নেতার গুণাবলী কি কি?
নেতৃত্বের জন্য যেসব গুণ অপরিহার্য, নেতাকে যেসব গুণাবলী অর্জন। করতে হবে, তার একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা পেশ করা হল:
১. নেতার মধ্যে নেতৃত্বের মোহ থাকতে পারবে না। সে কাজ করবে দেশ ও জাতির স্বার্থে, ব্যক্তি স্বার্থে নয়। নেতৃত্বের প্রতি মোহ থাকলে মানুষ ব্যক্তি স্বার্থ ত্যাগ করে বৃহত্তর স্বার্থ রক্ষার তাগিদে কাজ করতে পারে না।
২. নেতার মধ্যে বিনয় থাকতে হবে। কথা-বার্তা, আচার-আচরণে বিনয় না থাকলে বরং অহংকার থাকলে সেরূপ নেতাকে কেউ মনে প্রাণে গ্রহণ করতে চায় না।
৩. সমস্যা ও সংকটের মুহূর্তে নেতাকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে, যাতে দলীয় সদস্যরা নেতাকে স্বার্থপর বা ভীরু ভাবতে না পারে কিংবা নিজেদেরকে যেন তারা অসহায় না ভাবে।
৪. অনুসারী ও দলীয় সদস্যদের প্রতি সহানুভূতি থাকতে হবে এবং তাদের সুবিধা-অসুবিধা ও আশা-আকাংখার খোঁজ-খবর রাখতে হবে।
৫, ভালবাসা দিতে ও ভালবাসা নিতে পারার গুণ থাকতে হবে। এরূপ হলে নেতার উপস্থিতি কর্মী ও দলীয় সদস্যদের কাছে কাম্য হবে এবং নেতা কর্মীদের মন জয় করতে পারবেন।
৬. নেতার মধ্যে বুদ্ধিমত্তা এবং সমস্যা ও তার সমাধান সম্বন্ধে পরিজ্ঞান থাকতে হবে, যাতে তিনি পরিবেশ, পরিস্থিতি ও সমস্যার নানা দিক বিশ্লেষণ পূর্বক যথাযথ সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
৭. নেতাকে আদর্শ স্থানীয় হতে হবে, যাতে তার স্বভাব-চরিত্র ও নীতি নৈতিকতা দেখে তার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ জাগ্রত হয় এবং অনুসারীরা আদর্শচ্যুত হওয়ার দুঃসাহস না পায়। কেননা এরূপ নেতার নিকট আদর্শহীনতা প্রশ্রয় পাবে না।
৮. নেতা চরমপন্থী হবেন না, নিজস্ব মতামত চাপিয়ে দেয়ার জন্য গো ধরবেন না বরং প্রয়োজনের তাগিদে মূল আদর্শ বহাল রেখে নীতি নির্ধারণ ও পদক্ষেপ গ্রহণের ক্ষেত্রে আপোষের মনোভাব নিয়ে চলবেন।
নেতার দায়িত্ব ও কর্তব্য সমূহ:
১. দলীয় সদস্যদের ঐক্য বজায় রাখা। যাতে দলীয় সদস্য ও সমাজ সভ্যগণ ঐক্যহীনতার ফলে বিপন্ন হয়ে না যায় ।
২. নেতা তার কাজকে এগিয়ে নেয়ার জন্য কর্মীদেরকে কাজের অনুপ্রেরণা যোগাবেন এবং তাদের মনোবল বৃদ্ধি করবেন।
৩. নেতাকে বাস্তবমুখী কর্মসূচী প্রণয়ন করতে হবে, যাতে দল ও সমাজের আশা-আকাংখার প্রতিফলন ঘটে এবং পরিবেশ ও পরিস্থিতির সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ না হয়। এ
৪. নেতাকে শুধু প্রতিভার অধিকারী হলে চলবে না বরং সেই সাথে সাথে সযত্নে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
৫. নেতাকে যোগ্য উত্তরসূরী গড়ে যেতে হবে, যেন তার অবর্তমানেও কাজের ধারা অক্ষুন্ন থাকে এবং অব্যাহত গতিতে এগিয়ে যেতে থাকে।
৬. নেতৃত্ব যেহেতু জনগণের আমানত, তাই নেতাকে জবাবদিহিতার চেতনা নিয়ে কাজ করতে হবে।
৭. বহুমুখী লোকদেরকে নিয়ে নেতাকে চলতে হয়, অনেক অবান্তর ও উল্টাপাল্টা সমালোচনার সম্মুখীনও তাকে হতে হয়, নেতাকে তাই ধৈর্য ও সহনশীলতার সাথে এবং ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টির সাথে চলতে হবে।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comment below if you have any questions