Home » » তায়াম্মুমের নিয়ম

তায়াম্মুমের নিয়ম

তায়াম্মুমের নিয়ম

ধারাবাহিকভাবে তাইয়াম্মুমের করণীয় বিষয়সমূহ বর্ণনা করা হল:

* পানি না পাওয়ার কারণে যাকে তাইয়াম্মুম করতে হবে পানি পাওয়ার প্রবল ধারণা থাকলে মোস্তাহাব ওয়াক্ত পার হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত অপেক্ষা করা তার জন্য মোস্তাহাব। আর কেউ পানি দেয়ার ওয়াদা করলে অবশ্যই তাকে অপেক্ষা করতে হবে, যদিও ওয়াক্ত শেষ হওয়ার আশংকা হয়।

* তাইয়াম্মুমের শুরুতে বিসমিল্লাহ বলা সুন্নাত। 

* মেসওয়াক করা উযুর ন্যায় তাইয়াম্মুমেরও সুন্নাত।

* নিয়ত করা ফরয। (পবিত্রতা অর্জন করা বা নাপাকী দূর করার নিয়ত করবে। কিম্বা নামায, সাজদায়ে তিলাওয়াত প্রভৃতি এমন মৌলিক ইবাদতের নিয়ত করবে যা পবিত্রতা ব্যতীত সহীহ হয় না।

* নিয়ত মুখেও উচ্চারণ করা উত্তম। এরূপ বাক্যে নিয়ত করা যায়

অর্থ : আমি নাপাকী দূর করার, নামায বৈধ করার এবং আল্লাহ | তা'আলার নৈকট্য অর্জন করার উদ্দেশ্যে তাইয়াম্মুমের নিয়ত করছি।

* নিয়ত করার পর পবিত্র মাটি বা মাটি জাতীয় বস্তু (যার উপর তাইয়াম্মুম করা যায়)-এর উপর উভয় হাতের তালু মারবে।

* হাত মারার সময় আঙ্গুলগুলো খোলা রাখা সুন্নাত।

* হাত মারার পর উভয় হাত ঐ স্থানে রাখা অবস্থায় একবার সামনের দিকে একবার পেছনের দিকে নিবে। এটা সুন্নাত ।

* হাত এমন ভাবে ঝাড়বে, যেন আলগা ধুলা ঝরে যায়। 

* পুরো মুখ ঐ হাত দ্বারা মাসেহ করবে। এটা ফরয। 

* দাড়ি খেলাল করা সুন্নাত। 

* আবার মাটিতে অনুরূপভাবে হাত মারবে । (আঙ্গুলের মধ্যে ফাঁকা রেখে)

* হাত সামনে এবং পেছনের দিকে নিবে। এটা সুন্নাত।

* এখানেও (হাত মাসেহের পূর্বেই) উযূর মত উভয় হাতের আঙ্গুল খেলাল করবে। এটা সুন্নাত। 

* পূর্বের ন্যায় হাত ঝাড়বে। 

* প্রথমে ডান হাত কনুইসহ মাসেহ করবে। 

* তারপর বাম হাত কনুইসহ মাসেহ করবে। হাত মাসেহ করা ফরয।

* মসেহ করার সুন্নাত তরীকা হল : বাম হাতের চার আঙ্গুলের পেট (বৃদ্ধ আঙ্গুল ছাড়া) ডান হাতের চার আঙ্গুলের পিঠে রাখবে। তারপর ডান হাতের পিঠের উপর দিয়ে কনুইর দিকে টেনে নিয়ে যাবে। অত:পর বাম হাতকে উল্টে বাম হাতের তালু এবং বৃদ্ধ আঙ্গুলের পেট দিয়ে ডান হাতের পেটের দিক থেকে আঙ্গুলের দিকে এমনভাবে টেনে নিয়ে যাবে যেন বাম হাতের বৃদ্ধ আঙ্গুলের পেট ডান হাতের বৃদ্ধ আঙ্গুলের পিঠের উপর দিয়ে চলে যায়। অনুরূপভাবে ডান হাত দিয়ে বাম হাত মাসেহ করবে ।

* আংটি চুড়ি ইত্যাদিকে তার স্থান থেকে সরিয়ে এমনভাবে হাত মাসেহ করবে যেন সব স্থানে মাসেহ করা হয় ।

* তায়াম্মুমের এই তারতীব রক্ষা করা সুন্নাত।

* তাইয়াম্মুমের মধ্যেও উযুর ন্যায় একের পর এক অঙ্গগুলো লাগাতার | (অর্থাৎ, বেশী বিরতি না দিয়ে) করে যাওয়া সুন্নাত। 

* তাইয়াম্মুম উযর ন্যায়, তাই উযুর মধ্যে মুখ ও হাত ধোয়ার যে দুআ | পড়া হয়, এমনিভাবে উযুর শেষে যে সব দুআ পড়া হয়, তাইয়াম্মুমের বেলায়ও

সেগুলো পড়ার হুকুম একই হবে।


কি কি বস্তু দ্বারা তাইয়াম্মুম করা জায়েয ?

পাক মাটি, কংকর, বালি, চুনা, মাটির তৈরী কাঁচা অথবা পাকা ইট, ধুলা-বালি, মাটি, পাথর ইটের তৈরী দেয়াল, পাকা বাসন, (তেল লেগে না থাকলে)। লাকড়ী বা কাপড়ে অথবা অন্য কোন পাক বস্তুতে ধুলাবালি লেগে থাকলে এসব বস্তু দ্বারা তাইয়াম্মুম করা যাবে । 


কোন্ অপবিত্রতায় তায়াম্মুম করা যায় ?

উপরে অপ্রকৃত নাপাকীর (নাজাছাতে হুমী তথা বে-উযূ বে-গোসল হওয়ার অবস্থা) বর্ণনা করা হয়েছে। ছোট বড় যে কোন অপ্রকৃত নাপাকী অবস্থায় তাইয়াম্মুম দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করা যায়। তবে প্রকৃত নাপাকীর বেলায় তাইয়াম্মুম করলে যথেষ্ঠ হবে না বরং ধৌত করতে হবে।

উল্লেখ্য যে, উযু ও গোসলের জন্য এক রকম তাইয়াম্মুমই করতে হবে। এক তাইয়াম্মুমই উভয়ের জন্য যথেষ্ট হবে।


কখন তাইয়াম্মুম করতে হবে ?

নিম্নলিখিত কারণগুলো ব্যতীত তাইয়াম্মুম জায়েয নয় ? 

১. পানি এক মাইল অথবা তদুর্ধ অথবা এর চেয়েও দূর হতে হবে। | 

২. পানির কূপ আছে, কিন্তু পানি উঠাবার কোন ব্যবস্থা না থাকলে। | 

৩. পানির নিকট কোন ক্ষতিকর প্রাণী অথবা কোন শত্রু থাকলে এবং কাছে গেলে কোন বিপদের আশংকা থাকলে। | 

৪. রেলগাড়ী, উড়োজাহাজ অথবা মোটর গাড়ীতে আরোহণ অবস্থায় পানি না পাওয়া গেলে অথবা উযূ করার সুযোগ না থাকলে বা উ করতে গেলে গাড়ী ছেড়ে দেয়ার ভয় থাকলে। তবে রেলগাড়ী বা মোটরে তাইয়াম্মুমের জন্য শর্ত হল (এক) রেলগাড়ীর অন্য কোন ডাব্বায় (বগিতে) পানি নেই (দুই) পথিমধ্যে এক মাইলের (১.৬৩ কি:)-এর মধ্যে পানি অর্জন করা যাবে- এরূপ জানা নেই।

৫. পানি ব্যবহার করলে রোগ বৃদ্ধি অথবা রোগ সৃষ্টি অথবা স্বাস্থ্যের উপর প্রতিক্রিয়া সৃষ্টির ভয় হলে । অবশ্য এসব ব্যাপারে অনর্থক সন্দেহ করে। তাইয়াম্মুম না করা চাই। তবে রোগ বৃদ্ধি পাওয়ার অথবা রোগ সৃষ্টি হওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত হলে, যেমন, সর্দি, কাশিতে আক্রান্ত লোক শীতকালে ঠান্ডা পানি ব্যবহার করলে ক্ষতি হয়, এমতাবস্থায় গরম পানি দিয়ে গোসল অথবা উযূ করা দরকার। গরম পানি সংগ্রহ করতে না পারলে অথবা গরম পানি ব্যবহার করলেও ক্ষতির আশংকা হলে তাইয়াম্মুম করবে। 

৬. অল্প পানি থাকায় উযূ করলে পিপাসায় কষ্ট করতে হবে অথবা খাবার পাক করতে অসুবিধার সম্ভাবনা আছে। 

৭. পানি আছে, কিন্তু নিজে উঠে গিয়ে আনতে সক্ষম নয়, আর পানি এনে দেয়ার জন্য অন্য লোকও না পাওয়া যায়। 

৮. যে নামাযের কাযা হয় না, উযূ অথবা গোসল করতে গেলে এমন নামায ছুটে যাওয়ার আশংকা দেখা দিলে । যেমন দু-ঈদের নামায, জানাযার নামায। এগুলোতে উযূ ব্যতীত তাইয়াম্মুম করা যায় ।


* উল্লেখ্য, কোন লোকের গোসলের প্রয়োজন, কিন্তু গোসল করলে ক্ষতির আশংকা রয়েছে, উষ্য করলে কোন ক্ষতি হবে না, তখন সে গোসলের জন্য তাইয়াম্মুম করে নিবে এবং প্রত্যেক নামাযের জন্য নতুন করে উষ্য করে নামায পড়েব। পানির পরিমাণ যদি অল্প হয় ও মাত্র একবার করে মুখ হাত ও পা ধৌত করা যায়, এমতাবস্থায় তায়াম্মুম করবে না- উযূর অঙ্গগুলো একবার করে ধৌত করলেই হবে, উযূর সুন্নাত অর্থাৎ কুলি করা ও নাকে পানি দেওয়া ছেড়ে দিতে হবে। তাইয়াম্মুম করে নামায আদায় করার পর কোন লোক জানতে পারলে যে পানি নিকটেই আছে, তখন তাকে দ্বিতীয়বার নামায পড়তে | হবে না। পানি পাওয়ার জন্য চেষ্টা করে থাকলে তখন এ হুকুম প্রযোজ্য হবে; নতুবা উযু করে দ্বিতীয়বার নামায পড়তে হবে। নামাযের শেষ ওয়াক্তে পানি পাওয়ার সম্ভবনা থাকলে শেষ ওয়াক্তেই নামায পড়া মোস্তাহাব। যেমন রেলগাড়ী অথবা মোটরে আরোহণ করার পর জানতে পারল যে, নামাযের শেষ ওয়াক্তে রেলগাড়ী অথবা মোটর গাড়ী যথাস্থানে পৌঁছে যাবে যেখানে পানি আছে, তখন বিলম্ব করেই নামায পড়বে। তবে গাড়ী পৌঁছার ব্যাপারে সন্দেহ হলে তাইয়াম্মুম করেই নামায পড়বে।


* কোন লোক পানি অনুসন্ধান করে তাইয়াম্মুম করে নামায আদায় করল, অথচ নামাযের সময় থাকতেই পানি পাওয়া গেল, তখন তাকে দ্বিতীয়বার নামায পড়তে হবে না ।

* রেলগাড়ীতে বা উড়োজাহাজে ভ্রমণ করলে মাটি ও পানি না পাওয়া গেলে উযু ও তাইয়াম্মুম ব্যতীত নামায পড়ে নিবে অর্থাৎ, নামাযের নিয়ত ছাড়া শুধু নামাযের মত উঠা-বসা ইত্যাদি করবে। এমনিভাবে কোন লোক জেলখানায় থাকাকালীন পানি ও মাটি না পেলে উযু ও তাইয়াম্মুমবিহীন অনুরূপভাবে নামাযের ন্যায় করবে। তবে উভয় অবস্থায় পানি পাওয়ার পর দ্বিতীয়বার নামায পড়তে হবে। মানুষের সৃষ্ট কোন অপারগতায় কেউ উপনীত হলে এর হুকুমও পূর্ববৎ। যেমন কোন লোকের জেলখানায় থাকা অবস্থায় অন্য কেউ তার উযূর পানি বন্ধ করে দিল, তখন তাইয়াম্মুমের ব্যবস্থাও করতে না পারলে সে অনুরূপভাবে নামাযের ন্যায় করবে। 


কোন্ কোন্ কারণে তাইয়াম্মুম নষ্ট হয় ? 

১. যে যে কারণে উযু নষ্ট হয় তাইয়াম্মুমও ঐসব কারণে ভঙ্গ হয়। 

২. যে সমস্ত কারণে গোসল ফরয হয় ঐ সমস্ত কারণে তাইয়াম্মুম নষ্ট হয়। 

৩. যে সব কারণে তাইয়াম্মুম করা হয়েছিল, ঐসব কারণ রহিত হয়ে গেলে তাইয়াম্মুম ভঙ্গ হয়ে যাবে। | 

৪. পানি পাওয়ার পর তাইয়াম্মুম ভঙ্গ হয়ে যায়।

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comment below if you have any questions

অফিস/বেসিক কম্পিউটার কোর্স

এম.এস. ওয়ার্ড
এম.এস. এক্সেল
এম.এস. পাওয়ার পয়েন্ট
বাংলা টাইপিং, ইংরেজি টাইপিং
ই-মেইল ও ইন্টারনেট

মেয়াদ: ২ মাস (সপ্তাহে ৪দিন)
রবি+সোম+মঙ্গল+বুধবার

কোর্স ফি: ৪,০০০/-

গ্রাফিক ডিজাইন কোর্স

এডোব ফটোশপ
এডোব ইলাস্ট্রেটর

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৮,৫০০/-

ওয়েব ডিজাইন কোর্স

এইচটিএমএল ৫
সিএসএস ৩

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৮,৫০০/-

ভিডিও এডিটিং কোর্স

এডোব প্রিমিয়ার প্রো

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৯,৫০০/-

ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স

ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম, এসইও, গুগল এডস, ইমেইল মার্কেটিং

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ১২,৫০০/-

অ্যাডভান্সড এক্সেল

ভি-লুকআপ, এইচ-লুকআপ, অ্যাডভান্সড ফাংশনসহ অনেক কিছু...

মেয়াদ: ২ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৬,৫০০/-

ক্লাস টাইম

সকাল থেকে দুপুর

১ম ব্যাচ: সকাল ০৮:০০-০৯:৩০

২য় ব্যাচ: সকাল ০৯:৩০-১১:০০

৩য় ব্যাচ: সকাল ১১:০০-১২:৩০

৪র্থ ব্যাচ: দুপুর ১২:৩০-০২:০০

বিকাল থেকে রাত

৫ম ব্যাচ: বিকাল ০৪:০০-০৫:৩০

৬ষ্ঠ ব্যাচ: বিকাল ০৫:৩০-০৭:০০

৭ম ব্যাচ: সন্ধ্যা ০৭:০০-০৮:৩০

৮ম ব্যাচ: রাত ০৮:৩০-১০:০০

যোগাযোগ:

আলআমিন কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র

৭৯৬, পশ্চিম কাজীপাড়া বাসস্ট্যান্ড,

[মেট্রোরেলের ২৮৮ নং পিলারের পশ্চিম পাশে]

কাজীপাড়া, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬

মোবাইল: 01785 474 006

ইমেইল: alamincomputer1216@gmail.com

ফেসবুক: facebook.com/ac01785474006

ব্লগ: alamincomputertc.blogspot.com

Contact form

নাম

ইমেল *

বার্তা *