Home » » বার ভূঁইয়া কারা

বার ভূঁইয়া কারা

বার ভূঁইয়া কারা / বার ভুইয়া কারা/ বারো ভূঁইয়া বলতে কি বুঝায়

কররানি বংশের শেষ শাসক দাউদ কররানির মৃত্যুর পর বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে অনেক আফগান জমিদার, হিন্দু সামন্ত প্রধান, স্থানীয় জমিদার এবং ভূইয়ারা স্বাধীনভাবে শাসন করছিল। এই স্থানীয় শাসকবর্গ মোগল কেন্দ্রীয় শক্তির অস্তিত্ব অস্বীকার করে। সম্রাট আকবরের সময়ের ঐতিহাসিক আবুল ফযল বলেছিলেন ভাটির ভূঁইয়ারাই মোগলদের  বাংলা জয়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। ইতিহাসে এই ভূঁইয়ারা বার ভূঁইয়া নামে পরিচিত। ভাটি বলতে যে অঞ্চল বোঝায় তার সীমানা হলো পশ্চিমে ইছামতি নদী, দক্ষিণে পদ্মা নদী, পূর্বে ত্রিপুরা রাজ্য এবং উত্তরে বৃহত্তর ময়মনসিংহসহ উত্তর-পূর্বে সিলেটের বানিয়াচংগ। পদ্মা, ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনা এই তিনটি বড় নদী ও তাদের শাখা প্রশাখা বেষ্টিত ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট ও ত্রিপুরার নিম্নাঞ্চল নিয়েই ভাটি অঞ্চল। সম্রাট আকবরের সময়ের বার ভূইয়াদের নেতা  ছিলেন সােনারগাঁও এর জমিদার ঈসাখান মসনদে আলা। এ সময়ের অনান্য ভূইয়াদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন বিক্রমপুরের জমিদার চাঁদ রায় ও কেদার রায়; ভাওয়ালের গাজী পরিবার, যশোরের প্রতাপাদিত্য, বাকলার কন্দর্প নারায়ণ, ফতেহবাদের মুরাদ খান, বুকাইনগরে খাজা ওসমান ও ভুলুয়ার লক্ষণ মানিক্য এরা সকলেই সম্রাট আকবরের সময় বাংলায় মোগল আগ্রাসনকে রুখে দিয়েছিলেন। ভাটির জমিদারদের মধ্যে ঈখান ও তার ছেলে মুসাখান ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ।

১৫৭৬ এ রাজমহলের যুদ্ধের পর বাংলার আফগান শাসনের সমাপ্তি হলেও ঈসাখান ছিলেন সম্পূর্ণ স্বাধীন। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন একা সাম্রাজ্যবাদী মোগলদের বিরুদ্ধে জয় লাভ করতে পারবেন না। তাই তিনি পার্শ্ববর্তী অন্যান্য জমিদার ও আফগান দলপতিদের নিয়ে একটি রাজনৈতিক ও সামরিক মৈত্রী তৈরি করেন। ঈসাখানের নেতৃত্বে এই সামরিক শক্তির ।  প্রধান অবলম্বন ছিল তাদের যুদ্ধ রণতরী। ১৫৭৮ সালে বর্তমান কিশোরগঞ্জ জেলার কাস্তলে ঈসাখানের সাথে মোগলদের। যুদ্ধ হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে ঈসাখান হেরে গেলেও পরবর্তীতে সম্মিলিত শক্তির কাছে মোগলরা পরাজিত হয়। ১৫৮৩ ও ১৫৮৪ খ্রিস্টাব্দেও ঈসাখান আগ্রাসী সৈন্যবাহিনীকে যথাক্রমে বাজিতপুরে ও কাত্ৰাবোতে পরাস্ত করেন। ১৫৮৬ সালেও মোগলরা ঈখানকে পরাস্ত করতে ব্যর্থ হন। ঈসাখানের সাথে মোঘল বাহিনীর শেষ যুদ্ধ হয় রাজা মানসিংহের নেতৃত্বে। এই যুদ্ধেও মোগলরা তার কাছে পরাজিত হন এবং অনেক মোগল সৈন্য বন্দি হন। ১৫৯৯ খ্রিস্টাব্দে ঈসাখান মৃত্যুবরণ করেন।

সম্রাট জাহাঙ্গীরের সময়ে মির্জা নাথানের লেখা বাহারীস্তান ই গায়েবী গ্রন্থে সতের শতকের প্রথম দশকে ভাটি অঞ্চলে স্বাধীন। জমিদারদের যে তালিকা পাওয়া যায় এ মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী হিসেবে বলা হয় মুসা খান মসনদ-ই-আলা’কে। ১৫৯৯ সালে তিনি জমিদার হন। তার রাজ্যসীমা ছিল ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ, ত্রিপুরার কিছু অংশ এবং সুসঙ্গ ছাড়া ময়মনসিংহের সম্পূর্ণ এলাকা। এসময়ের আরেকজন শক্তিশালী জমিদার ছিলেন যশোরের রাজা প্রতাপাদিত্য। তাঁর রাজ্যের পরিধি বর্তমান যশোর, খুলনা ও বাখেরগঞ্জ জেলা নিয়েছিল। তার রাজ্য পশ্চিম দিকে ভাগিরথী নদী পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। এ ছাড়াও সিলেট এলাকায় বায়জিদ কররানি ও তার অধীনস্থ আফগানদের নিয়ন্ত্রণ ছিল। এ সময় ভুলুয়া রাজ্য ছিল রাজা অনন্ত মানিক্যের নিয়ন্ত্রণে। এই রাজ্যটির অবস্থান বর্তমান বৃহত্তর নোয়াখালী। বানিয়াচঙ্গের জমিদার আনোয়ার গাজীও ছিলেন স্বাধীন জমিদারদের মধ্যে একজন।  

মোগল সাম্রাজ্যের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে এই জমিদারগণ ছিলেন স্বাধীনচেতা ও দেশপ্রেমিক। যদিও তারা কোনো রাজবংশের সন্তান ছিলেন না তা সত্বেও তারা বাংলার দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব অঞ্চলে প্রায় তিন দশক সময়কাল মোগল আক্রমণ সফল হতে দেন নি। ভাটি অঞ্চলের স্থানীয় জমিদারদের বশ্যতা স্বীকার করানোর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় মোগলদের দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টায়। ১৫৭৬ খ্রিস্টাব্দে রাজমহলের যুদ্ধে মোঘলদের জয়লাভের পর আকবরনগর (রাজমহল) এ মোগল সুবাহ বাংলার রাজধানী প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু বারো ভূঁইয়াদের স্বাধীন থাকার সংগ্রামকে মোগলরা নিয়ন্ত্রণ আনতে সক্ষম হয়েছিল ১৬১২  খ্রিস্টাব্দের মধ্যে সম্রাট জাহাঙ্গীরের সময় সুবাহদার ইসলাম খান চিশতীর সামরিক দক্ষতা ও কুটনৈতিক কৌশলের মাধ্যমে।  মোগলরা বারো ভূঁইয়াদের দমন ও নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয় এবং সমগ্র বাংলায় তাদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়।

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comment below if you have any questions

অফিস/বেসিক কম্পিউটার কোর্স

এম.এস. ওয়ার্ড
এম.এস. এক্সেল
এম.এস. পাওয়ার পয়েন্ট
বাংলা টাইপিং, ইংরেজি টাইপিং
ই-মেইল ও ইন্টারনেট

মেয়াদ: ২ মাস (সপ্তাহে ৪দিন)
রবি+সোম+মঙ্গল+বুধবার

কোর্স ফি: ৪,০০০/-

গ্রাফিক ডিজাইন কোর্স

এডোব ফটোশপ
এডোব ইলাস্ট্রেটর

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৮,৫০০/-

ওয়েব ডিজাইন কোর্স

এইচটিএমএল ৫
সিএসএস ৩

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৮,৫০০/-

ভিডিও এডিটিং কোর্স

এডোব প্রিমিয়ার প্রো

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৯,৫০০/-

ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স

ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম, এসইও, গুগল এডস, ইমেইল মার্কেটিং

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ১২,৫০০/-

অ্যাডভান্সড এক্সেল

ভি-লুকআপ, এইচ-লুকআপ, অ্যাডভান্সড ফাংশনসহ অনেক কিছু...

মেয়াদ: ২ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৬,৫০০/-

ক্লাস টাইম

সকাল থেকে দুপুর

১ম ব্যাচ: সকাল ০৮:০০-০৯:৩০

২য় ব্যাচ: সকাল ০৯:৩০-১১:০০

৩য় ব্যাচ: সকাল ১১:০০-১২:৩০

৪র্থ ব্যাচ: দুপুর ১২:৩০-০২:০০

বিকাল থেকে রাত

৫ম ব্যাচ: বিকাল ০৪:০০-০৫:৩০

৬ষ্ঠ ব্যাচ: বিকাল ০৫:৩০-০৭:০০

৭ম ব্যাচ: সন্ধ্যা ০৭:০০-০৮:৩০

৮ম ব্যাচ: রাত ০৮:৩০-১০:০০

যোগাযোগ:

আলআমিন কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র

৭৯৬, পশ্চিম কাজীপাড়া বাসস্ট্যান্ড,

[মেট্রোরেলের ২৮৮ নং পিলারের পশ্চিম পাশে]

কাজীপাড়া, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬

মোবাইল: 01785 474 006

ইমেইল: alamincomputer1216@gmail.com

ফেসবুক: facebook.com/ac01785474006

ব্লগ: alamincomputertc.blogspot.com

Contact form

নাম

ইমেল *

বার্তা *