সম্রাট আকবরের রাজপুত নীতি
সম্রাট আকবর ভারতে মোগল শাসন বিস্তার ও সুদৃঢ় করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। এসব পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে তার রাজপুত নীতি, ভূমি ব্যবস্থা তথা মনসবদারী প্রথা ইত্যাদি।
সম্রাট আকবরের রাজপুত নীতি:
ভারতে মোগল রাজ্য বিস্তারের বিরুদ্ধে অন্যতম প্রধান শক্তি ছিল রাজপুত জাতি। জাতিগতভাবে রাজপুতরা ছিল বীর ও স্বজাত্যবোধে সচেতন যোদ্ধা। সম্রাট আকবর রাজ্যের স্থায়িত্ব ও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে একটি যৌক্তিক রাজপুত নীতি গ্রহণ করেন। তাঁর রাজপুত নীতিকে দুভাগে ভাগ করা যায় মিলনাত্বক নীতির অংশ হিসেবে ১. মিত্ৰতামূলক নীতি এবং ২. যুদ্ধদেহী নীতি।
আকবর রাজপুতদের সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন, তাদেরকে উচ্চ পদে নিয়োগ, জিযিয়া ও তীর্থ কর রহিতকরণ, এবং রাজপুত সংস্কৃতি পৃষ্ঠপোষকতা করে মিত্রতা স্থাপন করেন। আকবর স্বয়ং অম্বররাজ বিহারীমলের, বিকানীর ও জয় সিলমিরের রাজপুত কুমারীকে বিয়ে করেন। তিনি ১৫৮৪ খ্রিস্টাব্দে যুবরাজ সেলিমের সাথে জয়পুরের রাজা ভগবান দাসের কন্যার বিয়ে দেন। তিনি রাজার টোডরমল, রাজা বিহারী মল, ভগবান দাস এবং মানসিংহকে প্রশাসনের উচ্চ পদে নিযুক্ত করেন। তিনি জিযিয়া ও তীর্থযাত্রীদের কর বাতিল করেন। তিনি কবি পণ্ডিত ও চিত্রশিল্পীদের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। যুদ্ধাংদেহী নীতির অংশ হিসেবে আকবর রথম্ভোর, যোধপুর, জয়সালমীর, বিকানী এবং চিতোর রাজ্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনা করেন এই অঞ্চলগুলোতে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেন।
রাজপুত নীতির ফলাফল
আকবরের রাজপুত নীতি মোগল সাম্রাজ্যের ভিত্তি সুদৃঢ় করে। এর ফলে মোগলরা পরবর্তী চার পুরুষ ব্যাপী রাজপুতদের সমর্থন ও সহযোগিতা লাভ করে। এ ছাড়াও রাজপুত ও মোগল সংস্কৃতির সংমিশ্রণ ও সমন্বয়ের ধারা লক্ষ্য করা যায়।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comment below if you have any questions