জাতীয় সংসদ
বাংলাদেশ সরকারের অন্যতম প্রধান একটি অঙ্গ হিসেবে আইনসভার গুরুত্ব অপরিসীম। কেননা আইনসভায় সংসদীয় প্রক্রিয়া অনুসরণের মাধ্যমে আইন প্রণয়ন করা হয় ও আইন বাস্তবায়নের পথ নির্ধারণ করা হয়। বাংলাদেশ সংবিধানের পঞ্চম ভাগে উল্লিখিত আইনানুসারে বাংলাদেশের আইনসভা হিসেবে জাতীয় সংসদকে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে। বাংলাদেশের সংবিধান সংশোধন থেকে শুরু করে সকল প্রয়োজনীয় আইন এই জাতীয় সংসদই প্রণয়ন করে থাকে। এদেশে সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা চালু থাকায় সংসদই শাসন বিভাগের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারী যেমন- রাষ্ট্রপতিকে নির্বাচিত করে থাকে। বাংলাদেশে প্রচলিত রাজনৈতিক প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোতে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার চর্চার জন্য এই জাতীয় সংসদ হল সরকারের সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান।
জাতীয় সংসদের বিবরণ
আইন অনুসারে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ হল এককক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা। সারাদেশ থেকে নির্বাচিত ৩০০ সংসদ সদস্য এবং সংরক্ষিত ৫০ জন নারী সংসদ সদস্য নিয়ে এই জাতীয় সংসদ গঠিত হয়। পূর্ণ মেয়াদে প্রতি পাঁচ বছর পর পর জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনে বাংলাদেশের প্রত্যেক বয়স্কপ্রাপ্ত নাগরিক তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করে থাকে। আর প্রচলিত আইন মেনে বাংলাদেশের যেকোন নাগরিক এই জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারে। এই সংসদীয় ব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষেত্রে একজন প্রার্থীর বয়স ৩৫ বছর হতে হবে। পক্ষান্তরে প্রধানমন্ত্রী পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য ২৫ বছর হওয়ার শর্ত দেশের সংবিধান কর্তৃক স্বীকৃত। জাতীয় সংসদে কোন আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে নিয়মতান্ত্রিকভাবে সংসদ সদস্যগণের মতামত গৃহীত হয়। মূলত: জাতীয় সংসদের মাননীয় স্পিকারের সম্মুখে সংসদ সদস্যগণ কর্তৃক তুমুল আলোচনা ও সমালোচনার মাধ্যমে কোন আইন সংসদে পাশ হয়। তবে আইন প্রণয়ন ও সংবিধান সংশোধনের জন্য যথাক্রমে সংখ্যাগরিষ্ঠতা ও দুই-তৃতীয়াংশ সংসদ সদস্যের সম্মতি থাকতে হয়। এরপর সরকার প্রধান হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও পরিশেষে রাষ্ট্রের প্রধান হিসেবে মহামান্য রাষ্ট্রপতির লিখিত সম্মতির মধ্য দিয়ে একটি আইনকে কার্যকরি রূপ প্রদান করা হয়।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comment below if you have any questions