ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ম
ঈদুল ফিতরের নামায:
* শাওয়াল মাসের প্রথম তারিখের ঈদকে ঈদুল ফিতর এবং এই দিনে ' মুসলমানদের একত্রিত হয়ে শোকর আদায়ের জন্য যে দুই রাকআত নামায পড়া হয় তাকে ঈদুল ফিতরের নামায বলে।
* ঈদুল ফিতরের দুই রাকআত নামায ওয়াজিব।
* এই দুই রাকআতে অতিরিক্ত ছয়টি তাকবীর বলা ওয়াজিব।
* খুতবা ব্যতীত জুমুআর নামাযের জন্য যে সব শর্ত, ঈদের নামাযের জন্যও একই শর্ত !
* ঈদুল আযহার তুলনায় ঈদুল ফিতরের জামাআত একটু দেরী করে পড়া সুন্নাত।
* ঈদের নামায মাঠে পড়া উত্তম। মহল্লার মসজিদেও জায়েয।
* কোন ওজর বশতঃ পয়লা শাওয়াল ঈদুল ফিতরের নামায পড়তে না পারলে ২রা শাওয়াল পড়ে নেয়া জায়েয, তবে বিনা ওজরে এরূপ করলে নামায হবে না।
* ঈদের নামাযে প্রথম রাকআতে সূরা আ’লা এবং দ্বিতীয় রাকআতে সূরা গাশিয়া পড়া উত্তম।
* দুই রাকআত ঈদুল ফিতরের নামাযের নিয়ত এভাবে করা যায় এভাবে: ঈদুল ফিতরের দুই রাকআত নামায ছয়টি ওয়াজিব তাকবীর সহ আদায় করছি।
ঈদুল ফিতরের নামায পড়ার তরীকা :
* আল্লাহু আকবার বলে নিয়ত বাধা।
* তারপর ছানা পড়া।
* তারপর নামাযের তাকবীরে তাহরীমার ন্যায় কান পর্যন্ত হাত উঠিয়ে আল্লাহ আকবার বলবে এবং হাত ছেড়ে দিবে। অতঃপর তিনবার সুবহানাল্লাহ বলা যায় পরিমাণ বিলম্ব করে আবার অনুরূপ হাত উঠিয়ে আল্লাহু আকবার বলবে ও হাত ছেড়ে দিবে। আবার অনুরূপ বিলম্ব পূর্বক হাত উঠিয়ে আল্লাহু আকবার বলে হাত বেধে এবং আউযু বিল্লাহ, বিসমিল্লাহ সহ সূরা ফাতিহা ও কিরাত ইত্যাদি সহকারে প্রথম রাক'আত শেষ করে দ্বিতীয় রাকআতের জন্য উঠবে এবং সূরা ফাতেহা ও সূরা/কিরাত মিলিয়ে তারপর প্রথম রাকআতের ন্যায় অতিরিক্ত তিনটি তাকবীর বলবে। এখানে তৃতীয় তাকবীরের পরও হাত ছাড়া অবস্থায় রাখবে। তারপর রুকুর তাকবীর বলে রুকুতে যাবে এবং যথা নিয়মে এই রাকাত শেষ করবে।
ঈদুল ফিতরের খুতবা ও আমলসমূহঃ
* ঈদুল ফিতরের দুই খুতবা পাঠ করা সুন্নাত। এই খুতবাদ্বয় নামাযের পরে হওয়া সুন্নাত।
* এই খুতবাদ্বয় মিম্বরের উপর দাঁড়িয়ে পাঠ করা সুন্নাত।
* দুই খুতবার মাঝখানে জুমুআর খুতবার ন্যায় কিছুক্ষণ (তিন আয়াত। পড়া পরিমাণ সময়) বসা সুন্নাত।
* এই খুতবা শোনা ওয়াজিব যেমন জুমুআর খুতবা শোনা ওয়াজিব। দূরত্বের কারণে খুতবা না শুনতে পেলে চুপ করে কান লাগিয়ে থাকা ওয়াজিব।
ঈদুল ফিতরের খুতবার মধ্যে যেসব বিষয় থাকবেঃ
* জুমুআর খুতবার মধ্যে যে সব বিষয় থাকবে ঈদের খুতবার মধ্যেও সে সব বিষয় থাকবে। পার্থক্য এই যে, মিম্বরে উঠে না বসেই ঈদের খুতবা শুরু করা সুন্নাত এবং ঈদুল ফিতরের খুতবার মধ্যে ছদকায়ে ফিতর সম্বন্ধে বর্ণনা। করতে হবে আর তাকবীর (আল্লাহ আকবার) বলে ঈদের খুতবা আরম্ভ করা সুন্নাত। প্রথম খুতবার শুরুতে তাকবীর ৯ বার একাধারে এবং দ্বিতীয় খুতবার শুরুতে ৭ বার একাধারে বলা আর সব শেষে মিম্বর থেকে অবতরণের সময় ১৪ বার একাধারে বলা মোস্তাহাব।
বিঃ দ্রঃ ঈদের নামাযের (বা খুতবার) পরে দু'আ (মুনাজাত) করা যদিও নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, সাহাবা, তাবেঈন এবং তাবে-তাবেঈন থেকে বর্ণিত ও প্রমাণিত নয়, কিন্তু অন্যান্য নামাযের পর যেহেতু দু'আ করা সুন্নাত, তাই ঈদের নামাযের পরও দু'আ করা সুন্নাত। (**) আহছানুল ফাতাওয়া গ্রন্থকার (৪র্থ খণ্ড, দ্রঃ) খুতবার পর কিংবা নামায ও খুতবা উভয়টার পরও দু'আ করা যেতে পারে বলে যুক্তি পেশ করেছেন।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comment below if you have any questions