিষ্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। উড্ডয়ন-সুবিধা এবং কৌশলগত সুবিধা লাভের জন্যে ক্রুজ ক্ষেপনাস্ত্রে সাধারণত ডানা থাকে। ব্যালিষ্টিক ক্ষেপনাস্ত্রে ডানা থাকে না। এটা যথেষ্ট উচুতে তাক করতে হয়, যাতে লক্ষ্যবস্তুতে পৌছার আগে মাধ্যকর্ষণের প্রভাবে স্বাধীনভাবে নিচে পড়তে পারে।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comment below if you have any questions