বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি কি
যেকোনো বিজ্ঞানের সফলতা নির্ভর করে তার অনুসৃত বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির উপর। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির সাফল্য নির্ভর করে তত্ত্ব নির্মাণের উপর। যথাযথ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করে গবেষণার মাধ্যমে তত্ত্ব নির্মাণ করা হয়। সাধারণভাবে বলা হয়, গবেষণায় বৈজ্ঞানিক উপায়ে তথ্য সংগ্রহের কৌশল হলো বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি। এখানে সুনির্দিষ্ট ও নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়। একজন গবেষক তার গবেষণায় কোন পদ্ধতি, প্রক্রিয়া বা কৌশল অনুসরণ করবেন তা গবেষণার বিষয়বস্তু, উদ্দেশ্য এবং গবেষকের দক্ষতার উপর ।
বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির সংজ্ঞায় Phillips বলেন, The scientific method is a problem-solving process which involves: (a) creating theory (b) using data to verify theory and (c) creating more profound explanations and accurate predictions of phenomena. (বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি একটি প্রক্রিয়া হিসেবে তত্ত্ব তৈরি, তত্ত্ব নিরীক্ষায় তথ্যের ব্যবহার এবং অধিকতর তাৎপর্যপূর্ণ ব্যাখ্যা ও ঘটনার পূর্বানুমানের সঙ্গে জড়িত)।
Barry F. Anderson, The scientific method is here defined as the following set of rules for describing and explaining phenomena: operational definition, generality, controlled observation, repeated observation, confirmation and consistency (বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিকে ঘটনার বর্ণনা এবং ব্যাখ্যার লক্ষ্যে কতিপয় বিধিমালা হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা যায়। যেমন: কার্যকরী সংজ্ঞা, সাধারণতা, নিয়ন্ত্রিত পর্যবেক্ষণ, পুন:পর্যবেক্ষণ, নিশ্চিতকরণ এবং সংগতিবিধান)।
বস্তুত বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি একটি প্রক্রিয়াকে নির্দেশ করে। বিজ্ঞান পর্যবেক্ষণগত প্রভাব ও কার্যকারিতার উপর অধিক গুরুত্ব দেয়। প্রকৃতপক্ষে বিজ্ঞানের পদ্ধতিসমূহ হলো প্রস্তাবিত জ্ঞানের উৎপাদন, রূপান্তর ও সমালোচনার সাংস্কৃতিক রীতি।
বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির বৈশিষ্ট্য
বিজ্ঞানের ভিত্তি হচ্ছে এর সুশৃঙ্খল পদ্ধতি। কার্যকর পদ্ধতি ব্যতীত বিজ্ঞানের উৎকর্ষ অসম্ভব। এখানে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির কতগুলো বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হল:
১। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি বস্তুনিষ্ঠ এবং অভিজ্ঞতাভিত্তিক;
২ । বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি প্রয়োগের ক্ষেত্রে অনুসন্ধানের বিষয় সম্পর্কে অনুসিদ্ধান্ত গঠন করা হয়;
৩। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি নিয়মতান্ত্রিক এবং যাচাইযোগ্য;
৪ । বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির প্রায়োগিক সাফল্য বিষয়গত যথার্থতা তুলে ধরে;
৫। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি সমস্যাকে চিহ্নিত করে এবং সমাধানের দিকনির্দেশনা প্রদান করে;
৬। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি তথ্য-উপাত্ত এবং যুক্তি-প্রমাণের ভিত্তিতে উপসংহারে পৌঁছাতে সাহায্য করে;
৭। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি চুড়ান্তভাবে বাস্তবতার উপরেই প্রতিষ্ঠিত থাকে;
৮ । গবেষণায় কার্যকর নির্দেশনা দেওয়ার জন্য বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি প্রত্যয়গত ও তাত্ত্বিক কাঠামোর সহায়তা প্রদান করে;
৯। পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে গবেষণাধীন বিষয় সম্পর্কে অনুমান ও পূর্বধারণা প্রদান করে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি;
১০ । বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির মাধ্যমে প্রণীত অনুসিদ্ধান্ত আরোহমূলক উপায়ে পর্যবেক্ষণ ও পুন:পরীক্ষণ পরিচালনা করা হয়।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comment below if you have any questions