Home » » বাংলা সাহিত্যের অন্ধকার যুগ

বাংলা সাহিত্যের অন্ধকার যুগ

বাংলা সাহিত্যের অন্ধকার যুগ

প্রশ্ন: অন্ধকার যুগ কী? 

উত্তর: বাংলা সাহিত্যের যে যুগে বাংলা সাহিত্যের কোন নিদর্শন মেলে না, তাকে অন্ধকার যুগ বলে ? 


প্রশ্ন: অন্ধকার যুগের সময়সীমা কত? 

উত্তর: ১২০১ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১৩৫০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত মোট দেড়শ বছর। 


প্রশ্ন: অন্ধকার যুগের কোন সাহিত্যিক নিদর্শন মেলে কী? 

উত্তর: অন্ধকার যুগে বাংলা সাহিত্যের কোন নিদর্শন না মিললেও কিছু সংস্কৃত সাহিত্যের নিদর্শন মেলে। যেমন- ১. রামাই পণ্ডিতের 'শূন্যপুরাণ’ এবং ২. হলায়ুধ মিশ্রের ‘সেক শুভোদয়া'। 


প্রশ্ন: বাংলা সাহিত্যে অন্ধকার যুগের জন্য কোন শাসককে দায়ী করা।

উত্তর: ইখতিয়ার উদ্দীন মুহম্মদ বিন বখতিয়ার খলজি। 


প্রশ্ন: কোন কোন গবেষক অন্ধকার যুগের অস্তিত্ব মেনে নিতে চান না? 

উত্তর: ড. এনামুল হক, ড. দীনেশচন্দ্র সেন, ড. সুকুমার সেন, ড, যদুনাথ সরকার প্রমুখ অন্ধকার যুগের অস্তিত্ব স্বীকার করেন না। 


প্রশ্ন: ‘শূন্যপুরাণ' সম্পর্কে বর্ণনা দিন। 

উত্তর: রামাই পণ্ডিতরচিত ধর্মপূজার শাস্ত্রগ্রন্থ ‘শূন্যপুরাণ'। এটি ৫১ টি অধ্যায়ে বিভক্ত। রামাইপণ্ডিতের কাল ত্রয়োদশ শতক বলে অনেকেই অনুমান করেন। শূন্যপুরাণ ধর্মীয় তত্ত্বের গ্রন্থ যা গদ্যপদ্য মিশ্রিত চম্পু কাব্য। হিন্দু ধর্মের সঙ্গে মিলন সাধনের জন্য রামাই পণ্ডিতধর্মপূজার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এতে বৌদ্ধদের শূন্যবাদ এবং হিন্দুদের লৌকিক ধর্মের মিশ্রণ ঘটেছে। 


প্রশ্ন: ‘নিরঞ্জনের রুম্মা’ বা ‘নিরঞ্জনের উদ্মা' কী? 

উত্তর: ‘নিরঞ্জনের রুম্মা’ বা ‘নিরঞ্জনের উদ্ম' হলো শূন্যপুরাণ নামক কাব্যের অন্তর্গত অংশ বিশেষ বা কবিতা। এ কবিতায় বৌদ্ধধর্মাবলম্বী সধর্মীদের ওপর বৈদিক ব্রাহ্মণদের অত্যাচারের কাহিনী বর্ণনার সঙ্গে মুসলমানদের জাজপুর প্রবেশ এবং ব্রাহ্মণ্য দেবদেবীর রাতারাতি ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম গ্রহণের কাল্পনিক চিত্র অঙ্কিত হয়েছে। ইসলাম সম্পর্কে অপরিণত ধারণা থেকে মনে হয় যে এ দেশে ইসলাম সম্প্রসারণের প্রাথমিক পর্যায়ে এটি রচিত। ব্রাহ্মণ শাসনের অবসান এবং মুসলিম শাসন প্রচলনের পক্ষে মত প্রকাশিত হওয়ায় এতে তৎকালীন সামাজিক পরিচয় মেলে।


প্রশ্ন: 'সেক শুভোদয়া' কী। 

উত্তর: ১২০১ থেকে ১৩৫০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত ১৫০ বছর বাংলা সাহিত্যে অন্ধকার যুগ বলে পরিচিত। এই সময়ে রচিত সংস্কৃত ভাষার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ “সেক শুভোদয়া' । রাজা লক্ষ্মণ সেনের সভাকবি হলায়ুধ মিশ্র রচিত ‘সেক শুভোদয়া' সংস্কৃতি গদ্যপদ্যে লেখা চম্পুকাব্য। গ্রন্থটিতে মোট ২৫টি অধ্যায় আছে। ও, মুহম্মদ এনামুল হকের মতে, সেক শুভোদয়া খ্রিষ্টিয় ত্রয়োদশ শতাব্দীর একেবারেই গোড়ার দিকদার রচনা। গ্রন্থটি রাজা লক্ষণ সেন ও শেখ জালালুদ্দীন তাবরেজির অলৌকিক কাহিনী অবলম্বনে রচিত। সেক শুভোদয়া অর্থাৎ শেখের গৌরব ব্যাখ্যাই এই পুস্তমিকার উদ্দেশ্য এ গ্রন্থে প্রাচীন বাংলার যে সব নিদর্শন আছে তাহলো পীর মাহাত্বজ্ঞাপক ছড়া বা আর্য, খনার বচন ও ভাটিয়ালি রাগের একটি প্রেম সঙ্গীত। শেকশুভোদয়ার প্রেম সঙ্গীতটির একাংশ-

“হাত জোড় করিঞা মাঙ্গো দান। 

বারেক মহাত্মা রাখ সম্মান।।

 বড় সে বিপাক আছে উপাত্র।

 সাজিয়া গেইলে বাঘেন খাত্র|। 

 পুন পুন পাএ পড়িয়া মাঙ্গো দান । 

 মৈদ্ধে বহে সুরেশ্বরী গাঙ্গ ।।"

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comment below if you have any questions

Contact form

নাম

ইমেল *

বার্তা *