পেনিসিলিন কে আবিষ্কার করেন?
পেনিসিলিন (১৯২৮)
-স্যার আলেকজাণ্ডার ফ্লেমিং (১৮৮১-১৯৫৫)
পেনিসিলিন আবিষ্কারের ইতিহাস
১৯২৮ সালে লণ্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবাণু বিদ্যার অধ্যাপক আলেকজাণ্ডার ফ্লেমিং স্ট্যাফাইলোকক্কাস নামে বিভিন্ন রোগ উৎপাদনকারী এক ধরণের জীবাণু নিয়ে গবেষণা করছিলেন। | কিভাবে ঐ জীবাণুকে দুর্বল করে দেওয়া যায় তার উপায় বের করতে তিনি পেট্রিডিশে (কাচের তৈরী চওড়া, অগভীর, গোলাকার এক ধরণের বাটি, এর ওপরে কাচের ঢাকনা থাকে) জীবাণুটিকে রেখে তাতে অ্যাগার নামের এক ধরণের সামুদ্রিক শ্যাওলাজাত আঠালো পদার্থ দিয়ে ঐ জীবাণুর বংশবৃদ্ধি ঘটিয়ে তাদের বৈশিষ্ট্য পরীক্ষা করে দেখছিলেন।
গবেষণার সময় ফ্লেমিং-এর অজান্তে এক ধরণের ছত্রাক বাতাসের মাধ্যমে এসে পড়ে এই পেট্রিডিশে। হঠাৎ তিনি একদিন লক্ষ্য করেন পেট্রিডিশের মধ্যে সবুজ রঙের এক ধরণের ছত্রাক জন্মেছে, কদিন পর তিনি দেখেন এই ছত্রাকের পরিমাণ অনেক বেড়ে গেছে এবং ছত্রাকের চার পাশে স্ট্যাফাইলোকক্কাস জীবাণুগুলি আর নেই। তিনি ব্যাপারটিকে সাধারণ বলে মনে করলেন না।
গবেষণা করে তিনি বুঝতে পারলেন যে এই জাতীয় ছত্রাকের বীজ বাতাসে উড়ে বেড়ায়। বাতাসের মাধ্যমেই ঐ ছত্রাক এসে পড়েছে পেট্রিডিশে এবং সেখানে অ্যাগারের প্রভাবে ছত্রাকটির দেহকোষ বৃদ্ধির সময় ঈষৎ হলুদ রঙের এক প্রকার জৈব রাসায়নিক পদার্থ বের হয়। সেটির প্রভাবেই স্ট্যাফাইলোকক্কাস জীবাণু ধ্বংস হয়েছে। তিনি ঐ পদার্থের জীবদেহে প্রতিক্রিয়া কি তা জানবার জন্য খরগোশের দেহে প্রবেশ করালেন। কিন্তু কোনো বিরূপ প্রতিক্রিয়া হল না। নিজ দেহের রক্ত কাচের স্লাইডে রেখে তাতে প্রয়োগ করেও কোনো বিরূপ প্রতিক্রিয়া পেলেন না। ছত্রাকটির নাম তিনি দিলেন পেনিসিলিয়াম নোটেটাম এবং ছত্রাকের দেহ নিঃসৃত জীবাণু প্রতিরোধক পদার্থটির নাম দিলেন পেনিসিলিন।
মানুষের শরীরে পেনিসিলিন প্রয়োগ করতে গেলে পেনিসিলিনকে নিষ্কাশন করতে হয়। ফ্লেমিং পেনিসিলিন নিষ্কাশন করতে পারেননি। এ ব্যাপারে সফল হয়েছিলেন ডঃ আর্নেস্ট বোরিস বেচইন এবং ডঃ হাওয়ার্ড ফ্লোরি। ১৯৪৫ সালে ফ্লেমিং পেনিসিলিন আবিষ্কারের জন্য নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comment below if you have any questions