Home » » মেকানিজম

মেকানিজম

মেকানিজম / মেকানিজম মানে কি / Mechanism

মেকানিজম :

মেকানিজম এর শাব্দিক মানে হলো “বিশেষ কৌশল বা পদ্ধতি”। আর বিজ্ঞান এর ভাষায় Mechanism এর অর্থ হলো “কার্যোপায় যন্ত্রকৌশল”। চিরায়ত দৃষ্টিভঙ্গিতে এ হলো এক যান্ত্রিক পদ্ধতি যার মাধ্যমে গতির অবস্থান্তর, শক্তির সঞ্চালন, অথবা এসব নিয়ন্ত্রণ সাধিত হয়। বিবিধ যন্ত্র এবং যান্ত্রিক কৌশলের কার্যের মর্মমূলে রয়েছে যন্ত্রকৌশল বা মেকানিজম। তবে আধুনিক দৃষ্টিতে এ শব্দটির ব্যবহার কেবল যান্ত্রিক পদ্ধতির অর্থেই সীমাবদ্ধ নয়। যান্ত্রিক উপাদান ছাড়াও, অন্যান্য বিষয়ও এর অন্তর্ভুক্ত হতে পারে যেমন-সম্পর্কিত (pneumatic), ঔ দক (hydraulic), বৈদ্যুতিক (electrical), এবং ইলেকট্রনিক (electronic) উপাদানসমূহ। এখানে যন্ত্রবিধি সম্পর্কিত আলোচনা চিরায়ত অর্থে যা বুঝায় সে অর্থে সীমিত রাখা হবে। 

প্রায় সকল কার্যোপায়ই অপেক্ষাকৃত স্বল্পসংখ্যক মৌলিক উপাংশ সন্নিবেশে তৈরি হয়। এদের মধ্যে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ, অংশগুলো হচ্ছে— ক্যামস বা যান্ত্রিক যুক্তি ব্যবস্থা (cams), এবং যৌক্তিক উপাদান (logical elements)। যৌক্তিক উপাদানের মধ্যে রয়েছে নানা ভৌতকৌশল যেমন—ব্যাচেট (rachetes), ট্রিপ (trips), ডিটেন্ট (detents) এবং পরস্পর সংযুক্তকরণ কৌশল (interlocks)। কিভাবে একটি কার্যোপায় বা মেকানিজম কাজ করে, তা বুঝতে হলে তাদের স্বাধীনতার ডিগ্রি বা ঘাত (degrees of freedom), গড়ন, এবং সৃতিবিদ্যা (kinematics) বিবেচনায় আনতে হবে।

দৃঢ় সংযুক্তি বা লিঙ্ক (rigid link) সহ কার্যোপায়ের জন্য স্বাধীনতার ঘাতকে সুবিধাজনকভাবে বুঝানো ও ব্যাখ্যা দান করা হলো। এই আলোচনা যেসব কার্যোপায় নিম্নবর্ণিত সাধারণ স্বাধীনতার ঘাত সমীকরণটি মেনে চলে সেসব ক্ষেত্রের জন্য সীমিত রাখা হলো :

F = x {l-j-l) + Σ fi

এখানে F হলো কার্যেপায়টির স্বাধীনতার ঘাত, j = কার্যেপায়টির সন্ধির (joints) সংখ্যা, fi = তম সন্ধির আপেক্ষিক গতির স্বাধীনতার ঘাত, এবং = চলিষ্ণুতা সংখ্যা (mobility number) এবং সাধারণ ক্ষেত্রে =3 হয়ে থাকে সমতল কার্যোপায়ের জন্য আর ত্রিমাত্রিক কার্যোপায়ের জন্য হয় =6।

একটি কার্যোপায়ের সূতিবিদ্যাগত গড়ন বলতে আমরা বুঝব সংযুক্তির বা লিঙ্কের মধ্যে সন্ধি সংযোগ শনাক্তকরণ। রাসায়নিক যৌগকে যেমন—বিমূর্ত সূত্র দ্বারা উপস্থাপন করা হয় এবং বৈদ্যুতিক বর্তনীকে যেমন—নকশাকার রেখাচিত্রের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয় ঠিক তেমনি কার্যোপায়ের স্মৃতিবিদ্যাগত গড়নকে বিমূর্ত রেখাচিত্রের। মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়ে থাকে। যে সকল কার্যোপায়ের গড়নে দুটি সংযুক্তির বা লিঙ্কের মধ্যে রয়েছে একটি সন্ধি সংযোজন সে ধরনের গড়নকে রেখাচিত্র বা রেখের মাধ্যমে উপস্থাপন করা যায়; এক্ষেত্রে লিঙ্কসমূহকে শীর্ষ দ্বারা, সন্ধিসমূহকে পার্শ্ব এবং এ ধরনের ক্ষেত্রে শীর্ষসমূহের পার্শ্ব সংযোজনসমূহ হলো লিঙ্কসমূহের সন্ধি সংযোজনের প্রতিষঙ্গ; সন্ধির জাত অনুযায়ী পার্শ্বসমূহকে পরিচিত। করানো হয়, এর অচল বা স্থির লিঙ্কটিকেও অবশ্য শনাক্ত করা হয়। সুতরাং স্লাইডার ক্র্যাঙ্ক কার্যোপায়টির যা a দ্বারা শনাক্তকৃত ব্যাখ্যামূলক চিত্রে দেখানো হয়েছে; গ্রাফ বা রেখটিকে b চিহ্নিত ব্যাখ্যামূলক চিত্রে উপস্থাপিত করা হয়েছে। এই চিত্রে শীর্ষ-১' এর চতুর্দিকে অঙ্কিত বৃত্তটি দ্বারা বুঝানো হচ্ছে যে লিঙ্ক ১টি স্থির বা অনড়।

সৃতিবিদ্যাকে সৃতিজনিত বিশ্লেষণ (kinematic analysis) এবং সংশ্লেষণ (synthesis) এই দুই ভাগে বিভক্ত করতে পারি। সৃতিজনিত বিশ্লেষণ বলতে আমরা বুঝব প্রদত্ত মাত্রাবিশিষ্ট কার্যোপায়ের বিশ্লেষণ, অন্যদিকে সংশ্লেষণ অর্থে আমরা বুঝতে চাইপ্রদত্ত গতির প্রয়ােজনাদির জন্য একটি কার্যোপায়ের অনুপাতসমূহের নির্ধারণ। এই বিদ্যা সীমিত এবং ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র (infinitesimal) সরণ, বেগ, ত্বরণ এবং উচ্চতর ত্বরণ, এবং বক্রতা ও উচ্চতর বক্রতা নিয়ে চর্চা করে এবং এটি সমতলীয় ও ত্রিমাত্রিক গতি নিয়েও অনুশীলন করে।

মেকানিজম

কার্যোপায়ের নকশাকরণে বিভিন্ন উৎপাদকের অন্তর্ভুক্তি ঘটে। এর মধ্যে রয়েছে এদের গড়ন, সৃতিজনিত সমস্যা, গতিবিদ্যা, পীড়ন বিশ্লেষণ, বস্তুপদার্থ, পিচ্ছিলকরণ (lubrication), ক্ষয়, সহনশীলতা (tolerance), উৎপাদন বিবেচনা, নিয়ন্ত্রণ এবং দুর্ঘটনার সম্ভাব্যতা। বর্তমানে কার্যোপায়সমূহের নকশাকরণে জোর দেওয়া হয় অর্থনীতিভিত্তিক নকশা বিশ্লেষণে আর এজন্য সাহায্য নেওয়া হয় কম্পিউটার সহায়ক নকশা (computer aided design : CAD) কৃৎকৌশলের। 

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comment below if you have any questions

Contact form

নাম

ইমেল *

বার্তা *