Home » » বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন যুগ ও চর্যাপদ

বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন যুগ ও চর্যাপদ

বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন যুগ ও চর্যাপদ

প্রশ্ন: বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন যুগের একমাত্র নির্ভরযোগ্য ঐতিহাসিক নিদর্শন কী? 

উত্তর: চর্যাপদ। 


প্রশ্ন: চর্যাপদ আর কী নামে পরিচিত? 

উত্তর: আশ্চর্যচর্যাচয় বা চর্যাশ্চর্যবিনিশ্চয় বা চর্যাচর্যবিনিশ্চয় বা চর্যাগীতিকোষ বা চর্যাগীতি। 


প্রশ্ন: কবে কোন গ্রন্থে নেপালের বৌদ্ধতান্ত্রিক কথা প্রকাশ পায়? 

উত্তর: ১৮৮২ সালে 'Sanskrit Buddhist Literature in Nepel" গ্রন্থে রাজা রাজেন্দ্রলাল মিত্র সর্বপ্রথম এটি প্রকাশ করেন। 


প্রশ্ন: হরপ্রসাদ শাস্ত্রী কত সালে কোথা থেকে চর্যাপদ আবিষ্কার করেন? 

উত্তর: ১৯০৭ সালে নেপালের রাজগ্রন্থাগার রয়েল লাইব্রেরি থেকে চর্যাপদ আবিষ্কার করেন। 


প্রশ্ন: হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর উপাধি কী ছিল? 

উত্তর: মহামহোপাধ্যায় । ১৮৯৮ সালে তিনি এ উপাধি পান। 


প্রশ্ন: হরপ্রসাদ শাস্ত্রী কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রথম বিভাগীয় প্রধান ছিলেন? 

উত্তর: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় । 


প্রশ্ন: চর্যাপদ কোন শাসন আমলে রচিত? 

উত্তরঃ পাল শাসন আমলে। 


প্রশ্ন: চর্যাপদের প্রতিপাদ্য বিষয় কী? 

উত্তর: বৌদ্ধ সহজিয়া ধর্মের সাধনতত্ত্ব। 


প্রশ্ন: চর্যাপদে মোট কতটি পদ ছিল?

উত্তর: ৫১টি। 


প্রশ্ন: কতটি পদ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছিল? 

উত্তর: সাড়ে ছেচলিশটি। 


প্রশ্ন: অন্যান্য পদ গুলো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি কেন? 

উত্তর: উপরের পাতাগুলো ছেড়া ছিল বলে। 


প্রশ্ন: চর্যাপদে কতজন কবির পদ পাওয়া গেছে? 

উত্তর: ২৩ জন কবির। 


প্রশ্ন: চর্যাপদে কতজন কবি পদ রচনা করেছেন বলে প্রমাণ আছে? উত্তর: ২৪ জন। 


প্রশ্ন: চর্যাপদের সবচেয়ে বেশি পদ রচনা করেন কে? 

উত্তর: কাহ্নপা ১৩টি পদ রচনা করেন। কিন্তু পাওয়া গেছে ১২টি। 


প্রশ্ন: ভুসুকুপা মােট কয়টি পদ রচনা করেন?

উত্তর: ৮টি। 


প্রশ্ন: চর্যাপদের কবিদের নামের শেষে পা যুক্ত কেন? 

উত্তর: চর্যাপদের কবিরা পদ রচনা করতেন বলে তাদের নামের শেষে। সম্মানসূচক পা শব্দটি ব্যবহার করেছেন। পা শব্দটি এসেছে। * পাদপদপা এভাবে। আর পদ বা পা অর্থ কবিতা। 


প্রশ্ন: কোন কবির পদ পাওয়া যায়নি? 

উত্তর: তন্ত্ৰীপা বা তেতোরী পা। 


প্রশ্ন: চর্যাপদের কোন সংখ্যক বা নম্বর পদগুলো পাওয়া যায়নি? 

উত্তর: ২৪, ২৫, ৪৮ সংখ্যক । এর মধ্যে ২৪ নং পদের রচয়িতা কাহ্ন পা, ২৫ নং তন্ত্ৰীপা এবং ৪৮ নং কুরাপা। 


প্রশ্ন: চর্যাপদের কোন পদটি খণ্ডিত আকারে পাওয়া গেছে? 

উত্তর: ২৩ নম্বর পদটি মোট ১০টি পঙক্তি মধ্যে ৬টি পাওয়া গেছে। উল্লেখ্য যে ২৩ নম্বর পদটি ভুসুকুপা রচনা করেন।


প্রশ্ন: চর্যাপদ কোথা থেকে, কত সালে প্রকাশিত হয়? 

উত্তর: ১৯১৬ সালে কলকাতার বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে। 


প্রশ্ন: কোন চারটি গ্রন্থ “হাজার বছরের পুরান বাংলা ভাষায় বৌদ্ধগান ও | দোহা' নামে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়? 

উত্তরঃ চর্যাচর্যবিনিশ্চয়, সরহপাদ, কৃষ্ণপালের দেহা এবং ডাকার্ণব। 


প্রশ্ন: চর্যাপদগুলো কোন ভাষায় রচিত ছিল? 

উত্তর: প্রাচীন বাংলা ভাষায়। তবে গবেষকগণ এর ভাষাকে সন্ধ্যাভাষা বা | সান্ধ্যভাষা বা আলাে আধারের ভাষা বলেছেন। 


প্রশ্ন: কে, কবে প্রথম চর্যাপদের ভাষাতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য নিয়ে আলোচনা করেন? 

উত্তর: ড.সুনীতি কুমার চট্টোপাধ্যায় Origin and Development of the Bengali language (ODBL) নামক বিখ্যাত গ্রন্থে ১৯২৬ সালে। 


প্রশ্ন: কে, কবে প্রথম চর্যাপদের ধর্মতত্ত্ব নিয়ে আলােচনা করেন? 

উত্তর: ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, ১৯২৭ সালে। 


প্রশ্নঃ কে, কবে প্রথম চর্যাপদের তিব্বতীয় অনুবাদ প্রকাশ করেন? 

উত্তর: ড, প্রবােধচন্দ্র বাগচী, ১৯৩৮ সালে। 


প্রশ্ন: চর্যাপদের রচনা কাল নিয়ে পণ্ডিতদের মতামতগুলো কী? 

উত্তর: ড. মুহম্মদ শহীদুলাহর মতে চর্যাপদের রচনাকাল ৬৫০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে। ১২০০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত। ড. সুনীতি কুমার চট্টোপাধ্যায়ের মতে ৯৫০ থেকে ১২০০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে। 


প্রশ: চর্যাপদ তথা বাংলা সাহিত্যের আদি কবি বা প্রথম কবি কে?

উত্তর: লুইপা । (এই মতাতমা ব্যক্ত করেছেন হরপ্রসাদ শাস্ত্রী, তাঁর সঙ্গে অনেক পণ্ডিতএকমত হলে ও ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ একমত হতে পারেননি। 


প্রশ্ন: ড. মুহম্মদ শহীদুলাহর মতে বাংলা সাহিত্যের আদিকবি বা প্রথম কবি কে? 

উত্তর: ড. মুহম্মদ শহীদুলাহ মৎসেন্দ্রনাথ বা মীননাথকে প্রথম বাঙালি কবি মনে করে প্রমাণ দেখিয়েছেন যে, তিনি সপ্তম শতকে জীবিত ছিলেন। চর্যাপদে তার কোন পদ নেই। ২১ সংখ্যক চর্যার টীকায় কেবল চারটি পংক্তিতে তাঁর উল্লেখ রয়েছে। 


প্রশ্ন: ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মতে চর্যাপদের প্রথম কবি কে? 

উত্তর: শবর পা। তার মতে শবরপা ৬৮০ থেকে ৭৩২ খ্রিষ্টাব্দে বর্তমান ছিলেন। 


প্রশ্ন: সম্প্রতি কে নবচর্যাগীতি সংগ্রহ করেন এবং কোথা থেকে? 

উত্তর: উ: শশীভূষণ দাসগুপ্ত | নেপাল থেকে তিনি ১০১ টি পদ সংগ্রহ করেন।


প্রশ্ন: চর্যাপদ কোন ছন্দে রচিত? 

উত্তর: অধিকাংশ পণ্ডিতের মতে, চর্যাপদ মাত্রাবৃত্ত ছন্দে রচিত। 


প্রশ্ন: চর্যাপদের কোন কবি মহিলা ছিলেন বলে ধারণা করা হয়? 

উত্তর: কুক্কুরীপা। 


প্রশ্ন: চর্যাপদে কতটি প্রবাদ-প্রবচন রয়েছে? 

উত্তর: ৬টি। উল্লেখযোগ্য দুটি প্রবাদ হলো (ক) আপনা মাসে হরিণা বৈরী। (খ) দুহিল দুধ নাহি বেন্টে সাময়।


প্রশ্ন: চর্যার কোন কবি বাঙালি ছিলেন? 

উত্তর: ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মতে শবরপা। তবে একটি পদে ভুসুকুপা নিজেকে বাঙালি বলে পরিচয় দিয়েছেন-"আজি ভুসুকু বাঙালী ভৈলা'। 


প্রশ্ন: সন্ধ্যা বা সান্ধ্য ভাষা কী? 

উত্তর: যে ভাষা সুনির্দিষ্ট রূপ পায়নি। যে ভাষার অর্থও একাধিক অথাৎ আলাে আঁধারের মত, সে ভাষাকে পণ্ডিতগণ সন্ধ্যা বা সান্ধ্য ভাষা বলেছেন। 


প্রশ্ন: চর্যাপদের শ্রেষ্ঠ কবি কে? 

উত্তর: শবর পা। তিনি ২৮ ও ৫০ সংখ্যক পদের রচয়িতা।

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comment below if you have any questions

Contact form

নাম

ইমেল *

বার্তা *