Home » » বিজ্ঞান কি

বিজ্ঞান কি

বিজ্ঞান কি

বিজ্ঞান শব্দের অর্থ ‘বিশেষ জ্ঞান'। আমাদের চারপাশের পরিবেশে সব সময়ই কিছু না কিছু ঘটছে এবং আমরা যদি তা দেখতে, উপলব্ধি করতে বা বুঝতে পারি তবে বলা চলে আমাদের জ্ঞানের পরিধি বাড়ছে। কিন্তু এ জ্ঞান হলো সাধারণধর্মী জ্ঞান। বিজ্ঞান হলো পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে পারিপাশির্বক ঘটনাবলি থেকে প্রাপ্ত ও যাচাইকৃত জ্ঞান।

বিভিন্ন মনিষী বিজ্ঞানের বিভিন্ন সংজ্ঞা দিয়েছেন।
১। রবার্ট সান্ডের মতে, ‘‘বিজ্ঞান হল জ্ঞানের সমাবেশ ও একটি পদ্ধতি।’’
২। কুলসন ও স্টোনের মতে, ‘‘বিজ্ঞান হল সুসংবদ্ধ জ্ঞান।’’

সুতরাং আমরা বলতে পারি বিজ্ঞান হলো, কোনো সমস্যা সম্পর্কে ধারাবাহিকভাবে তথ্য সংগ্রহ, বিশ্লেষণ এবং পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে প্রাপ্ত জ্ঞান। আর যিনি উপরের পদ্ধতি অনুসরণ করে কোনো সমস্যার সমাধান করেন তিনিই বিজ্ঞানী।

বিজ্ঞানের শাখা-প্রশাখা

পৃথিবীর সকল জ্ঞান পরস্পরের সাথে নিবিড়ভাবে সম্পর্কযুক্ত। জ্ঞানকে একে অন্যের সাথে সম্পর্কহীনভাবে বিভক্ত করা যায় না। যেমন : জীববিজ্ঞানী যখন কোনো কোষ সম্পর্কে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন তখন তাকে উন্নত ধরনের প্রাণ রাসায়নিক কৌশল অবলম্বন করতে হয়। আবার পদার্থবিজ্ঞানী যখন নিউক্লিয়াস সম্পর্কে গবেষণা করেন তখন রসায়নের জ্ঞানের প্রয়োজন হয়। তবুও পাঠের সুবিধার জন্য বিজ্ঞানকে প্রধানত দুটি শাখায় ভাগ করা হয়েছে। যথা :- জড়বিজ্ঞান ও জীববিজ্ঞান।

জড়বিজ্ঞান : যাদের জীবন নেই, তাদের সম্পর্কে যে বিজ্ঞানে গবেষণা করা হয়, তাকে জড়বিজ্ঞান বলে। জড়বিজ্ঞানের দুটি প্রধান শাখা হল: পদার্থবিদ্যারসায়নবিদ্যা

জীববিজ্ঞান : যাদের জীবন আছে, তাদের সম্পর্কে যে বিজ্ঞানে গবেষণা করা হয়, তাকে জীববিজ্ঞান বলে। জীববিজ্ঞানের দুটি প্রধান শাখা হল: উদ্ভিদবিদ্যাপ্রাণিবিদ্যা

বিজ্ঞানের অগ্রগতির ফলে বর্তমানে বিজ্ঞানের অনেক নতুন নতুন শাখার জনম হয়েছে। যেমন: জ্যোতির্বিদ্যা, ভূ-বিদ্যা, আবহাওয়া বিদ্যা, ভেষজ বিজ্ঞান, প্রাণ-পদার্থবিদ্যা, স্বাস্থ্য-পদার্থবিদ্যা, মহাকাশ-জীববিদ্যা, ভূ-পদার্থবিদ্যা ইত্যাদি।

বৈজ্ঞানিক কর্মপদ্ধতি

সকল বিজ্ঞানীই তাদের গবেষণার কাজ পরিচালনার জন্য এক বা একাধিক নির্দিষ্ট ধারাবাহিক পদ্ধতি অনুসরণ করেন। এই পদ্ধতিকেই বৈজ্ঞানিক কর্মপদ্ধতি বলে। এ পদ্ধতিগুলোর মধ্যে যথেষ্ট মিল রয়েছে এবং সবগুলোই ধারাবাহিক।

বৈজ্ঞানিক কর্মপদ্ধতির প্রথমেই বিজ্ঞানী
১। একটি সমস্যা চিহ্নিত করেন।
২। সমস্যাটি সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করেন।
৩। যাবতীয় তথ্যের ভিত্তিতে বিচার বিশ্লেষণ করে সমস্যাটি সম্পর্কে আনুমানিক সিদ্ধান্ত নেন।
৪। এ আনুমানিক সিদ্ধান্ত সঠিক কিনা তা যাচাইয়ের জন্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন।
৫। পরীক্ষার শেষে আনুমানিক সিদ্ধান্তএবং পরীক্ষার সাহায্যে প্রাপ্ত তথ্যের তুলনা করেন। যদি সিদ্ধান্ত দুটি না মিলে তবে নতুন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
৬। সবশেষে গৃহীত সিদ্ধান্ত অন্যের যাচাইয়ের জন্য তার পরীক্ষার ধারাবাহিক পদ্ধতি ও সিদ্ধান্ত প্রকাশ করেন।

বৈজ্ঞানিক গবেষণা ছাড়া সাধারণ মানুষও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এ কর্মপদ্ধতি অনুসরণ করে থাকে।

উদাহরণ : একজন চিকিৎসকের চিকিৎসা পদ্ধতি লক্ষ্য করলে আমরা এর বাস্তব প্রয়োগ দেখতে পাই। মনে করুন, একজন রোগী একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে আসলেন। এখানে রোগীর অসুখটাই চিকিৎসকের সমস্যা। প্রথমে চিকিৎসক রোগীর অসুখ সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য রোগীর কাছ থেকে সংগ্রহ করেন। এ তথ্যের ভিত্তিতে তিনি রোগীর অসুখ সম্পর্কে একটি আনুমানিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। এ সিদ্ধান্ত সঠিক কিনা তা যাচাইয়ের জন্য বিভিন্ন পরীক্ষা- নিরীক্ষা (যেমন : রক্ত পরীক্ষা, মল-মূত্র পরীক্ষা) করেন, অবশ্য এ পরীক্ষা তিনি নিজ হাতে করেন না। এ পরীক্ষা নিরীক্ষা হতে প্রাপ্ত তথ্যের সাথে তিনি আনুমানিক সিদ্ধান্তের তুলনা করেন। সবশেষে তিনি একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন এবং রোগীর সে অনুযায়ী চিকিৎসা পদ্ধতি নির্দিষ্ট করেন। রোগীর ভবিষ্যৎ শারিরীক অবস্থার প্রতি দৃষ্টি রাখেন যতদিন না পর্যন্ত সে সুস্থ হয়ে ওঠে। আমরা সুস্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি তিনি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ব্যবহার করলেন।

আমরা উপরের বাস্তব উদাহরণটির মাধ্যমে বলতে পারি যে, জীবনের সর্বক্ষেত্রে বিজ্ঞান চর্চার মাধ্যমে আমরা সুষ্ঠু সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারি এবং সমস্যার সমাধান করতে পারি।

বিজ্ঞান চর্চার গুরুত্ব

বর্তমান যুগ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগ। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সাহায্য ছাড়া আমরা এক পা চলতে পারি না। আমরা যে খাদ্য খাচ্ছি, যে পোশাক পরছি, যে ঘরে বাস করছি, যে চিকিৎসা সুবিধা পাচ্ছি, সবই বিজ্ঞানের আবিষ্কার ও এর প্রযুক্তি ভিত্তিক প্রয়োগের অবদান। বর্তমান কৃষি, শিল্প-কারখানা, সংবাদ আদান-প্রদান, প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ, মহাকাশ গবেষণা সবই বিজ্ঞানের উপর নির্ভরশীল, আর এসব সাফল্যের কারণেই মানুষ আজ গতকালের চেয়ে অধিক আত্মবিশ্বাসের সাথে পৃথিবীতে বাস করছে। বিজ্ঞানের আবিষ্কারের কারণেই আজ আমরা প্রাকৃতিক দুর্যোগ সংগঠিত হওয়ার আগেই তা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিতে পারছি।

গত কয়েক শতকের আলোচনা থেকেই আমরা বিজ্ঞানের জয়যাত্রা সম্পর্কে জানতে পারি।

১। জেমস ওয়াটের বাষ্পীয় ইঞ্জিন আবিষ্কার আঠার শতাব্দীতে মানব সমাজের এক বহু কল্যাণকর আবিষ্কার। এরপর রেলগাড়ি আবিষ্কৃত হলো। ক্রমানবয়ে উড়োজাহাজ আবিষ্কৃত হলো। মাইকেল ফ্যারাডে বিদ্যুৎ আবিষ্কার করলেন। বিদ্যুৎ শক্তিকে কাজে লাগিয়ে মানুষ তার আরাম-আয়েশ, সুখ-সমৃদ্ধির ব্যবস্থা করে নিলেন, ফলে আলো জ্বললো, পাখা ঘুরলো, শিল্প-কারখানা প্রতিষ্ঠিত হলো।

২। উনবিংশ শতাব্দীর শেষ ভাগ হতে বিজ্ঞানের আবিষ্কার অতি দ্রুত গতিতে চলতে থাকে। এ সময় পদার্থ বিজ্ঞানী ম্যাক্সওয়েলের (Maxwell) বিদ্যুৎ চুম্বকীয় তরঙ্গবাদ, পস্ন্যাংক (Planck)-এর কণিকা তত্ত্ব, আইনস্টাইন (Einstein)-এর আপেক্ষিক তত্ত্ব বিস্ময়কর আবিষ্কার, এসময়ে মার্কনি এবং আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু বিদ্যুৎ তরঙ্গের সাহায্যে বার্তা প্রয়োগ পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। এভাবে বেতারের আবিষ্কার সম্ভব হয়।

৩। রকেট চালিত মহাকাশযানে চড়ে মানুষ অনেক বছর আগেই চাঁদে পৌঁছেছে। পরমাণুর নিউক্লিয়াসকে ভেঙ্গে যে বিপুল পরিমাণ শক্তি পাওয়া যাচ্ছে তা রিয়্যাক্টরের মাধ্যমে ধনাত্মকভাবে বিভিন্ন শিল্পে ব্যবহৃত হচ্ছে। কৃত্রিম উপগ্রহের সাহায্যে আবহাওয়ার পূর্বাভাস জানা যাচ্ছে।

৪। চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নতির ফলে মানুষ এখন অনেক জটিল রোগ থেকে সহজেই মুক্তি পাচ্ছে। পেনিসিলিন, ক্লোরোমাইসিন, স্ট্রেপটোমাইসিনসহ, এইডস রোগের প্রতিরোধমূলক ঔষধ বা ক্যান্সার রোগের নিরাময় মূলক চিকিৎসা পদ্ধতি আবিষ্কারের ফলে কোটি কোটি মানুষ রক্ষা পেয়েছে বিভিন্ন রোগ-ব্যাধি হতে। রঞ্জন রশ্মির সাহায্যে আমরা শরীরের ভিতরের চিত্র দেখে বুঝতে পারি কোনো অংশে কি ধরনের অসুস্থতা দেখা দিয়েছে। রেডিয়ামের সাহায্যে অনেকাংশে ক্যান্সারকে প্রতিহত করা যায়।

৫। কৃষি বিজ্ঞানের উন্নতির ফলে এখন অনেক উন্নতজাতের ধান ও পাটের চাষ হচ্ছে। ভালো সার জমিতে প্রয়োগের ফলে আমরা প্রচুর ফসল পাচ্ছি। আরো আবিষ্কৃত হয়েছে কলের লাঙল, পানি সেচের যন্ত্র, স্প্রে মেশিন।

কাজেই মানব সভ্যতাকে উন্নতির উচ্চতর শিখরে পৌঁছে দিতে বিজ্ঞানের অবদান অপরিসীম, এবং একারণেই নিজেদের প্রয়োজনে তথা মানবজাতির কল্যাণে প্রত্যেকের উচিৎ বিজ্ঞান চর্চা করা।

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comment below if you have any questions

অফিস/বেসিক কম্পিউটার কোর্স

এম.এস. ওয়ার্ড
এম.এস. এক্সেল
এম.এস. পাওয়ার পয়েন্ট
বাংলা টাইপিং, ইংরেজি টাইপিং
ই-মেইল ও ইন্টারনেট

মেয়াদ: ২ মাস (সপ্তাহে ৪দিন)
রবি+সোম+মঙ্গল+বুধবার

কোর্স ফি: ৪,০০০/-

গ্রাফিক ডিজাইন কোর্স

এডোব ফটোশপ
এডোব ইলাস্ট্রেটর

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৮,৫০০/-

ওয়েব ডিজাইন কোর্স

এইচটিএমএল ৫
সিএসএস ৩

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৮,৫০০/-

ভিডিও এডিটিং কোর্স

এডোব প্রিমিয়ার প্রো

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৯,৫০০/-

ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স

ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম, এসইও, গুগল এডস, ইমেইল মার্কেটিং

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ১২,৫০০/-

অ্যাডভান্সড এক্সেল

ভি-লুকআপ, এইচ-লুকআপ, অ্যাডভান্সড ফাংশনসহ অনেক কিছু...

মেয়াদ: ২ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৬,৫০০/-

ক্লাস টাইম

সকাল থেকে দুপুর

১ম ব্যাচ: সকাল ০৮:০০-০৯:৩০

২য় ব্যাচ: সকাল ০৯:৩০-১১:০০

৩য় ব্যাচ: সকাল ১১:০০-১২:৩০

৪র্থ ব্যাচ: দুপুর ১২:৩০-০২:০০

বিকাল থেকে রাত

৫ম ব্যাচ: বিকাল ০৪:০০-০৫:৩০

৬ষ্ঠ ব্যাচ: বিকাল ০৫:৩০-০৭:০০

৭ম ব্যাচ: সন্ধ্যা ০৭:০০-০৮:৩০

৮ম ব্যাচ: রাত ০৮:৩০-১০:০০

যোগাযোগ:

আলআমিন কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র

৭৯৬, পশ্চিম কাজীপাড়া বাসস্ট্যান্ড,

[মেট্রোরেলের ২৮৮ নং পিলারের পশ্চিম পাশে]

কাজীপাড়া, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬

মোবাইল: 01785 474 006

ইমেইল: alamincomputer1216@gmail.com

ফেসবুক: facebook.com/ac01785474006

ব্লগ: alamincomputertc.blogspot.com

Contact form

নাম

ইমেল *

বার্তা *