কর্তৃ কারক কাকে বলে
বাক্যে যে ক্রিয়া সম্পাদন করে তাকে বলা হয় কর্তা এবং এই কর্তার সঙ্গে ক্রিয়ার যে সম্পর্ক তাকে বলা হয় কর্তৃকারক।
‘উপমা পড়ছে এই বাক্যে উপমা হল কর্তা। ক্রিয়াকে ‘কে’ বা ‘কারা’ প্রশ্ন করলে যে উত্তর পাওয়া যায় তাই কর্তৃকারক। সাগর দৌড়াচ্ছে – কে দৌড়াচ্ছে? সাগর । সুতরাং ‘সাগর’ কর্তৃকারক। তারা হাঁটছে – কারা হাঁটছে? তারা। তারা কর্তৃকারক।
নানা রকম কর্তৃকারক
বাক্যের ক্রিয়া সম্পাদনের রীতি ও বৈশিষ্ট্য বিচারে দেখা যায় বাক্যের কর্তা কয়েক রকম।
ক) মুখ্য কর্তা : যে বা যারা নিজেই ক্রিয়া সম্পাদন করে তাকে বা তাদের বলা হয় মুখ্য কর্তা। যেমন: শৈলী রান্না করছে। কৃষকেরা ফসল কাটছে। এখানে ‘শৈলী ও কৃষকেরা মুখ্য কর্তা
খ) প্রযোজক কর্তা : মুখ্য কর্তা যখন অন্যকে দিয়ে ক্রিয়া সম্পাদন করায় তখন মুখ্য কর্তাকে বলা হয় প্রযোজক কর্তা। যেমন, কৃষক গরু দিয়ে চাষ করায়। এই বাক্যে 'কৃষক' প্রযোজক কর্তা।
গ) প্রযোজ্য কর্তা : যাকে দিয়ে মুখ্য কর্তার কাজ সম্পাদিত হয় তাকে বলা হয় প্রযোজ্য কর্তা। মিতা ছোট বাচ্চাটিকে হাঁটাচ্ছে। এখানে বাচ্চাটি হল প্রযোজ্য কর্তা।
বাক্যের বাচ্য বা প্রকাশভঙ্গি অনুসারে আরো কয়েক রকম কর্তার রূপ বোঝা যায়। যেমন:
কর্মবাচ্যের কর্তা - আমাকে যেতে হবে।
ভাববাচ্যের কর্তা - তার বোধ হয় খাওয়া হয়নি।
কর্মকর্তৃবাচ্যের কর্তা- ঝড় আসছে। বাড়িগুলো ভেঙে পড়বে।
কর্তৃকারকে বিভক্তির ব্যবহার ও কর্তৃকারকে সাধারণত শূন্য (০) বা অ-বিভক্তি ব্যবহৃত হয়। তবে অন্যান্য বিভক্তির ব্যবহারও রীতিসিদ্ধ । যেমন:
— কর্তৃকারকে শূন্য (০)
বা অ-বিভক্তি: মিতা খেলছে।
এ-বিভক্তি: শাড়িটি চোরে নিয়ে গেছে।
য়-বিভক্তি: ঘোড়ায় গাড়ি টানে।
তে-বিভক্তি: পাখিতে ধান খেয়েছে।
কে-বিভক্তি: আমাকে যেতেই হবে।
র-বিভক্তি: শেষ পর্যন্ত আমার যাওয়া হল না।
দ্বারা (অনুসর্গ): তোমা দ্বারা এ কাজ হবে না।
কর্তৃক (অনুসর্গ): নজরুল কর্তৃক অগ্নি-বীণা রচিত হয়েছে।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comment below if you have any questions