Home » » বৃষ্টিপাত কাকে বলে

বৃষ্টিপাত কাকে বলে

বৃষ্টিপাত / rainfall / বৃষ্টিপাত কাকে বলে

বৃষ্টিপাত কেন হয়

বায়ুর আর্দ্রতা জলীয়বাষ্প নির্ভর। বাষ্পীভবন (Evaporation) প্রক্রিয়ায় উন্মুক্ত জলাশয় যেমন- সমুদ্র, নদ-নদী, ক্ষুদ্র জলাশয় এবং উদ্ভিদ থেকে জলীয়বাষ্পের সৃষ্টি হয়। একটি নির্দিষ্ট উষ্ণতায় বায়ুর জলীয়বাষ্প ধারণ ক্ষমতা নির্দিষ্ট। যেমন ১০° সেলসিয়াস উত্তাপে প্রতি ঘনমিটার বায়ু ৯.৪১ গ্রাম জলীয়বাষ্প ধারণ করে। একে বায়ুর সমম্পৃক্ততা (Saturated) অবস্থা বলে। আবার বায়ুর তাপমাত্রা ১০° সেলসিয়াস থেকে কম হলে তার জলীয় বাষ্প ধারন ক্ষতাও হ্রাস পায় এবং তা ৯.৪১ গ্রাম থেকে হ্রাস। 

এ রকম অবস্থায় ঘনীভবনের (Condensation) সাহায্যে অতিরিক্ত জলীয়বাষ্প বারিপাত ঘটায়। বারিপাত কঠিন ও তরল উভয়ই হতে পারে। জলীয়বাষ্পের শিশিরাংক যখন শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস বা হিমাংকের (Freezing point) নিচে নেমে যায় তখন ঘনীভূত জলীবাষ্প কঠিন আকার ধারণ করে এবং তুষার ও বরফরূপে ভূ-পৃষ্ঠে নেমে আসে। কিন্তু হিমাংক | শিশিরাংকের (dew point) ওপরে থাকলে ঘনীভবনের মাধ্যমে শিশির কুয়াশা বা বৃষ্টিতে পরিণত হয়।


বৃষ্টিপাত কাকে বলে

জলীয়বাষ্প পূর্ণ বায়ু উপরে উঠে শীতল হয়ে ঘনীভূত হয় এবং পরে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পানি কণায় পরিণত হয়। পানি-কণাগুলি বড় বড় বিন্দুতে পরিণত হলে নিজের ভারে বৃষ্টিরূপে পতিত হওয়াকে বলে বৃষ্টিপাত।


বৃষ্টিপাতের প্রকারভেদ / শ্রেণী বিভাগ

চারটি উপায়ে জলীয় বাষ্প পূর্ণ বায়ু উপরে উঠে বৃষ্টিপাত ঘটায় বলে বৃষ্টিপাতকে চারটি শ্রেণীতে বিভক্ত করা যায়, যেমন:

ক) পরিচলন বৃষ্টি খ) শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টি গ) ঘূর্ণর্বাত বৃষ্টি এবং ঘ) সংঘর্ষ বৃষ্টি

ক) পরিচলন বৃষ্টিপাত

উত্তপ্ত ভূ-পৃষ্ঠের সংস্পর্শে বায়ু উষ্ণ ও হালকা হয়ে প্রচুর জলীয়বাষ্পসহ উপরে উঠে যায়। এই অবস্থায় চাপের সমতা রক্ষার্থে চারিপাশের শীতল ও ভারী বায়ু উষ্ণ ঐ অঞ্চলে এসে উষ্ণ হয় এবং এই বায়ু ও উপরে উঠে শীতল ও প্রসারিত হয়। ফলে বায়ুস্থিত জলীয়বাষ্প ঘনীভূত হয়ে ছোট ছোট পানি বিন্দুতে পরিণত হয়। পরে অপেক্ষাকৃত বৃহৎ বৃষ্টি বিন্দুরূপে ভূ-পৃষ্ঠে পতিত হয়। পরিচলন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে উষ্ণতার বিনিময় হয়ে এই জাতীয় বৃষ্টিপাত হয় বলে একে পরিচলন বৃষ্টিপাত বলে।


খ) শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত

জলীয়বাষ্পপূর্ণ বায়ু প্রবাহিত হওয়ার সময় কোন পর্বতে বাধা পেলে এই বায়ু পর্বতের ঢাল বেয়ে উপরে উঠতে থাকে। উপরের শীতল বায়ু ও তুষারের সংস্পর্শে এই জলীয়বাষ্প পূর্ণ বায়ু পর্বতের প্রতিবাদ অঞ্চলে প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটায়। পাহাড়ের ঢালে বাধা পেয়ে এই বৃষ্টিপাত হয় বলে একে শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত বলে।


গ) ঘূর্নিবাত বৃষ্টিপাত 

কোন স্বল্প পরিসর স্থানে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের জন্য নিম্নচাপের সৃষ্টি হলে চারিদিকের উচ্চচাপ অঞ্চল থেকে জলীয়বাষ্পপূর্ণ বায়ু ঘুরতে ঘুরতে নিম্নচাপের কেন্দ্র থেকে উপরে উঠতে থাকে এবং ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি করে। উপরে উঠে এই বায়ু শীতল ও ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিত প্রবাহিত অঞ্চলে বৃষ্টিপাত ঘটায়। এইরূপ বৃষ্টিপাতকে ঘূর্ণিবাত বৃষ্টি বলে।


ঘ) সংঘর্ষ বৃষ্টিপাত 

কখনও কখনও শীতল ও উষ্ণ বায়ু মুখোমুখি উপনীত হলে শীতল বায়ু ভারী হওয়ায় নীচে নেমে যায় এবং শীতল বায়ুর আঘাতে উষ্ণ, হালকা বায়ু উপরে উঠে যায়। উপরে ওঠার ফলে উষ্ণ বায়ু শীতল ও প্রসারিত হয়ে ঘনীভূত হয় এবং উভয় বায়ুর সীমান্ত বরাবর বৃষ্টিপাত ঘটায়। এই জাতীয় বৃষ্টিপাতকে সংঘর্ষ বৃষ্টিপাত বলে।


যে প্রক্রিয়াতেই বৃষ্টিপাত সংঘটিত হোক না কেন বৃষ্টিপাত জীব-জগৎ এবং পৃথিবীর জন্য অতি প্রয়োজনীয় একটি বিষয়।


বারিপাতের পরিমাপ (Measurement of Precipitation) 

কিভাবে বারিপাত পরিমাপ করা হয়? বারিপাতের বিভিন্ন ধরণের মধ্যে বৃষ্টিপাতের পরিমাপ সবচেয়ে সহজ। সঙ্গতিপূর্ণ প্রস্থচ্ছেদ সম্বলিত যে কোনো খোলা পাত্রই বৃষ্টিপাত পরিমাপক যন্ত্র হিসাবে ব্যবহার করা যায়। বাষ্পীভবনের ফলে অপচয় রোধ ও স্বল্প পরিমাণ বৃষ্টিপাত পরিমাপের জন্য অত্যাধুনিক যন্ত্র ব্যবহৃত হয়। বৃষ্টিপাত পরিমাপের জন্য বৃষ্টি মাপনী (Rain gauge) ব্যবহার করা হয়। এটি একটি তামারতলা যুক্ত খোলা মুখবিশিষ্ট চোঙ। এর ভিতরে ফানেলসহ একটি কাচের পাত্র বসানো থাকে। মূল তামার চোঙটি মাটিতে এমনভাবে বসানো থাকে যাতে এর ওপর অংশ ৩০ সেন্টিমিটার মাটির ওপরে থাকে। বৃষ্টির ফোটা কাচের পাত্রে জমা হয় এবং সাধারত বর্ষাকালে প্রতি ২৪ ঘন্টায় কশবার তা খালি করা হয়। কাচের পাত্রে দাগ দেওয়া থাকায় সংগ্রহীত পানির। পরিমাণ সহজেই পরিমাপ করা যায়। আধুনিক আদর্শ বৃষ্টি মাপনী (Rain gauge) একটি ২০ সেঃ মেঃ ব্যাসের খোলামুখ সগ্রহ পাত্র। এই খোলামুখে পতিত বৃষ্টি ফানেলের মাধ্যমে একটি চোঙ্গাকৃতির মাপনী পাত্রে জমা হয়। চোঙ্গাকৃতি পাত্রটির চ্ছেদ আয়তন (Cross-Sectional area) সংগ্রহ পাত্রের চ্ছেদ আয়তন এর এক দশমাংশ (১/১০) হয়। চোঙা সরু মুখ বিশিষ্ট হওয়ায় বাষ্পীভবনকে হ্রাস করে। ০.০২৫ সেঃ মেঃ এর কম বৃষ্টিপাত সামান্য (Trace) বৃষ্টি হিসাবে পরিগণিত হয়।

বৃষ্টি মাপনী যন্ত্র খোলা জায়গায় বসানো হয় যাতে কোন গাছের বা দালানের পানি ফানেলের ভিতরে প্রবেশের সুযোগ না পায়। তাছাড়া কাঁচের পাত্রটি ফানেল দ্বারা ঢাকা থাকায় সরাসরি সূর্যালোকের মাধ্যমে বৃষ্টির পানি বাম্পায়নেরও সুযোগ থাকে না এবং চোঙটি ৩০ সেন্টিমিটার মাটির ওপর থাকায় ভূমির ছিটানো পানিও ফানেলে পৌছে না।  সময়ের সাথে বৃষ্টিপাতের তীব্রতা ও পরিমাপের জন্য বিভিন্ন ধরণের অত্যাধুনিক মাপনী ব্যবহৃত হয়। যেমন-

টিপিং বাকেট মাপনী (Tipping-bucket gauge); 

ওজন মাপনী (Weighing gauge)


বারিপাত পরিমাপের ক্ষেত্রে কতিপয় সতর্কতা একান্ত প্রয়োজন, সেগুলো নিম্নরূপঃ

বারিপাত পরিমাপে কি কি সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন

১. বৃষ্টি মাপনীকে ঘর বাড়ী, দালান বা কোন বাঁধার (Obstructions) আড়ালে রাখা যাবে না; উন্মুক্ত স্থানে রাখতে হবে। 

২. বায়ু ও বায়ুপ্রবাহ বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই বৃষ্টিপাত পরিমাপের জন্য অসুবিধা তৈরী করে। এজন্য মাপনীর কাছে একটি বায়ু আড়াল (Wind screen) বসাতে হবে।

৩. তুষারপাতের পরিমাপের সময় দুটি পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়, পুরুত্ব ও পানির সমতা (Water Equivalent)। সাধারণত পুরুত্ব কোনো কাঠির সাহায্যে মাপা হয়। সাধারণ বায়ু প্রবাহেও তুষার মুক্ত ভাবে বিচরণ করে। এজন্য বৃক্ষ বা বাড়ী হতে দূরে খোলা স্থানে একাধিক পরিমাপ নিতে হয় ও গড় মান বের করতে হয়। পানি সম পরিমাপের জন্য, নমুনা সংগ্রহ করে বিগলিত করে পরিমাপ করা হয়। সাধারণত প্রতি দশগুণ পুরুত্বের তুষার থেকে ১ গুণ পানি পাওয়া যায়। অনেক সময় সমান ক্ষেত্রফল বিশিষ্ট ৩০ সেঃ মিঃ পুরু হালকা তুষার কিম্বা ৪ সেঃ মিঃ পুরুত্বের ঘন তুষার থেকে ১ সেঃ মিঃ পানি হতে পারে।

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comment below if you have any questions

অফিস/বেসিক কম্পিউটার কোর্স

এম.এস. ওয়ার্ড
এম.এস. এক্সেল
এম.এস. পাওয়ার পয়েন্ট
বাংলা টাইপিং, ইংরেজি টাইপিং
ই-মেইল ও ইন্টারনেট

মেয়াদ: ২ মাস (সপ্তাহে ৪দিন)
রবি+সোম+মঙ্গল+বুধবার

কোর্স ফি: ৪,০০০/-

গ্রাফিক ডিজাইন কোর্স

এডোব ফটোশপ
এডোব ইলাস্ট্রেটর

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৮,৫০০/-

ওয়েব ডিজাইন কোর্স

এইচটিএমএল ৫
সিএসএস ৩

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৮,৫০০/-

ভিডিও এডিটিং কোর্স

এডোব প্রিমিয়ার প্রো

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৯,৫০০/-

ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স

ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম, এসইও, গুগল এডস, ইমেইল মার্কেটিং

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ১২,৫০০/-

অ্যাডভান্সড এক্সেল

ভি-লুকআপ, এইচ-লুকআপ, অ্যাডভান্সড ফাংশনসহ অনেক কিছু...

মেয়াদ: ২ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৬,৫০০/-

ক্লাস টাইম

সকাল থেকে দুপুর

১ম ব্যাচ: সকাল ০৮:০০-০৯:৩০

২য় ব্যাচ: সকাল ০৯:৩০-১১:০০

৩য় ব্যাচ: সকাল ১১:০০-১২:৩০

৪র্থ ব্যাচ: দুপুর ১২:৩০-০২:০০

বিকাল থেকে রাত

৫ম ব্যাচ: বিকাল ০৪:০০-০৫:৩০

৬ষ্ঠ ব্যাচ: বিকাল ০৫:৩০-০৭:০০

৭ম ব্যাচ: সন্ধ্যা ০৭:০০-০৮:৩০

৮ম ব্যাচ: রাত ০৮:৩০-১০:০০

যোগাযোগ:

আলআমিন কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র

৭৯৬, পশ্চিম কাজীপাড়া বাসস্ট্যান্ড,

[মেট্রোরেলের ২৮৮ নং পিলারের পশ্চিম পাশে]

কাজীপাড়া, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬

মোবাইল: 01785 474 006

ইমেইল: alamincomputer1216@gmail.com

ফেসবুক: facebook.com/ac01785474006

ব্লগ: alamincomputertc.blogspot.com

Contact form

নাম

ইমেল *

বার্তা *