হযরত বাহাউদ্দিন নকশবন্দী
হযরত শেখ বাহাউদ্দিন নকশাবন্দি (র)
হযরত শেখ বাহাউদ্দিন মুহাম্মদ নকশাবন্দি (র) ছিলেন নবম হিজরি শতকের একজন মহান সাধক।
তিনি বুখাবার সন্নিকটে ‘কাসরে আরেফান' নামক স্থানে ৭১৮ হিজরি সনের মুহাররাম মাসে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম ছিল হযরত জালালুদ্দিন (র) হযরত শেখ বাহাউদ্দিন মুহাম্মদ নক্শবন্দী (র.) শৈশবকাল হতেই হযরত মুহাম্মদ সামমাসী (র) এর সাহচর্যে আসেন। বাল্যকাল হতেই তাঁর চরিত্র-আদর্শে আধ্যাত্মিকতার বহিঃপ্রকাশ লক্ষ করা যাচ্ছিল। দরিদ্র পরিবারের সন্তান হওয়ায় তাঁর জীবন যাপন ছিল অতি সাদামাটা ।
১৮ বছর বয়সে তিনি বাবা মুহাম্মদ সামমাসির নিকট হতে সূফি তরিকার শিক্ষা লাভ করেন। সামমাসির ইন্তেকালের পর বাহাউদ্দিন বুখরায় ফিরে যান। এরপর তিনি নাফাস গমন করে আস-সামমানির বিখ্যাত শিষ্য আমির কুলানের নিকট শিক্ষা গ্রহণ করেন। এরপর আবার বুখারায় ফিরে আসেন এবং আমির কুলানের বিখ্যাত শিষ্য আরিফ আদ্-দাদীক কিরানির নিকট সূফিবাদের শিক্ষা গ্রহণ করেন। এখানে তিনি দীর্ঘ সাত বছর শিক্ষা গ্রহণ করেন।
নকশাবন্দিয়া সিলসিলার তরিকা
হযরত শেখ বাহাউদ্দিন মুহাম্মদ নকশাবন্দি(র) ছিলেন হানাফি মাযহাবের অনুসারী এবং ‘নকশাবন্দিয়া' তরীকার প্রতিষ্ঠাতা ও ইমাম। ‘নকশবন্দ’ অর্থ চিত্রকর। তিনি নকশা বন্দি তরিকার মাধ্যমে তাঁর মুরিদানদের কলবের মধ্যে আল্লাহ পাকের নকশা বা চিত্র অংকন করে দিতে সক্ষম হয়েছিলেন। এজন্য তিনি নকশাবন্দি উপাধি লাভ করেন। তা ছাড়া তিনি ও তাঁর সুযোগ্য খলিফাগণের প্রচেষ্টায় এ সিলসিলার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী ইসলামের প্রচার ও প্রসার লাভ করে। এজন্যও তাঁকে নকশাবন্দিয়া বলা হয়ে থাকে। তরিকার দিক থেকে তিনি ওয়াস করনির অনুসারী ছিলেন।
হযরত শেখ বাহাউদ্দিন মুহাম্মদ নক্শবন্দী (র) একবার হজ্জ পালনের জন্য গিয়েছিলেন। ঈদুল আযহার দিনে সকল হজ্জ যাত্রী পশু কোরবানি দিলেন। তিনি কোন পশু কোরবানি না দিয়ে বলেন, আমি আজ আমার ছোট ছেলেকে আল্লাহর রাস্তায় কোরবানি দিলাম । পরে জানা যায় যে, তার সাহেবজাদা ঐ ঈদের দিনই ইন্তেকাল করেছিলেন।
এ মহান সূফি সাধক ৭৯১ হিজরি রবিউল আউয়াল মাসের ৩ তারিখ ইন্তেকাল গমন করেন। তাঁকে কাসবে আরেফানে দাফন করা হয়।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comment below if you have any questions