দুর্নীতি প্রতিরোধের উপায়
দুর্নীতি প্রতিরোধের উপায় (Way of combat corruption)
দুর্নীতি প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজন বহুমুখী উদ্যোগ। এখানে দুর্নীতি প্রতিরোধের কিছু উপায় তুলে ধরা হলো:
১। রাজনৈতিক সদিচ্ছা: বাংলাদেশে দুর্নীতি প্রতিরোধের পূর্বশর্ত হচ্ছে রাজনৈতিক সদিচ্ছা (Political will)। গণতান্ত্রিক ও সংসদীয় শাসন ব্যবস্থায় মূল ক্ষমতা রাজনীতিবিদদের হাতে। শীর্ষ রাজনৈতিক নেতৃত্ব যদি দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করেন তবে তার সরকারের অন্য কেউ দুর্নীতি করার সাহস দেখাবে না।
২। দুর্নীতিবিরোধী প্রতিষ্ঠানের কার্যকর ভূমিকা: দুর্নীতি দমন কমিশন, অডিট এন্ড জেনারেল অফিস, এনবিআর প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানগুলো কার্যকর ভূমিকা রাখলে দুর্নীতি প্রতিরোধ অনেকাংশে সম্ভব।
৩। আইনের শাসন এবং দুর্নীতিবাজদের শাস্তি নিশ্চিত করা: ‘আইন সবার জন্য সমান’ এ শ্বাশ্বত বাক্যকে বাস্তব রূপ দিতে হবে। সবরকমের স্বজনপ্রীতি, পক্ষপাতিত্ব পরিহার করে দুর্নীতিবাজদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। দুর্নীতি করলে ক্ষমা নেই’ এ সত্য প্রতিষ্ঠিত হলে অনেকেই দুর্নীতি করতে সাহস পাবে না।
৪। সুশাসন এবং স্বচ্ছতা ও জবাদিহিতার চর্চা করা: দুর্নীতি প্রতিরোধে সুশাসনের বিকল্প নেই। সুশাসনের জন্য প্রয়োজন স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার চর্চা। গোপনীয়তার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসে স্বচ্ছতার চর্চা করা জরুরি।
৫। গণমাধ্যমের বলিষ্ঠ ভূমিকা: দুর্নীতির বিরুদ্ধে গণমাধ্যম অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। দুর্নীতির খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে সে বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন এবং কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়। আবার দুর্নীতির খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার ভয়ে অনেকে দুর্নীতি থেকে বিরত থাকেন।
৬। দুর্নীতিবিরোধী সামাজিক আন্দোলন: দুর্নীতি প্রতিরোধে সমাজের সব স্তরের, সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে সোচ্চার ও সক্রিয় হতে হবে। নাগরিক সমাজ দুর্নীতির বিরুদ্ধে জনমত গঠন, দুর্নীতির কুপ্রভাব সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরি এবং দুর্নীতি প্রতিরোধে পলিসি এ্যাডভোকেসি করতে পারে। যেখানে দুর্নীতি সেখানে প্রতিরোধ’ নীতিতে তরুণ সমাজ দুর্নীতির বিরুদ্ধে উচ্চকণ্ঠ হতে পারে। দুর্নীতিবিরোধী গবেষণা ও সামাজিকভাবে দুর্নীতিবাজদেরকে বয়কট করার মাধ্যমে দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনকে আরো বেগবান করা যেতে পারে।
৭। মৌলিক চাহিদা পূরণ ও বেতন-ভাতা বৃদ্ধি: ছোট পরিসরের দুর্নীতির একটি বড় অংশের প্রধান কারণ হচ্ছে অভাব, মৌলিক চাহিদা পূরণে সীমাবদ্ধতা। বেতন-ভাতা এবং সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির মধ্যমে এ ধরনের দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
৮। সম্পদের সুষম বণ্টন ও ন্যায়বিচার: ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান কমিয়ে সম্পদের সুষম বণ্টন নিশ্চিত করা গেলে দুর্নীতি হ্রাস পাবে। সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মানুষের অধিকার ও মৌলিক চাহিদা পূরণ করা হলে দুর্নীতি নিয়ন্ত্রিত হবে।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comment below if you have any questions