Home » » মন্ত্রী মিশন পরিকল্পনা কি

মন্ত্রী মিশন পরিকল্পনা কি

মন্ত্রী মিশন পরিকল্পনা কি

মন্ত্রী মিশন পরিকল্পনা : মন্ত্রী মিশন পরিকল্পনা সম্পর্কে ধারণা নেয়ার আগে ‘ক্রিপস মিশন’ সস্পর্কে একটু জানতে হবে। আপনারা জানেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ইংল্যান্ড সরাসরি জড়িয়ে পড়েছিল। এ সময় ব্রিটিশ সরকার ভারতীয় জনসাধারণের সমর্থন পাওয়া জরুরী মনে করে। এই উদ্দেশ্যেই বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার উইনস্টন চার্চিল তাঁর মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ সদস্য স্যার স্ট্যাফোর্ড ক্রিপসকে ভারতে পাঠান। পরামর্শ দেন ভারতবাসীর সাথে যেন একটি শাসনতান্ত্রিক পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের ২৩ মার্চ ক্রিপস দিল্লীতে কংগ্রেস, মুসলিম লীগ ও অন্যান্য দলের সাথে আলোচনা করে একটি শাসনতান্ত্রিক সংস্কারের প্রস্তাব  পেশ করেন। ইতিহাসে এই প্রস্তাব ‘ক্রিপস মিশন পরিকল্পনা' নামে পরিচিত। এ পরিকল্পনায় যুদ্ধ শেষে ডোমিনিয়ন বা ঔপনিবেশিক স্বায়তশাসন দান, শাসনতন্ত্র প্রণয়নের জন্য একটি গণপরিষদ গঠন ও একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রস্তাব করা হয়। কিন্তু ক্রিপসের দেয়া প্রস্তাব কংগ্রেস বা মুসলিম লীগ গ্রহণ করে নি। বরং কংগ্রেস ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন শুরু করে। ক্রিপস মিশন ব্যর্থ হওয়ার পর হাল ছেড়ে দেয় নি বৃটিশ সরকার। এবার এগিয়ে আসেন ভাইসরয় লর্ড ওয়াভেল। তিনি ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে সিমলায় একটি বৈঠকে মিলিত হন। কিন্তু এই বৈঠকও ব্যর্থ হয়। অবশেষে সিমলা বৈঠকের সূত্র ধরে ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে ভারত সচিব লর্ড পেথিক লরেন্স-এর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল ভারতে আসে। লরেন্স ছাড়া এই প্রতিনিধি দলের অন্য দুই সদস্য ছিলেন স্যার স্ট্যাফোর্ড ক্রিপস ও এ.ভি. আলেকজান্ডার। এই মিশন কংগ্রেস ও মুসলিম লীগ নেতাদের সাথে আলোচনার পর ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের মে মাসে ভারতের প্রস্তাবিত শাসনতন্ত্র সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব পেশ করেন। ইতিহাসে একে ‘মন্ত্রী মিশন পরিকল্পনা' বলা হয়।

মন্ত্রী মিশনের প্রস্তাবসমূহ মূলত ভারত উপমাহদেশকে একটি যুক্তরাষ্ট্রে পরিণত করার প্রস্তাব ছিল মন্ত্রী মিশন পরিকল্পনায়। তিন স্তর বিশিষ্ট ছিল এই  যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনা। এগুলো হচ্ছে -

ক. প্রস্তাব অনুযায়ী কেন্দ্রে একটি অন্তবর্তী কালীন সরকার গঠন করা হবে

খ. একটি স্বায়ত্তশাসিত ভারত ইউনিয়ন গঠন করা হবে সেখানে অন্তর্ভুক্ত থাকবে ব্রিটিশ ভারত ও দেশীয় রাজ্যগুলো এবং  

গ. ভারতীয় প্রদেশগুলোকে তিন ভাগে ভাগ করা হবে।

‘ক’ গ্রুপে থাকবে, মাদ্রাজ, বোম্বে, যুক্তপ্রদেশ, বিহার, মধ্যপ্রদেশ ও উড়িষ্যা, ‘খ’ গ্রুপে, উত্তর পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ, পাঞ্জাব ও সিন্ধু এবং ‘গ’ গ্রুপে থাকবে বাংলা ও আসাম। সিদ্ধান্ত হয় প্রত্যেক গ্রুপের জন্য একটি গণপরিষদ গঠন করা হবে। মন্ত্রী মিশন প্রস্তাব পেশের পাশাপাশি শর্ত জুড়ে দিয়েছিল যে পরিকল্পনার পুরোটিই গ্রহণ করতে হবেঅংশবিশেষ নয়।

ভারতীয় ইউনিয়নের হাতে থাকবে দেশরক্ষা, পররাষ্ট্র, যোগাযোগ এবং মুদ্রা বিভাগের দায়িত্ব। অন্যান্য বিষয়ের দায়িত্ব ন্যাস্ত থাকবে প্রদেশগুলোর হাতে। এছাড়াও বলা হয় কেন্দ্রীয় সংসদে মোট ৩৮৫টি আসনের মধ্যে ৭৮টি মুসলমানদের জন্য নির্ধারিত করা হয়। পরিকল্পনায় এই সুযোগ রাখা হয় যে, কোনো গ্রুপ ইচ্ছা করলে দশ বছর পর কেন্দ্র থেকে বিচ্ছিন্ন হতে পারবে। 


মন্ত্রী মিশন প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়া 

মন্ত্রী মিশন পরিকল্পনা ভারতের বিভিন্ন দলের রাজনীতিকদের মধ্যে দারুণ আলোড়ন সৃষ্টি করে। কারণ এ বিষয়টি সবার সামনে স্পষ্ট হয় যে, ব্রিটিশ সরকার ভারতীয়দের নিকট এখন ক্ষমতা হস্তান্তর করতে চায়। সুতরাং কংগ্রেস এবং মুসলিম লীগ উভয়েই পরিকল্পনার খুঁটিনাটি বিষয় বিশ্লেষণ করতে থাকে। এই পরিকল্পনার ভিতর উভয় দলই নিজেদের মতো করে সুবিধা খুঁজতে থাকেন। এক কেন্দ্রিক সরকার গঠনের প্রস্তাব কংগ্রেসের ভাল লাগে। কারণ এর ভিতর দিয়ে তারা অখণ্ড ভারত প্রতিষ্ঠার সুযোগ দেখতে পায়। অন্যদিকে গ্রুপিং ব্যবস্থা উৎসাহ দেয় মুসলিম লীগকে। কারণ এই ব্যবস্থায় পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার দাবি বাস্তবায়ন সম্ভব। একটা নির্দিষ্ট সময় পরে গ্রুপগুলো ভারতীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে বলে লীগ নেতারা মন্ত্রী মিশন পরিকল্পনাকে গ্রহণ করে নেয় যদিও পরবর্তী সময় পুরো পরিকল্পনাকেই প্রত্যাখ্যান করে। অন্য দিকে প্রথম থেকেই কংগ্রেসের অসহযোগিতার ফলে মন্ত্রীমিশন পরিকল্পনা শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়ে যায়।


পরিশেষে বলা যায়, ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ভারতের অবসান ঘটার কিছু আগে বৃটিশ সরকার কীভাবে এ দেশ ছেড়ে যাবে অথবা কোনো পদ্ধতিতে এদেশবাসীর হাতে ক্ষমতা তুলে দিবে, তা নিয়ে প্রস্তাব ও পরিকল্পনা করতে থাকে। এরই চূড়ান্ত একটি পদক্ষেপ ছিল ‘মন্ত্রী মিশন পরিকল্পনা। এই পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হয় যে, ব্রিটিশ সরকার এখন ভারতীয়দের  হাতে ক্ষমতা তুলে দিতে চায়। মন্ত্রী মিশন পরিকল্পনায় যে প্রস্তাব রাখা হয়, তাতে কংগ্রেস ও মুসলিম লীগ উভয়ই তাদের দলীয় স্বার্থ রক্ষার প্রশ্ন নিয়ে ভাবতে থাকে। শেষ পর্যন্ত মুসলিম লীগ মন্ত্রী মিশন পরিকল্পনা গ্রহণে সম্মত হলেও কংগ্রেস পরিকল্পনাটি প্রত্যাখ্যান করে। এভাবে ব্যর্থ হয়ে যায় মন্ত্রী মিশন পরিকল্পনা।

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comment below if you have any questions

অফিস/বেসিক কম্পিউটার কোর্স

এম.এস. ওয়ার্ড
এম.এস. এক্সেল
এম.এস. পাওয়ার পয়েন্ট
বাংলা টাইপিং, ইংরেজি টাইপিং
ই-মেইল ও ইন্টারনেট

মেয়াদ: ২ মাস (সপ্তাহে ৪দিন)
রবি+সোম+মঙ্গল+বুধবার

কোর্স ফি: ৪,০০০/-

গ্রাফিক ডিজাইন কোর্স

এডোব ফটোশপ
এডোব ইলাস্ট্রেটর

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৮,৫০০/-

ওয়েব ডিজাইন কোর্স

এইচটিএমএল ৫
সিএসএস ৩

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৮,৫০০/-

ভিডিও এডিটিং কোর্স

এডোব প্রিমিয়ার প্রো

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৯,৫০০/-

ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স

ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম, এসইও, গুগল এডস, ইমেইল মার্কেটিং

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ১২,৫০০/-

অ্যাডভান্সড এক্সেল

ভি-লুকআপ, এইচ-লুকআপ, অ্যাডভান্সড ফাংশনসহ অনেক কিছু...

মেয়াদ: ২ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৬,৫০০/-

ক্লাস টাইম

সকাল থেকে দুপুর

১ম ব্যাচ: সকাল ০৮:০০-০৯:৩০

২য় ব্যাচ: সকাল ০৯:৩০-১১:০০

৩য় ব্যাচ: সকাল ১১:০০-১২:৩০

৪র্থ ব্যাচ: দুপুর ১২:৩০-০২:০০

বিকাল থেকে রাত

৫ম ব্যাচ: বিকাল ০৪:০০-০৫:৩০

৬ষ্ঠ ব্যাচ: বিকাল ০৫:৩০-০৭:০০

৭ম ব্যাচ: সন্ধ্যা ০৭:০০-০৮:৩০

৮ম ব্যাচ: রাত ০৮:৩০-১০:০০

যোগাযোগ:

আলআমিন কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র

৭৯৬, পশ্চিম কাজীপাড়া বাসস্ট্যান্ড,

[মেট্রোরেলের ২৮৮ নং পিলারের পশ্চিম পাশে]

কাজীপাড়া, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬

মোবাইল: 01785 474 006

ইমেইল: alamincomputer1216@gmail.com

ফেসবুক: facebook.com/ac01785474006

ব্লগ: alamincomputertc.blogspot.com

Contact form

নাম

ইমেল *

বার্তা *