Home » » ভরা কটাল মরা কটাল

ভরা কটাল মরা কটাল

ভরা কটাল মরা কটাল

পানির উচ্চতা ভিত্তিক জোয়ার-ভাঁটার শ্রেণীবিভাগ দু'ধরণের হয়। ১) ভরা কটাল বা তেজকটাল, ২) মরা কটাল। 

১) তেজকটাল বা ভরা কটাল (Spring Tide) : 

জোর্তিবিদগণের মতে চাঁদ ও সূর্যের জোয়ার উৎপন্ন করার ক্ষমতার অনুপাত ১১:৫। অর্থাৎ সূর্য যদি ৫ গুন জোয়ারের সৃষ্টি করে তবে চাঁদ ১১ গুন জোয়ার সৃষ্টি করে। পৃথিবী ও চাঁদের আকর্ষণের এক পর্যায়ে সূর্য ও চাঁদ পৃথিবীর একই দিকে অবস্থান করে। এই সময় অমাবস্যার সৃষ্টি হয়। আবার পূর্ণিমার সময় পৃথিবীর একদিকে সূর্য ও অন্যদিকে চাঁদ থাকে এবং এরা একই সরল রেখায় অবস্থান করে। এর ফলে চাঁদ ও সূর্যের আকর্ষণ শক্তি একই সঙ্গে কার্যকরি হয়। যদিও সূর্যের আকর্ষণ চাঁদের আকর্ষণের তুলনায় কম তবুও উভয়ের মিলিত আকর্ষণে পূর্ণিমা ও অমবস্যায় চাঁদের আকর্ষণে যে স্থানে মুখ্য ও গৌন জোয়ার হয়, সূর্যের আকর্ষণেও সেই স্থানে জোয়ার হয়। এই দুই জোয়ারের মধ্যের সমকোনী অংশে ভাটার পানি খুবই নেমে যায়। এই জন্যই পূর্ণিমা ও অমাবস্যার জোয়ারকে ভরা জোয়ার বা ভরা কটাল বা তেজকটাল (Spring) বলে। পূর্ণিমা তিথিতে ভূ-পৃষ্ঠের যে স্থানে চাঁদের প্রভাবে মুখ্য জোয়ার হয়, সে স্থানে সূর্যের প্রভাবে গৌন জোয়ার এবং যে স্থানে চাঁদের প্রভাবে গৌন জোয়ার, সে স্থানে সূর্যের প্রভাবে মূখ্য জোয়ার হয়। অমাবস্যা তিথিতে পৃথিবীর একই পাশে চাঁদ ও সূর্যের মুখ্য জোয়ার এবং এর বিপরীত পাশে চাঁদ ও সূর্যের গৌন জোয়ার হয়ে থাকে।

২) মরা কটাল (Neap Tide) :

সপ্তমী ও অষ্টমী তিথিতে চাঁদ ও সূর্য সরল রেখায় না থেকে উভয়ে পৃথিবীর সঙ্গে এক সমকোনে অবস্থান করে পৃথিবীকে আকর্ষণ করে। ফলে সে দিন তাদের আকর্ষণ আড়াআড়ি কার্যকর হয়।

এই সময় চাঁদের আকর্ষণে চাঁদের দিকে এবং এর বিপরীত দিকে জোয়ার ও সূর্যের আকর্ষণে সূর্যের দিকে এবং এর বিপরীত দিকে জোয়ার হওয়ার কথা থাকলেও চাঁদের অধিক আকর্ষণী শক্তির কারণে চাঁদের দিকে ও এর বিপরীত দিকে জোয়ার এবং সূর্যের দিকে ও সূর্যের বিপরীত দিকে ভাটা হয়। এর ফলশ্রুতিতে চাঁদের দিকে ও এর বিপরীত দিকে পানি তত বেশী ফুলে উঠতে পারে না। এই কারণে এই দুই দিন জোয়ার সবচেয়ে কম হয়। পূর্ণিমা ও অমাবস্যার প্রবল জোয়ারের পর সপ্তমী ও অষ্টমী তিথিতে মরা জোয়ার বা মরা কটাল বলে।

0 comments:

Post a Comment

Comment below if you have any questions

Contact form

Name

Email *

Message *