কবির চৌধুরী
জাতীয় অধ্যাপক, শিক্ষাবিদ, লেখক, সংস্কৃতি ও সমাজকর্মী কবীর চৌধুরী ১৯২৩ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ছিলেন খান বাহাদুর আবদুল হালিম চৌধুরী ও মাতা আফিয়া বেগম। তাঁর পৈতৃক নিবাস নোয়াখালীর চাটখিল থানার গােপাইরবাগ গ্রামের মুন্সীবাড়ি। তাঁর স্ত্রী মেহের কবীর ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক।
কবীর চৌধুরী ১৯৩৮ সালে ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল থেকে প্রবেশিকায় সপ্তম স্থান ও ১৯৪০ সালে ঢাকা ইন্টারমিডিয়েট কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে চতুর্থ স্থান অধিকার করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৪৩ সালে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক সম্মান ও ১৯৪৪ সালে স্নাতকোত্তর উভয়টিতে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়ে স্বর্ণপদক লাভ করেন। তিনি বিভিন্ন সরকারি কলেজের অধ্যাপক, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক ও সভাপতিসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ডে নিযুক্ত ছিলেন। ১৯৯৮ সালে তাঁকে জাতীয় অধ্যাপকের মর্যাদায় ভূষিত করা হয়।
তিনি শিক্ষাবিদ প্রাবন্ধিক ও অনুবাদক হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন। তাঁর রচিত, সম্পাদিত ও অনূদিত গ্রন্থের সংখ্যা দুই শতেরও বেশি। একদিকে বাঙালি পাঠকদের বিশ্বসাহিত্যের সঙ্গে পরিচিত করে তােলা এবং অন্যদিকে বাংলা সাহিত্যকে ইংরেজি অনুবাদের মাধ্যমে বিদেশি পাঠকদের সামনে তুলে ধরা ছিলো তার অনুবাদকর্মের অনন্য দিক।
কবীর চৌধুরী আজীবন ছিলেন প্রগতিশীল সমাজতান্ত্রিক মতবাদে বিশ্বাসী ও অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক রাজনীতির প্রবক্তা। তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার ও একুশে পদকসহ দেশে-বিদেশে বিভিন্ন পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হন।
কবীর চৌধুরী ২০১১ সালের ১৩ ডিসেম্বর ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।
তাঁর উল্লেখযোগ্য রচনা :
অবিস্মরণীয় বই, ছয় সঙ্গী, প্রাচীন ইংরেজি কাব্য সাহিত্য, আধুনিক মার্কিন সাহিত্য, সাহিত্য কোষ, পুশকিন ও অন্যান্য, অসমাপ্ত মুক্তিসংগ্রাম ও অন্যান্য, নজরুল দর্শন, ছোটদের ইংরেজি সাহিত্যের ইতিহাস, বঙ্গবন্ধু, নির্বাচিত প্রবন্ধ, বিবিধ রচনা, মানুষের শিল্পকর্ম, স্মৃতিকথা, বাংলাদেশের উৎসব: নববর্ষ প্রভৃতি।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comment below if you have any questions