চাকরির আবেদন লেখার নিয়ম
চাকুরির আবেদনের জন্য প্রস্তুতি (Preparation for Application)
চাকুরির জন্য আবেদন করার জন্য লিখিত জীবনবৃত্তান্ত ও আবেদন পত্র প্রস্তুত করতে হয়। চাকুরি দাতা এই লিখিত জীবনবৃত্তান্ত থেকেই চাকুরীপ্রার্থী সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা লাভ করে। সে কারণে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়ে এই কাগজপত্রাদি তৈরি করতে হয়। যেকোনো চাকুরির জন্য আবেদন করার আগে সর্বপ্রথমে প্রতিষ্ঠানটি সম্পর্কে ধারণা নিতে হয়। এরপর ধীরে ধীরে আবেদন পত্র ও জীবনবৃত্তান্ত সাজানোর প্রস্তুতি নিতে হয়। এখানে আবেদনকারীকে মনে রাখতে হয় যে, এ আবেদনপত্র ও জীবনবৃত্তান্ত দিয়ে সে যেন নিজের প্রতি চাকুরিদাতার আগ্রহ তৈরি করতে পারে ও যোগ্য প্রমাণ করতে পারে।
জীবনবৃত্তান্ত প্রস্তুতকরণ (Creating Resumè)
জীবনবৃত্তান্ত হলো ব্যক্তির শিক্ষা, কর্মজীবন ও যোগ্যতার লিপিবদ্ধ তথ্যাদি যা নির্দিষ্ট চাকুরি প্রাপ্তির জন্য চাকুরি দাতার কাছে চাকুরি প্রার্থী উপস্থাপন করে। জীবনবৃত্তান্ত মুদ্রণ বা প্রিন্ট করে অথবা ইলেক্ট্রনিক উপায়ে জমা দেওয়া যায় । সাধারণত মুদ্রণযোগ্য জীবনবৃত্তান্ত সবচেয়ে বেশি প্রচলিত। এছাড়াও বর্তমান সময়ে ইলেক্ট্রনিক উপায়ে অনলাইনে পূর্ব প্রস্তুতকৃত ফরমে নির্ধারিত খালি স্থান পূরণ করেও জীবনবৃত্তান্ত জমা দেওয়া যায়।
নিম্নে প্রচলিত মুদ্রণযোগ্য জীবনবৃত্তান্ত প্রস্তুতের প্রয়োজনীয় উপাদানগুলো উল্লেখ করা হলো:
১. জীবনবৃত্তান্ত প্রস্তুতের প্রথমেই নিজের সম্পর্কে পটভূমি প্রস্তুত করতে হয় যার উপর ভিত্তি করে পুরো বৃত্তান্ত তৈরি করা হয়। এর কারণ হলো এক এক প্রতিষ্ঠানের জন্য এক এক ভাবে নিজেকে উপস্থাপনের ব্যাপার রয়েছে। প্রতিষ্ঠানের নির্দিষ্ট পদের জন্য কার্যকর হবে কোন কোন বিষয় তা নির্ধারণ করতে হয়।
২. শিরোনাম নির্ধারণ করতে হয়। সাধারণত আবেদনকারীর নাম শিরোনাম হয়ে থাকে। পরবর্তীতে আবেদনকারীর যোগাযোগের ঠিকানা, মোবাইল/ফোন নম্বর, ইমেইল ঠিকানা দেওয়া হয়।
৩. এরপরে উদ্দেশ্য উল্লেখ করতে হয় যেখানে বলা হয় কোন কারণে আবেদনকারী নির্দিষ্ট পদের জন্য আবেদন করছে।
৪. এরপর আবেদনকারীর শিক্ষাগত যোগ্যতা (প্রতিষ্ঠান, সময়, ডিগ্রী, বিষয়), অভিজ্ঞতা (প্রতিষ্ঠান, দায়িত্ব, সময়কাল), শিক্ষাগত / কর্মজীবনে অর্জন, নিজের আগ্রহ, স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজের অভিজ্ঞতা, বিশেষ যোগ্যতা (সৃজনশীল যোগ্যতা, যোগাযোগ যোগ্যতা, গবেষণা জ্ঞান ইত্যাদি), অন্যান্য যোগ্যতা (কম্পিউটার, ভাষা ইত্যাদি), কর্মশালা অংশগ্রহণের তালিকা, প্রকাশনা, রেফারেন্স ইত্যাদি বিষয়াদি উল্লেখ করতে হয়।
৫. জীবনবৃত্তান্ত প্রস্তুত করার সময় খেয়াল রাখতে হয় যেন প্রস্তুতকারী যে বিষয়ে জ্ঞান বা দক্ষতা বেশি সে বিষয় যেন গুরুত্ব পায় ।
৬. লেখার সময় ধারাবাহিকভাবে বিষয়াদি উপস্থাপন করা প্রয়োজন।
৭. জীবনবৃত্তান্ত যেন আকর্ষণীয়, সংক্ষিপ্ত ও প্রাসঙ্গিক হয় সেদিকে খেয়াল রাখা প্রয়োজন ।
৮. জীবনবৃত্তান্ত প্রস্তুতের আগেই কিছু ভালো নমুনা জীবনবৃত্তান্ত দেখে ধারণা নিলে ভুল হবার সম্ভাবনা কম থাকে।
৯. জীবনবৃত্তান্তে নিজের সম্পর্কে ও নিজের কাজ সম্পর্কে মূখ্য ও আকর্ষণীয় শব্দ ব্যবহার যেতে পারে ।
১০. শব্দচয়নের প্রতি বিশেষ খেয়াল রেখে প্রয়োজনীয় ও প্রাসঙ্গিক তথ্য উপস্থাপন করা হলে জীবনবৃত্তান্ত কার্যকর হয়।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comment below if you have any questions