Home » » হযরত আব্দুল কাদের জিলানী জীবন কাহিনী

হযরত আব্দুল কাদের জিলানী জীবন কাহিনী

 হযরত আব্দুল কাদের জিলানী জীবন কাহিনী

 হযরত আবদুল কাদির জিলানি (র)

হযরত আবদুল কাদির জিলানি ৪৭০ হিজরি মোতাবেক ১০৭৭ খ্রি. ইরানের জিলান শহরে জন্ম গ্রহণ করেন। জন্মস্থানের নামানুসারে তাঁকে জিলানি বলা হয়। তাঁর উপনাম আবু সালেহ, উপাধী মাহবুবে সুবহানি (আল্লাহর প্রিয়), কুতুবে রব্বানি (প্রতি পালকের দলের নেতা)। পিতার নাম আবু সালেহ মুসা, মাতার নাম সাইয়্যেদা উম্মুল খায়ের ফাতিমা। আবদুল কাদির জিলানি পিতার দিক দিয়ে হযরত হোসাইন (রা) -এর বংশধর এবং মাতার দিক থকে ইমাম হোসাইন (রা) -এর বংশধর ছিলেন। এজন্য হযরত আবদুল কাদির জিলানিকে ‘আওলাদে রসূল' বলে গণ্য করা হয়।

শিক্ষা- দীক্ষা

বাল্যকাল থেকে আবদুল কাদির জিলানি (র) পড়াশুনার প্রতি খুব মনোযোগী ছিলেন। অল্প বয়সে তার পিতা ইন্তেকাল করেন। তাঁর মা তাঁর প্রয়োজনীয় শিক্ষার ব্যবস্থা করেন। তাঁর মাতা অত্যন্ত পরহেযগার ছিলেন এবং সময় সুযোগ পেলেই কুরআন শরীফ তিলাওয়াত করে সময় কাটাতেন। আবদুল কাদির জিলানি (র) তখন মায়ের কাছে বসে তা শুনতেন। মায়ের কুরআন তিলাওয়াত শুনেই তিনি পাঁচ বছর বয়সে পবিত্র কুরআন শরীফের আঠারো পারা মুখস্থ করে ফেলেন। উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের জন্য তিনি জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রাণকেন্দ্র বাগদাদ গমন করেন। সেখানে তিনি নিযামিয়া বিশ্ববিদ্যায়ে ভর্তি হন। সেখান থেকেই তিনি তাফসির, হাদিস, ফিক্হ, উসূল, ধর্মতত্ত্ব, তর্কশাস্ত্র, ইতিহাস ও দর্শনে উচ্চ শিক্ষা লাভ করেন। বয়সের দিক দিয়ে কম হলেও পড়াশুনায় ছিলেন খুবই মনোযোগী। তাই অল্প দিনের মধ্যেই তিনি অনেক কিছু শিখে ফেলেন। আরবি ভাষায় তিনি দক্ষতা অর্জন করেছিলেন। আরবিতে সুন্দর সুন্দর কবিতা লিখতে পারতেন। বাগদাদে শিক্ষা গ্রহণকালে তিনি কষ্ট স্বীকার করেন। খেয়ে না খেয়ে তিনি লেখা পড়া করেছেন। এ অদম্য ইচ্ছার কারণেই তিনি জগত বিখ্যাত জ্ঞানী হতে পেরেছিলেন।

গ্রন্থ রচনা

আবদুল কাদির জিলানি (র) শুধু ইলমে শরী'আত ও মারিফাতের পণ্ডিত ছিলেন না ; বরং তিনি কাব্য, দর্শন, ইতিহাস, ভূগোল প্রভৃতি শাস্ত্রে সুপণ্ডিত ছিলেন। তাঁর প্রণীত কিতাবের মধ্যে রুতুহুল গায়েব, গুনিয়াতুত তালেবিন, ফাতহুর রব্বানী, কাসীদায়ে গাওসিয়া, হিযবু বাশারিল খাইরাত, জালালুল খাতির, আল-মাওয়াহিবুর রহমানিয়া, বাহ্য়াতুল আস্রাত।

সত্যবাদিতার দৃষ্টান্ত স্থাপন

আবদুল কাদির জিলানি (র) যখন উচ্চ শিক্ষা লাভের উদ্দেশে বাগদান গমন করেন, তখন তাঁর মা তাঁকে ৪০টি স্বর্ণমুদ্রা জামার আস্তিনের মধ্যে সেলাই করে দিয়েছিলন। আর মিথ্যা না বলার উপদেশ দিয়েছিলেন। মায়ের উপদেশ তিনি মনে-প্রাণে গ্রহণ করেছিলেন। বাগদাদ যাওয়ার সময় তাঁর কাফেলা ডাকাতের কবলে পড়েছিল। ডাকাতরা যাত্রীদের সব কিছু লুটে নেয়। অতঃপর ডাকাতরা আবদুল কাদির জিলানির (র) নিকট কিছু আছে কিনা জানত চাইলে তাঁর নিকট ৪০টি স্বর্ণমুদ্রা রয়েছে বলে জানান। জামার আস্তিনের মধ্যে লুকানো স্বর্ণ-মুদ্রা দেখে ডাকাতরা সত্য কথা বলার কারণ জানতে চাইলেন। আবদুল কাদির জিলানি বললেন, ‘আমার মা আমাকে সর্বাবস্থায় সত্যকথা বলা ও মিথ্যা হতে বিরত থাকতে উপদেশ দিয়েছেন। একারণেই আমি সত্য বলেছি। ডাকাত দল তাঁর এ সত্যবাদিতা ও সাহসিকতায় মুগ্ধ হয়ে তাওবা করে খাঁটি মুসলমান হয়ে যান।

স্বভাব ও চারিত্রিক গুণাবলি

আবদুল কাদির জিলানি (র.) সাধারণ মানুষ থেকে ব্যতিক্রমী একজন মহান সাধক ও জ্ঞান তাপস ছিলেন। শৈশব কাল থেকেই তাঁর চারিত্রিক গুণাবলির স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য প্রকাশিত হতে থাকে। বর্ণিত আছে যে, দুগ্ধ পোষ্য অবস্থায় তিনি রমযান মাসে দিনের বেলায় মাতৃদুগ্ধ পান হতে বিরত থাকতেন। তাঁর মাতা তাঁকে দুগ্ধ পান করাতে গেলে তিনি মুখ ফিরিয়ে নিতেন। নিষিদ্ধ ৫ দিন ব্যতীত সারা বছর তিনি রোযা পালন করতেন। এর মধ্য দিয়েই তাঁর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ফুটে ওঠে। আবদুল কাদির জিলানি (র) অত্যন্ত মানব দরদি ছিলেন। গরিব-দুঃখীদের তিনি অত্যন্ত ভালোবাসতেন এবং সাহায্য করতেন। তাঁর ছাত্র জীবনে বাগদাদে অনটন দেখা দিয়েছিল। তিনি তাঁর নিকট থাকা স্বর্ণমুদ্রা হতে অভাবীদেরকে সাহায্য করেছিলেন এবং নিজে না খেয়ে জীবন অতিবাহিত করেছিলেন।

আবদুল কাদির জিলানি (র) শরী'আতের জ্ঞানার্জনের পর মারিফাতের (আধ্যাত্মিক) জ্ঞান লাভের জন্য বাগদাদের বিখ্যাত সূফি-দরবেশগণের দরবারে যাতায়াত শুরু করেন। আধ্যাত্মিক সাধনার জন্য তিনি ২৫ বছর লোক চক্ষুর অন্তরালে ছিলেন। ৫২১ হিজরির শেষ ভাগে তিনি পুনরায় লোকালয়ে ফিরে আসেন এবং দ্বীন প্রচার শুরু করেন।

কাদিরিয়া তরিকা প্রতিষ্ঠা

আবদুল কাদির জিলানি (র) -এর নামে সূফিদের একটি তরিকা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এর নাম তরিকায়ে কাদিরিয়া। এ তরিকায় ইলমে শরী'আত ও ইলমে তাসাউফে সমান গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। হযরত আবদুল কাদির জিলানি (র.) এ তরিকার ইমাম। আমাদের দেশে তিনি ‘বড়পীর' হিসেবে পরিচিত। অনেকে তাঁকে ‘গাউসুল আযম’ও (মহান সাহায্যকারী) বলে থাকেন।

ইন্তেকাল

আবদুল কাদির জিলানি ৯০ বৎসর বয়সে ৫৬১ হিজরি সালের ১১ই রবিউস সানি ইন্তেকাল করেন ।

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comment below if you have any questions

অফিস/বেসিক কম্পিউটার কোর্স

এম.এস. ওয়ার্ড
এম.এস. এক্সেল
এম.এস. পাওয়ার পয়েন্ট
বাংলা টাইপিং, ইংরেজি টাইপিং
ই-মেইল ও ইন্টারনেট

মেয়াদ: ২ মাস (সপ্তাহে ৪দিন)
রবি+সোম+মঙ্গল+বুধবার

কোর্স ফি: ৪,০০০/-

গ্রাফিক ডিজাইন কোর্স

এডোব ফটোশপ
এডোব ইলাস্ট্রেটর

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৮,৫০০/-

ওয়েব ডিজাইন কোর্স

এইচটিএমএল ৫
সিএসএস ৩

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৮,৫০০/-

ভিডিও এডিটিং কোর্স

এডোব প্রিমিয়ার প্রো

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৯,৫০০/-

ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স

ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম, এসইও, গুগল এডস, ইমেইল মার্কেটিং

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ১২,৫০০/-

অ্যাডভান্সড এক্সেল

ভি-লুকআপ, এইচ-লুকআপ, অ্যাডভান্সড ফাংশনসহ অনেক কিছু...

মেয়াদ: ২ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৬,৫০০/-

ক্লাস টাইম

সকাল থেকে দুপুর

১ম ব্যাচ: সকাল ০৮:০০-০৯:৩০

২য় ব্যাচ: সকাল ০৯:৩০-১১:০০

৩য় ব্যাচ: সকাল ১১:০০-১২:৩০

৪র্থ ব্যাচ: দুপুর ১২:৩০-০২:০০

বিকাল থেকে রাত

৫ম ব্যাচ: বিকাল ০৪:০০-০৫:৩০

৬ষ্ঠ ব্যাচ: বিকাল ০৫:৩০-০৭:০০

৭ম ব্যাচ: সন্ধ্যা ০৭:০০-০৮:৩০

৮ম ব্যাচ: রাত ০৮:৩০-১০:০০

যোগাযোগ:

আলআমিন কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র

৭৯৬, পশ্চিম কাজীপাড়া বাসস্ট্যান্ড,

[মেট্রোরেলের ২৮৮ নং পিলারের পশ্চিম পাশে]

কাজীপাড়া, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬

মোবাইল: 01785 474 006

ইমেইল: alamincomputer1216@gmail.com

ফেসবুক: facebook.com/ac01785474006

ব্লগ: alamincomputertc.blogspot.com

Contact form

নাম

ইমেল *

বার্তা *