Home » » বেতার যন্ত্র আবিষ্কারের ইতিহাস

বেতার যন্ত্র আবিষ্কারের ইতিহাস

বেতার যন্ত্র আবিষ্কারের ইতিহাস

বেতার যন্ত্র (১৮৯৫) 

-জগদীশচন্দ্র বসু (১৮৫৮-১৯৩৭)

১৮৮২ সালে আমেরিকার ইঞ্জিনিয়ার ইয়ানস্কি একদিন কানে ইয়ার ফোন লাগিয়ে একটি কাজে ব্যস্ত ছিলেন। হঠাৎ ইয়ার ফোনের মাধ্যমে তার কানে একটি মৃদু শব্দ এল। শব্দ সৃষ্টি হওয়ার কোনো কারণ তিনি খুঁজে পেলেন না। দীর্ঘকাল ধরে তিনি ঐ শব্দ কোথা থেকে এল তা জানার জন্য গবেষণা চালালেন কিন্তু কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারলেন না। জার্মান বিজ্ঞানী ম্যাক্সওয়েল শব্দ ও আলোক তরঙ্গ নিয়ে গবেষণা। করছিলেন। তিনি ১৮৮৩ সালে জানালেন ঐ শব্দটি বিশ্বের বাইরে থেকে আগত এক ধরনের শক্তিতরঙ্গ। ১৮৮৭ সালে জার্মান বিজ্ঞানী হাস ঐ শক্তিতরঙ্গের উৎস সম্পর্কে আরো নতুন তথ্য জানালেন এবং তার ল্যাবরেটরিতে সেই তরঙ্গ সৃষ্টিও করলেন। তাঁর গবেষণার মাধ্যমে জানা গেল মহাকাশের নক্ষত্রগুলির মধ্যে যে পারমাণবিক বিস্ফোরণ হয়ে চলেছে তার থেকে এক ধরণের তরঙ্গ উৎপন্ন হয়ে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। এই তরঙ্গ এক ধরনের শক্তি, যে শক্তি ও আলোকশক্তির সমগোত্রীয়। কিন্তু একে ইন্দ্রিয় দিয়ে অনুভব করা যায় না। মেঘে বিদ্যুৎ স্ফুরণের সময় তাপ ও আলো সৃষ্টির সাথে এই ঔরঙ্গও সৃষ্টি হয়। এই তরঙ্গের দৈর্ঘ্য আলোকরশ্মির তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের চেয়ে বেশী হলেও কম্পাঙ্ক কম। তাই এই শক্তি ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য নয়! এই শক্তির তরঙ্গের না দেওয়া হয় বেতার তরঙ্গ। ইতিমধ্যে বিজ্ঞানীরা বেতার রস আরে

কিছু তথ্য আবিষ্কার করে ফেলেছেন। সেগুলি হল এ তরঙ্গ যন্ত্র দিয়ে সৃষ্টি | করা যায়। এবং বৈদ্যুতিক গ্রাহক যন্ত্র দিয়ে সে তরঙ্গকেও ধরা যায়। বেতার তরঙ্গের সঙ্গে আলো ও শব্দ তরঙ্গ ও বহুদুরে পাঠানো সম্ভব। ১৮৯৫ সালে কলকাতার টাউন হলে ছোটলাটের সভাপতিত্বে আয়োজিত হল এক সভা। সে সভায় বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসু তাঁর তৈরী স্বল্প দৈর্ঘ্যের বেতার তরঙ্গ সৃষ্টিকারী যন্ত্র দিয়ে শব্দ তরঙ্গকে বেতার তরঙ্গে পরিণত করে প্রমাণ করেন বিনা তারে এক জায়গা থেকে অপর জায়গায় বেতার তরঙ্গ পাঠানো সম্ভব। বেতার তরঙ্গ ধরার জন্য তিনি কোহেরার' নামক একটি সুক্ষ্ম যন্ত্রও তৈরী করেন। বেতার তরঙ্গ নিয়ে তিনি দীর্ঘকাল গবেষণা করেছিলেন। কিন্তু তিনি ছিলেন পরাধীন ভারতের বিজ্ঞানী, তাই প্রচারের  সুযোগ তিনি পাননি। এবং দেশের মানুষও তার বিজ্ঞানচর্চার যথার্থ মর্ম উপলব্ধি করতে পারেনি। বেতার তরঙ্গ বিনা তারে প্রেরণের কৌশল অর্থাৎ বেতার যন্ত্র আবিষ্কার করা সত্ত্বেও সরকারী সহযোগিতার অভাবে তার পেটেন্ট নেওয়া তাঁর পক্ষে সম্ভব হয়নি। | শেষপর্যন্ত বেতার যন্ত্র আবিষ্কারের স্বীকৃতি পান বিজ্ঞানী মার্কনি। মার্কনির জন্ম ১৮৭৪ সালে ইতালীতে। তিনিও বেতার তরঙ্গ নিয়ে নানারকম গবেষণা শুরু করেছিলেন। বিজ্ঞানী হাসের গবেষণা তাঁকে এ কাজে আরো সাফল্য ' এনে দেয়।

নিউ ফাউন্ডল্যাণ্ডের সমুদ্র উপকূলে মার্কনি তাঁর কয়েকজন সহকর্মী নিয়ে তারের সুতোয় বাঁধা প্রকাণ্ড ঘুড়ি আকাশে ওড়াতেন। এবং সেই তারের সঙ্গে টেলিফোন যন্ত্র লাগিয়ে কান পেতে শুনতেন। শেষ পর্যন্ত ১৮৯৬ সালে ২২ বছরের যুবক মার্কনি রিসিভার কানে লাগিয়ে পরিষ্কার শুনতে পেলেন টক্কা-টক্কা-টক্কা-সংকেত ধ্বনি। এই সংকেত ধ্বনি আসছিল আটলান্টিক মহাসাগরের অপর পারে তিন হাজার মাইল দূরে দক্ষিণ কর্ণওয়াল থেকে। শেষপর্যন্ত ১৯০১ সালে বিনা তারে মুখের কথাকে তিনি ইংলিশ চ্যানেল পার করে দিয়ে বেতার যন্ত্র আবিষ্কারকের খ্যাতি লাভ করেন। বেতার বার্তা প্রচারের জন্য প্রচার কেন্দ্রে থাকে একটি প্রেরক যন্ত্র ঐ যন্ত্রের মাধ্যমে উচ্চ বিদ্যুৎ তরঙ্গ সৃষ্টি করে তার সাথে শব্দ তরঙ্গ যুক্ত করে। প্রচার যন্ত্রের সাথে যুক্ত এরিয়ালের মাধ্যমে মহাকাশে নিক্ষেপ করা হয়।

পৃথিবীকে ঘিরে থাকা বায়ুমন্ডলের সবচেয়ে উপরের স্তর আয়নমণ্ডলে বাধা পায়। এই আয়নমণ্ডল হল একটি তড়িৎ পরিবাহী স্তর। আয়নমণ্ডলে বেতার তরঙ্গ বাধা পেয়ে নেমে আসে পৃথিবীর বুকে। গ্রাহক যন্ত্রের মাধ্যমে সেই বেতার তরঙ্গকে ধরা যায় এবং ঐ যন্ত্রের এক বিশেষ যান্ত্রিক ব্যবস্থায় বেতার তরঙ্গের সাথে যুক্ত শব্দ তরঙ্গকে আমরা শুনতে পাই। বেতার তরঙ্গের গতিবেগ আলোকের গতিবেগের সমান। তাই বেতার তরঙ্গ আয়নমণ্ডলে প্রতিফলিত হয়ে ফিরে আসতে বেশী সময় লাগে না।

১৯৯৭ সালে এক বিশেষ সমীক্ষায় প্রমাণিত হয় জগদীশচন্দ্রই বেতার যন্ত্রের আবিষ্কারক। মার্কনির আগেই তিনি বেতারযন্ত্রের আবিষ্কার করেছিলেন এ তথ্য আজ প্রমাণিত। এই মহান বিজ্ঞানীর মৃত্যুর ষাট বছর পর সারা বিশ্ব তাকে বেতার যন্ত্রের আবিষ্কারক হিসাবে স্বীকৃতি দেয়।

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comment below if you have any questions

অফিস/বেসিক কম্পিউটার কোর্স

এম.এস. ওয়ার্ড
এম.এস. এক্সেল
এম.এস. পাওয়ার পয়েন্ট
বাংলা টাইপিং, ইংরেজি টাইপিং
ই-মেইল ও ইন্টারনেট

মেয়াদ: ২ মাস (সপ্তাহে ৪দিন)
রবি+সোম+মঙ্গল+বুধবার

কোর্স ফি: ৪,০০০/-

গ্রাফিক ডিজাইন কোর্স

এডোব ফটোশপ
এডোব ইলাস্ট্রেটর

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৮,৫০০/-

ওয়েব ডিজাইন কোর্স

এইচটিএমএল ৫
সিএসএস ৩

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৮,৫০০/-

ভিডিও এডিটিং কোর্স

এডোব প্রিমিয়ার প্রো

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৯,৫০০/-

ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স

ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম, এসইও, গুগল এডস, ইমেইল মার্কেটিং

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ১২,৫০০/-

অ্যাডভান্সড এক্সেল

ভি-লুকআপ, এইচ-লুকআপ, অ্যাডভান্সড ফাংশনসহ অনেক কিছু...

মেয়াদ: ২ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৬,৫০০/-

ক্লাস টাইম

সকাল থেকে দুপুর

১ম ব্যাচ: সকাল ০৮:০০-০৯:৩০

২য় ব্যাচ: সকাল ০৯:৩০-১১:০০

৩য় ব্যাচ: সকাল ১১:০০-১২:৩০

৪র্থ ব্যাচ: দুপুর ১২:৩০-০২:০০

বিকাল থেকে রাত

৫ম ব্যাচ: বিকাল ০৪:০০-০৫:৩০

৬ষ্ঠ ব্যাচ: বিকাল ০৫:৩০-০৭:০০

৭ম ব্যাচ: সন্ধ্যা ০৭:০০-০৮:৩০

৮ম ব্যাচ: রাত ০৮:৩০-১০:০০

যোগাযোগ:

আলআমিন কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র

৭৯৬, পশ্চিম কাজীপাড়া বাসস্ট্যান্ড,

[মেট্রোরেলের ২৮৮ নং পিলারের পশ্চিম পাশে]

কাজীপাড়া, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬

মোবাইল: 01785 474 006

ইমেইল: alamincomputer1216@gmail.com

ফেসবুক: facebook.com/ac01785474006

ব্লগ: alamincomputertc.blogspot.com

Contact form

নাম

ইমেল *

বার্তা *